সবাই যে গ্রিনল্যান্ডের কথা বলছে, ছবিতে দেখে নিন কেমন দেখায়
ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত বুধবার বলেছেন, গ্রিনল্যান্ডের জনগণ চাইলে দ্বীপটি স্বাধীন হতে পারে। তবে এটি যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ আর্কটিক দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ নিতে চেয়েছেন। তার পরিপ্রেক্ষিতেই এমন জবাব এসেছে। গ্রিনল্যান্ড নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। তার মধ্যে চলুন দেখে আসা যাক, অঞ্চলটি কেমন।
গ্রিনল্যান্ডের ইলুলিসাট শহরের বাড়িগুলোর ছবি। যখন গ্রিনল্যান্ড উপনিবেশ ছিল, তখন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান স্নায়ু যুদ্ধের সময় দ্বীপটিকেকৌশলগত সম্পদ হিসেবে কিনে নিতে চেয়েছিলেন। তিনি এর জন্য ১০ কোটি ডলার মূল্যের স্বর্ণ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কোপেনহেগেন তা বিক্রির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।
গ্রিনল্যান্ডের ইলুলিসাটের কাছে জ্যাকোবশাভন্স বরফ ফিয়র্ডের মুখে সূর্যাস্তের সময় দৃশ্যমান আইসবার্গ। যদি গ্রিনল্যান্ড স্বাধীনতা লাভ করে, তবে এটি চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। যদিও গ্রিনল্যান্ডবাসীদের অধিকাংশই স্বাধীনতা চান, তবে ডেনমার্কের ওপর অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতার কারণে পূর্ণ স্বাধীনতাকে অনেকেই বাস্তবসম্মত মনে করেন না। উল্লেখ্য, ডেনমার্ক ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যদেশ।
জ্যাকবসহাভনস গ্লেসিয়ার, ইলুলিসাতের কাছাকাছি জ্যাকোবশাভন্স আইস ফিওর্ড, গ্রিনল্যান্ড। এই দ্বীপটি ভূগোলগতভাবে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের অংশ। ছবিটি সেপ্টেম্বর ২০২১-এ তোলা হয়েছে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গ্রিনল্যান্ডের কানগারলুসুয়াকের উত্তরে বরফ গলিত পানি ও হিমবাহের কাদা।
মানুষ গ্রিনল্যান্ডের নুুক শহরের টিভোলি মেলায় দেখতে যায়। এই দ্বীপে রাজধানী নুুক, নিউ ইয়র্কের চেয়ে কোপেনহেগেনের কাছাকাছি। এখানে খনিজ, তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের বিপুল সম্পদ রয়েছে। তবে অঞ্চলটি এতোটা উন্নত নয়। মোটামুটি, ডেনমার্ক প্রতি বছর গ্রিনল্যান্ডে ১ বিলিয়নেরও কম অর্থ ব্যয় করে। ছবিটি সেপ্টেম্বর ২০২১-এ তোলা হয়েছে।
গ্রিনল্যান্ডের নুুকে একটি কবরস্থানের তীরে একটি কিছু আইসবার্গ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গ্রিনল্যান্ডে স্বাধীনতা আন্দোলন জোরালো হয়েছে। এখানকার অধিকাংশ বাসিন্দা স্বাধীনতাকে সমর্থন করেন, তবে তারা সময়সূচি ও জীবনের মানের ওপর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে বিভক্ত। ছবিটি তোলা হয়েছে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে।
গ্রিনল্যান্ডের নুুক শহরের একটি নৌ-বন্দর। গ্রিনল্যান্ডের অর্থনীতি মৎসশিকারী খাতের ওপর নির্ভরশীল, যা রপ্তানির ৯৫% এরও বেশি এবং বার্ষিক ডেনমার্কের সহায়তা, যা সরকারী বাজেটের প্রায় অর্ধেক পূরণ করে।
গ্রিনল্যান্ডের নুুক শহরের দক্ষিণে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সেরমেক গ্লেসিয়ারের বরফ গলার ছবি।
সূর্যাস্তের সময় নুুকের কাছে ভেসে আসা একটি আইসবার্গ। ইউরোপ থেকে উত্তর আমেরিকায় যাওয়ার সবচেয়ে ছোট পথে আর্কটিক দ্বীপটি হওয়ায়, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি তৈরির জন্য গ্রিনল্যান্ডের কৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে।
নুুক শহরের ঘরবাড়ির দৃশ্য। ১৯৫৩ সালে গ্রিনল্যান্ড আনুষ্ঠানিকভাবে ডেনমার্কের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং ডেনিশ সংবিধানের অধীনে পরিচালিত হয়, যার ফলে এর আইনি অবস্থার কোনো পরিবর্তন আনতে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হবে। ২০০৯ সালে দ্বীপটিকে স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হয়। এর মধ্যে গণভোটের মাধ্যমে নিজেদের স্বাধীনতা ঘোষণা করার অধিকারও অন্তর্ভুক্ত।
নুুক শহরের একটি দেয়ালে আঁকা এক নারী ও একটি ধবধবে সাদা ভালুকের দেয়ালচিত্র। ২০১৯ সালে গ্রিনল্যান্ড কেনার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাব ডেনমার্ক কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ ন্যাটো মিত্র ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন ওই প্রস্তাবকে 'অযৌক্তিক' বা "উদ্ভট" বলে অভিহিত করেছিলেন। মঙ্গলবার ট্রাম্পের নতুন করে আগ্রহ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ফ্রেডেরিকসেন বলেন, "আমাদের আমেরিকানদের খুব ভালো সহযোগিতা দরকার।" তবে তিনি বলেন, "একইসঙ্গে আমি সবাইকে গ্রিনল্যান্ডবাসীদের প্রতি সম্মান দেখাতে উৎসাহ দিতে চাই। গ্রিনল্যান্ডের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার একমাত্র গ্রিনল্যান্ডেরই রয়েছে।"
গ্রিনল্যান্ডের নুুক শহরের দক্ষিণেও বরফ গলছে। যদিও গ্রিনল্যান্ডবাসী বেশিরভাগই স্বাধীনতা চান, তবে তারা ডেনমার্কের উপর অর্থনৈতিক নির্ভরতার কারণে পূর্ণ স্বাধীনতাকে কার্যকরী মনে করেন না। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে 'ফ্রি অ্যাসোসিয়েশন' চুক্তি করা যেতে পারে। এর মাধ্যমে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোর মতো যেমন- মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ, মাইক্রোনেশিয়া এবং পলাউয়ের স্ট্যাটাসের সাথে তুলনীয় হতে পারে।
গ্রিনল্যান্ডের নুক শহরের বাইরের একটি সাধারণ দৃশ্য।
গ্রিনল্যান্ডের নুুক শহরের ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত সেরমেক হিমবাহের দৃশ্য।
গ্রিনল্যান্ডের নুক শহরের বাড়িগুলোর ছবি।
গ্রিনল্যান্ডের পূর্ব উপকূলে গলতে থাকা বরফ এবং আইসবার্গের ছবি।
গ্রিনল্যান্ডের কেকটারসুয়াতসিয়াতে ফুটবল গোল পোস্টের ছবি।
গ্রিনল্যান্ডের নুক শহরে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে তোলা কিছু বাড়ির ছবি।
আইলুলিসাতের কাছে জ্যাকোবশাভন্স আইস ফিয়র্ডে সূর্যাস্তের সময় রক্তিম আইসবার্গ। ৫৭,০০০ জনসংখ্যার এই বরফে আচ্ছাদিত দ্বীপটি বিপুল খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ এবং মার্কিন সামরিক বাহিনীর জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। অঞ্চলটি ডেনমার্কের অংশ হিসেবে ৬০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে রয়েছে।
নকু শহরের বাইরের একটি সাধারণ দৃশ্য।
নুকে একটি নির্মাণাধীন সাইটের দৃশ্য।
গ্রিনল্যান্ডের নুকের ৮০ কিমি দক্ষিণে সারমেক গ্লেসিয়ারের গলে যাওয়ার দৃশ্য।
নুকের উপকূলে একটি আইসবার্গ।
গ্রিনল্যান্ডের ইলুলিসাতে ডিস্ক-বে তে আইসবার্গের দেয়ালে সূর্যের আলো প্রতিফলিত হচ্ছে।