ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’: মোংলা বন্দরে বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য খালাস বন্ধ
ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে মোংলা বন্দর ও সুন্দরবন সংলগ্ন উপকুলীয় এলাকায় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে, চলছে লাগাতার বৃষ্টি – বাড়ছে বাতাসের তীব্রতাও। বর্তমানে পণ্য খালাসের জন্য মোংলা বন্দর চ্যানেলে ৮টি বাণিজ্যিক জাহাজ অবস্থান করছে, প্রতিকূল আবহাওয়া পরিস্থিতিতে খালাসের কার্যক্রম বন্ধ রেখে এসব জাহাজকে নিরাপদ স্থানে নোঙর করে অবস্থানের নির্দেশনা প্রদান করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া, ঘূর্ণিঝড়ের কবল থেকে উপকূলীয় অঞ্চলে জানমাল রক্ষায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জরুরী সভা করেছে মোংলা উপজেলা প্রশাসন। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী আফিয়া শারমিন। উপস্থিত ছিলেন ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) মোংলা উপজেলা কর্মকর্তা, উপজেলার সকল দপ্তরের কর্মকর্তা, ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য, সকল ইউনিয়নের ৬৬টি ইউনিটের টিম লিডার, স্বেচ্ছাসবকসহ এনজিও কর্মকর্তারা।
সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে উপজেলায় ১০৩টি সাইক্লোন শেল্টার, সকল পাকা স্কুল ভবন ও ধর্মীয় উপসানালয় প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যেখানে আশ্রয় নিতে পারবেন প্রায় ৫৫-৬০ হাজার মানুষ। এছাড়া আশ্রয়গ্রহণকারীদের জন্য শুকনো খাবার, জরুরী ত্রাণ সহায়তার জন্য চাল ও নগদ টাকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বিপৎসংকেত বাড়ার সাথে সাথে মানুষকে সচেতন করা এবং দুর্যোগ চলাকালীন সময় উদ্ধার, আশ্রয় প্রদান ও প্রাথমিক চিকিৎসার কাজ পরিচালনার জন্য সিপিপির ১ হাজার ৩২০ জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত রাখাসহ বিদ্যুৎ বিভাগ, সড়ক বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসকে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
এছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণ স্যালাইন, ওষুধ ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সংরক্ষণসহ উপজেলায় মোট ২৮টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নদী-সংলগ্ন এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের দিকে নজর রাখতে নির্দেশনা দিয়েছে তিনি। দুর্যোগের সময় কোথাও ভাঙ্গন দেখা দিলে তা মেরামতের জন্য শ্রমিকসহ জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখার জন্য — জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছে মোংলা উপজেলা প্রশাসন।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, নিজস্ব সতর্কতা-১ জারিসহ বন্যা দুর্গত মানুষের আশ্রয় ও উত্থারের জন্য সব নৌযান প্রস্তুত রেখেছে। দুর্যোগের আপৎকালীন সময় দুর্গত মানুষের সহায়তার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।