দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে অফুরন্ত হাসি নিয়ে হাজির ‘কুং ফু পান্ডা ৪’
গত ৮ মার্চ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত 'কুং ফু পান্ডা ৪'। অরিজিনাল সিনেমার প্রায় ১৬ বছর ও সর্বশেষ সিক্যুয়েলের প্রায় আট বছর পর ফের সিনেমাটি উপভোগ করতে যাচ্ছেন কুং ফু পান্ডা প্রেমীরা। তাই সিনেমাটি নিয়ে ভক্তদের আকাঙ্ক্ষা ছিল আকাশচুম্বী।
চটকদার ও দ্রুত গতির এই সিনেমাটি মূল সিনেমার সাথে সামঞ্জস্য বজায় রেখেছে। ফের যাদুর মতো একইসময় বাবা-মা ও তাদের বাচ্চাদের জন্য নিয়ে এসেছে অফুরন্ত হাসি ও মজার উপলক্ষ্য।
ড্রিমওয়ার্কসের সবচেয়ে পছন্দের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর মধ্যে প্রথমেই তুঙ্গে উঠেছিল পো এর গল্প। সবসময়ের মতো দারুণ উৎসাহের সাথে পো এর কণ্ঠ দিয়েছে জ্যাক ব্ল্যাক। একেবারে নিম্ন স্তর থেকে উঠে এসে 'ড্রাগন ওয়ারিয়র' হয়ে ওঠা এবং একইসাথে দুর্দান্ত আর শক্তিশালী ভিলেন তাই লুং (ইয়ান ম্যাকশেন) এর মুখোমুখি হওয়ার গল্প নিয়ে প্রথম পর্ব। প্রথম সিক্যুয়েল দিয়ে দর্শকদের মনে স্থায়ী জায়গা করে নেয় কুং ফু পান্ডা ফ্রাঞ্চাইজি।
তবে এবার পো আরও মর্যাদার শিখরে পৌঁছাতে চায়। এমনকি তার দত্তক পিতা পিং ও জন্মদাতা পিতা লি (৯৫ বছর বয়সী জেমস হং ও ব্রায়ান ক্র্যানস্টন) কে সাহায্য করে।
অন্যদিকে এক পর্যায়ে অনিবার্যভাবেই এক নতুন হুমকির আবির্ভাব হয়; দ্য ক্যামেলিওন (ভায়োলা ডেভিস)। সুপারভিলেন হওয়ার যোগ্যতা সম্পন্ন আকার পরিবর্তনকারী এই জাদুকর হুমকির মুখে ফেলে উপত্যকার শান্তি।
মাস্টার শিফু (ডাস্টিন হফম্যান) পো-কে এক আশ্চর্যজনক নির্দেশ দেয়। শিফু পো কে তার উত্তরসূরি খুঁজে বের করে তার প্রশিক্ষণ শুরু করতে বলে। কিন্তু যথারীতি পো তার এই কাজে গাফিলতি করে।
আবার একইসাথে বিভ্রান্ত হন সম্প্রতি আসা নতুন হুমকি নিয়ে। বিশেষ করে দ্রুত কথা বলা চোর ঝেন (আকওয়াফিনা) তাকে ক্যামেলিওনের দুর্গে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিলে পো তার কাজ বেমালুম ভুলে যায়।
সেরা সব হাসির দৃশ্য এবং কিছু আদুরে কিন্তু হিংস্র খরগোশ ঘুরে বেড়াচ্ছে সিনেমার টিজার ট্রেলারে। সিনেমাটি একইসাথে সুস্থ হাস্যরসের সাথে পেশীবহুল অ্যাকশনকে একত্র করতে পেরেছে। তবে এর বেশিরভাগই পো এর নানান অদ্ভুত ভঙ্গি আর তার অদম্য ক্ষুধার সাথে সম্পর্কিত হাস্যরসাত্মক কিছু দৃশ্য।
দুর্দান্ত সব দৃশ্যের সাথে এ-লিস্ট কণ্ঠ অভিনয় শিল্পী সত্যিই চরিত্রগুলোকে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে। মূল চরিত্র ম্যাকশেনসহ বিষধর দাঁতের ক্যামেলিয়নাল চরিত্রে ডেভিস এবং অন্যান্য সংযোজনগুলোর মধ্যে রয়েছে কে হুয়ে কোয়ান; যারা এই সিনেমার অভূতপূর্ব সাফল্যের অন্যতম ভাগীদার।
সিনেমায় একই গল্প বারবার আসছে মনে করলেই বারবারই দর্শকদের তাক লাগিয়ে দিয়েছে নতুন ভাবে গল্প উপস্থাপনের মাধ্যমে। 'ট্রোলস' খ্যাত পরিচালক মাইক মিচেল সমতল সব গল্পের মধ্যেও 'চেস' সিকোয়েন্স এবং শক্তিশালী সব মারামারির দৃশ্য মিলিয়ে অন্য রকম এক অভিজ্ঞতার আয়োজন করেছে দর্শকদের জন্য।
ড্রিমওয়ার্কস অ্যানিমেশন স্টুডিও থেকে গত সপ্তাহের ৮ তারিখে মুক্তি পাওয়ার পর গত তিন দিনে বক্স অফিসে ৫৮ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে 'কুং ফু পান্ডা ৪'।
প্রবাদ আছে, দূরে গেলে পড়ে মন। সেরকম ভাবেই 'পান্ডা' ভক্তদের ক্ষেত্রে দীর্ঘ এই অপেক্ষা তাদের এই সিনেমার জন্য আরো আগ্রহী করে তোলে। সেক্ষেত্রে এই সিনেমার সিক্যুয়েন্স আসার সময়ের ব্যবধান হিসেব করলে ভক্তদের উচিত হবে 'কুং ফু পান্ডা ৫' এর জন্য ২০৩৬ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করা।
অনুবাদ: জেনিফার এহসান