জাহানারা-নাহিদাদের মাঠে ফেরার আনন্দ
ঈদের আগে থেকেই একক অনুশীলন শুরু করেছেন বাংলাদেশের ছেলে ক্রিকেটাররা। শুরুতে ১০ জন থাকলেও বর্তমানে ২৭ জন ক্রিকেটার দেশের পাঁচটি ভেন্যুতে আলাদা আলাদা সময়ে অনুশীলন করছেন। ঈদের ছুটির পর শনিবার থেকে শুরু হওয়া দ্বিতীয় দফার একক অনুশীলনের সঙ্গী হলেন জাতীয় নারী দলের ক্রিকেটাররাও।
সোমবার থেকে মিরপুরে একক অনুশীলন শুরু করেছেন দুজন নারী ক্রিকেটার। বিসিবির সূচিতে চারজন থাকলেও শুধু জাহানারা আলম ও নাহিদা আক্তার অনুশীলনে এসেছেন। এদিন রানিং ও জিম করেছেন এই দুই বোলার।
এতোদিন পর মাঠে ফিরে স্বভাবতই সবার মতো রোমাঞ্চিত এই দুই নারী ক্রিকেটার। রানিংয়ের পাশাপাশি তিন ওভার বোলিং করেছেন জাহানারা। চেনা পরিবেশে ফিরে বোলিং করতে পেরে তৃপ্ত ডানহাতি এই বোলার।
জাহানারা বলেন, 'শান্তি লাগছে। অনেক বেশি তৃপ্তি হচ্ছে। অনেক দিন পর বোলিং করতে পেরেছি। পত্রিকায়-টিভিতে দেখেছি পুরুষ দলের অনেকেই প্রথম দিনে খুবই অস্বস্তি অনুভব করেছে, বলগুলো ডাবল দেখছে, মাথা ঘোড়াচ্ছিল। কিন্তু আমার তেমনটা মনে হয়নি। আমি ওদের অবস্থা দেখে ভয় পাচ্ছিলাম যে, তাদের এই অবস্থা হলে আমাদের মেয়েদের কী হবে!'
মিরপুরে ফিরতে পেরে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন জাহানারা। অনুশীলনের সুযোগ করে দেওয়ায় বিসিবিকে ধন্যবাদ জানিয়ে জাহানারা বলেন, 'আমি অনেক ভালো অনুভব করেছি। অনেকদিন পর বোলিং করলাম, মিরপুরের মাঠে হাঁটলাম। দীর্ঘদিন পর এমন অনুভূতি, সত্যিই অসাধারণ। ধন্যবাদ বিসিবিকে। আমাদেরকে বলতেও হয়নি। বিসিবি নিজ উদ্যোগেই আমাদের অনুশীলনের ব্যবস্থা করে দিয়েছে।'
সূচি অনুযায়ী আরও দুদিন অনুশীলন আছে নারী ক্রিকেটারদের। প্রথম সপ্তাহে জাহানারাদের তিন ওভার করে বোলিং করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চলতি মাসের শুরু থেকেই অনুশীলন শুরু করায় বোলিংসহ অন্যান্য কাজে কোনো সমস্যা হচ্ছে না বলে জানালেন জাহানারা।
২০১১ থেকে বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে খেলে আসা এই ক্রিকেটার বলেন, 'আমি ৫ আগস্ট ঢাকা ফিরে ৬ ও ৭ আগস্ট অনুশীলন শুরু করেছি। শ্যামলি একাডেমিতে ক্যাচিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিং অনুশীলন করেছি। আমি এতোটা দারুণ ফিল্ডিং করেছি, ওখানকার কোচ তো দেখে বলেই ফেললেন, তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে না পাঁচ মাস ধরে তুমি ক্রিকেটের বাইরে। মনে হচ্ছে হয়তো এক সপ্তাহ বাইরে ছিলে।'
জাহানারার মতো মাঠে ফেরার আনন্দ কাজ করছে বাঁহাতি স্পিনার নাহিদা আক্তারেরও। অনুশীলনের পর ২০ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার বলেন, 'অনেকদিন পর মাঠে আসতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। দীর্ঘ পাঁচ মাস পর আমরা মাঠে এলাম। জিম করেছি, বোলিং করেছি। যদিও একটু কষ্ট হয়েছে, তারপরেও আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো হয়েছে।
করোনাভাইরাসের কারণে মাঠে না আসতে পারলেও ছেলে ক্রিকেটারদের মতো নিজেদের প্রস্তুত রাখতে কাজ করে গেছেন নারী ক্রিকেটারা। বিশেষ করে মানসিক দিক থেকে নিজেদের ভালোভাবে প্রস্তুত রেখেছেন তারা।
মনোবিদ আলী খানের ক্লাস থেকে পাওয়া শিক্ষা কাজে লাগবে জানিয়ে নাহিদা বলেন, 'কিছুদিন আগে আমরা স্পোর্টস সাইকোলজিক্যাল কিছু সেশন করেছি। ওখান থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। কীভাবে আমরা মানসিকভাবে শক্ত হব বা নিজেকে কীভাবে প্রস্তুত রাখব, বুঝেছি। আমরা জানি না পরিস্থিতি কী হবে ও কখন ঠিক হবে। তো কীভাবে নিজেকে প্রস্তুত রাখা যায় ওেই সেশনে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি।'