জনবল সংকটে চালু হচ্ছে না ঢাকা-খুলনা নতুন রুটে চলা ট্রেন
পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-খুলনা নতুন রুটে ঢাকা-খুলনার মধ্যে চলা ট্রেন আপাতত চালু হচ্ছে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে এ ট্রেন চালু হওয়ার কথা ছিল। কবে থেকে ট্রেনটি চালু হবে, সেটিও নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের ডিভিশনাল ম্যানেজার শাহ সুফি নূর মোহাম্মদ বলেন, 'আমরা দুটি কারণে এ মুহূর্তে ট্রেনটি চালু করতে পারছি না। এর মধ্যে অন্যতম কারণ হলো আমাদের জনবল সংকট। এছাড়া এ রুটের নতুন লাইনে কিছু কারিগরি সমস্যাও রয়েছে। কারিগরি সমস্যাগুলো এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।'
এর আগে গত ২৪ নভেম্বর এ রুটে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালায় রেলওয়ে। ওইদিন সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা 'সুন্দরবন এক্সপ্রেস' ট্রেনটি দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছে।
ওই ট্রেনে থাকা রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল বাকী বলেছিলেন, 'নতুন রুটটির জন্য খুলনা-যশোরের মানুষ অনেকদিন ধরে অপেক্ষা করছেন। তাদের অপেক্ষার পালা শিগগিরই শেষ হচ্ছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই নতুন রুটে ট্রেন চলবে।'
খুলনা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মাসুদ রানা জানান, 'বর্তমানে খুলনা থেকে ঢাকা রুটে মোট তিনটি ট্রেন চলাচল করে। এগুলো হচ্ছে- সুন্দরবন এক্সপ্রেস, চিত্রা এক্সপ্রেস ও নকশীকাঁথা এক্সপ্রেস মেইল ট্রেন।'
এর মধ্যে মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ছয় দিন রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে ১৪টি বগি নিয়ে 'সুন্দরবন এক্সপ্রেস' ট্রেন খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। তবে বর্তমানে পোড়াদহ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, ভাঙ্গা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ৩৭৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ঢাকায় পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় আট ঘণ্টা।
আর নতুন রুটে খুলনা থেকে ঢাকার দূরত্ব ২০৮ কিলোমিটার। এ রুটে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ট্রেন যশোরের সিঙ্গিয়া, নড়াইল মধুমতি সেতু, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি, ফরিদপুরের ভাঙা, পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় পৌঁছাবে। এতে সময় লাগবে মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টা।
এছাড়া চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন রোববার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ৬ দিন সকাল ৯টায় ১৪ বগি নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। যমুনা সেতু দিয়ে ঢাকায় পৌঁছাতে সময় লাগে ১০ ঘণ্টা।
আর মালবাহী ট্রেন নকশীকাঁথা ট্রেনটি পাঁচটি বগি নিয়ে প্রতিদিন রাত সাড়ে ১১টায় খুলনা থেকে ছেড়ে যায়। পোড়াদহ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, ভাঙ্গা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় আট ঘণ্টা।
স্টেশন মাস্টার মাসুদ রানা বলেন, 'ঢাকা-খুলনা রুটে যাত্রীদের চাপ সবসময়ই বেশি। নতুন রুটে সাড়ে তিন ঘণ্টায় ট্রেন চালু হলে যাত্রীদের সময় ও ভোগান্তি অনেকটাই কমবে। তিনটি ট্রেন ধারাবাহিকভাবে এ রুটে চালানো গেলে মানুষ ব্যাপকভাবে উপকৃত হবেন।'
এ বিষয়ে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের ব্যবস্থাপক মো. মামুনুল হক বলেন, 'আমাদের সারাদেশেই রেল চালানোর চাহিদা আছে। যার কারণে তাৎক্ষণিক কিছু করা যায় না। এ কারণে সুন্দরবন ও চিত্রা এক্সপ্রেস আগে যেভাবে ঢাকায় যেত, সেভাবেই চলাচল করবে। তবে আশা করি দ্রুতই নতুন এ রুটে আমরা ট্রেনের সংখ্যা বাড়াতে পারব। এছাড়া মোংলা বন্দরের সঙ্গে ঢাকার রেল যোগাযোগও যাতে হয়, সে ব্যাপারেও কাজ চলছে।'