ডিসেম্বর পর্যন্ত মেট্রোরেলের ভাড়ার ওপর ভ্যাট ছাড়ের মেয়াদ বাড়িয়েছে এনবিআর
মেট্রোরেলের ভাড়ার ওপর ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) ছাড়ের মেয়াদ ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব (মূসক আইন ও বিধি) ব্যারিস্টার মো. বদরুজ্জামান মুন্সী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, মেট্রোরেল বাংলাদেশের আধুনিক ও জনপ্রিয় গণপরিবহন হিসেবে যানজট নিরসন এবং কর্মঘণ্টা সাশ্রয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ সেবা আরও জনপ্রিয় করতে এর যাতায়াত ব্যয় সাশ্রয়ী করা প্রয়োজন।
তাই মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২-এর ধারা ১২৬-এর উপ-ধারা (৩)-এর আওতায় এ ভ্যাট অব্যাহতি দিচ্ছে এনবিআর।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
বর্তমান মূসক ও সম্পূরক শুল্ক আইনে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবহন সেবায় ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট প্রযোজ্য।
নগরবাসীর মধ্যে গণপরিবহন ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি (ডিএমটিসিএল) মেট্রোরেলের টিকিট ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখতে এনবিআরকে অনুরোধ করেছে।
সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজস্ব কর্তৃপক্ষ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত মেট্রোর ভাড়ার ওপর ভ্যাট মওকুফ করেছিল।
তবে এনবিআর ভ্যাট অব্যাহতির সময়সীমা বাড়ায়নি। গত ৪ এপ্রিল ডিএমটিসিএলকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানায় এনবিআর।
কিন্তু ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হওয়ায় ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এ সুবিধা ভোগ করে মেট্রো পরিষেবা।
৪ জুলাই এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায়, ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ ভাড়া সংক্রান্ত ভ্যাট ২০৩২ সাল পর্যন্ত স্থগিত করার অনুরোধ করে।
ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক সভায় জানান, 'বর্তমান ভাড়ার সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট যুক্ত হলে খুচরা টাকা লাগবে। কিন্তু মেট্রোরেলের ১৬টি স্টেশনে ৮৪টি টিভিএম দিয়ে খুচরা টাকা আদায় করা সম্ভব হবে না। ৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এই ৮৪টি মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। এখন টিকিটের মূল্যের ওপর ভ্যাট আদায় করতে হলে এসব মেশিন প্রতিস্থাপন করতে হবে, যা খুবই ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ।'
তাই ২০৩২ সাল পর্যন্ত মেট্রোরেল সেবার ওপর কোনো ধরনের ভ্যাট আরোপ না করার অনুরোধ করেন তিনি।
কর্তৃপক্ষের মতে, মেট্রোরেল প্রতিদিন সকাল ৭টা ১০ মিনিট থেকে রাত ১০টা ১৪ মিনিট পর্যন্ত ১৯৬ বার চলাচল করে, প্রায় তিন লাখ যাত্রীকে সেবা প্রদান করে। এতে প্রতিদিন জনসাধারণের যাতায়াতের সময় ব্যয় বাবদ ৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা এবং যানবাহন পরিচালনা ব্যয় বাবদ ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা সাশ্রয় হয়।