বকেয়ার বেতনের দাবি, মাহমুদ জিন্সের শ্রমিকদের দিনভর ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা হরীতকীতলা এলাকায় মাহমুদ জিন্স লিমিটেড নামের পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বকেয়ার বেতনের দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক দিনভর অবরোধ করেছেন।
দিনভর আন্দোলন করে তারা এখনও বকেয়া বেতন পাননি। তবে আজ বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কারখানা মালিকের ছেলে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যস্ততায় শ্রমিকদের সাথে আলোচনা করছেন। তবে রাত ৮টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের একপাশে অবরোধ চলছিল। অপর লেন দিয়ে আংশিকভাবে যান চলাচল করছিল।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শ্রমিকেরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করলে উভয় পাশে কয়েক কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে করে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায়— বিপাকে পড়েছেন ওই মহাসড়ক ব্যবহারকারী যাত্রী ও চালকেরা। ঢাকার থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে একমাত্র মহাসড়কটি বন্ধ হয়ে পড়ায়– আশেপাশের বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মালিকপক্ষ ও বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সাথে কথা মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে।
শিল্প পুলিশ ও কারখানার শ্রমিক জানায়, শ্রমিকদের এক মাসের বকেয়া, সার্ভিস বেনিফিট ও কারখানার কর্মকর্তাদের ক্ষেত্র বিশেষে ৬ থেকে ৯ মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষুব্ধরা ঐ মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের বকেয়া বেতন ও সার্ভিস বেনিফিট দেওয়ার কথা বললেও তা বকেয়া রেখেছে। বৃহস্পতিবার তাদের বকেয়া সমুদয় পাওনা পরিশোধ করার কথা।
একারণে কারখানাটির শ্রমিক, এবং চাকরি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়া শ্রমিকরাও – সকালে বকেয়া বেতন পাওয়ার আশায় কারখানায় আসেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কারখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, টাকার ব্যবস্থা করতে না পারায় তারা বৃহস্পতিবারে বকেয়া পাওনা পরিশোধ করতে পারবেন না। একারণে ক্ষুব্ধ হয়ে শ্রমিকরা পাশের মহাসড়কে অবস্থান নেয়।
শ্রমিকরা আরো জানায়, গত আগস্ট মাসেও মাহমুদ জিন্স লিমিটেড কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের পাঁচ মাসের বেতন বকেয়া বেতনের দাবিতে বেশ কিছুদিন আন্দোলন করতে হয়েছিল। পরে মালিকপক্ষ অনেকের পাওনা পরিশোধ করে দেয়। তারপরেও কিছু শ্রমিকের বকেয়া রয়েছে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর পরিদর্শক মোঃ আজাদ রহমান বলেন, 'বৃহস্পতিবার সকালে মাহমুদ জিন্সের কারখানার শ্রমিকদের বকেয়া বেতন দেওয়ার কথা ছিল। সে অনুযায়ী, কারখানার নিয়মিত শ্রমিক এবং অন্যান্য কারখানায় চলে যাওয়া শ্রমিকরা বেতনের জন্য কারখানা সামনে এসে জড়ো হয়। কিন্তু সাড়ে আটটার দিকে মালিকপক্ষ থেকে বলা হয়, টাকার ব্যবস্থা করতে না পারায় আজকে বেতন দেওয়া সম্ভব নয়। এ কারণে শ্রমিকরা কারখানার ভিতর থেকে পার্শ্ববর্তী ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে এসে অবরোধ করে। এতে সড়কের উপায় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।'
তবে, এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলেও কারখানা কর্তৃপক্ষের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে কালিয়াকৈরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ জানান, সন্ধ্যায় শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের বিষয়ে আলোচনার জন্য মালিকের ছেলে কারখানায় এসেছেন। সেখানে শ্রমিকদের সাথে তাদের পাওনা পরিশোধের বিষয়ে আলোচনা চলছে। আশা করা যায়, রাতেই শান্তিপূর্ণ সমাধান পাওয়া যাবে।
তিনি আরো জানান, আলোচনার কারণে শ্রমিকরা মহাসড়কের একাংশ ছেড়ে দিয়েছে। একারণে রাত ৮টার দিকে অন্যপাশ দিয়ে ও বিকল্প উপায়ে যান চলাচল শুরু হয়েছে। রাতের মধ্যে পুরোপুরি যান চলাচল স্বাভাবিক করতে চেষ্টা করছে পুলিশ।