ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে ৬ মামলা হাইকোর্টে বাতিল
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল জয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালে মানহানির অভিযোগে ময়মনসিংহে দায়ের হওয়া একটি মামলা বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। এছাড়াও ঢাকার শ্রম আদালতে দায়ের হওয়া আরো ৫ মামলা বাতিল করেছেন হাইকোর্ট।
এই মামলাগুলোর কার্যক্রম পরিচালনা প্রশ্নে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে গত ২৪ অক্টোবর পৃথক রায় দেন বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
সম্প্রতি রায়গুলো প্রকাশ করা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সাংবাদিকদের জানান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান।
আইনজীবী জানান, ২০০৭ সালের ১৭ জানুয়ারি গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূস বিদেশি এক সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, 'বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা কেবল অর্থের জন্য রাজনীতি করেন, এখানে কোনো আদর্শের ব্যাপার নেই।'
তার এ মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে ময়মনসিংহ জেলা জাসদের যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলাম চুন্নু সেই বছরের ২১ জানুয়ারি ময়মনসিংহের আদালতে একটি মানহানি মামলা করেন। ময়মনসিংহের ১ নম্বর আমলি আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ ওই মামলায় সমন জারি করলে ইউনূস মামলা দায়েরের চার বছর পর ওই আদালতে হাজির হয়ে মুচলেকা দিয়ে জামিন নেন।
পরে ২০১১ সালে এ মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন। ওই সময় হাইকোর্ট মামলা বাতিলে রুল জারি করেন।
আইনজীবী জানান, মানহানির মামলা বাতিল করে রায়ে হাইকোর্ট বলেন, এই মামলাটি হয়েছিল ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে হয়রানি করা এবং এই হয়রানি করতে আদালতকে ব্যবহার করেছিলেন মামলার বাদী।
২০১৯ সালের ৩ জুলাই ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তার প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ কমিউনিকেশন্সের সদ্য চাকরিচ্যুত সাবেক তিন কর্মচারী। তারা হলেন, আব্দুস সালাম, শাহ আলম, এমরানুল হক।
একই বছর হোসাইন আহমেদ ও আব্দুর গফুরও মামলা করেন। এসব মামলা বাতিল চেয়ে ২০২০ সালে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তখন হাইকোর্ট মামলা বাতিলে রুল জারি করেছিলেন।
পৃথক শুনানি শেষে গত ২৪ অক্টোবর হাইকোর্ট এই মামলাগুলো বাতিল করে রায় দেন।
ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান সাংবাদিকদের বলেন, রায়ে আদালত বলেছেন, এই মামলাগুলো করে আদালতের সময় নষ্ট করেছেন বাদী। শুধু তাই নয়, এসব মামলাই করা হয়েছে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে। আর সে কারণেই এই ৫টি মামলা বাতিল করা হলো।