এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনে ৯০ শতাংশ রপ্তানি ক্ষতির শিকার হবে বাংলাদেশ
স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের পর, ১২টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বা ৯০ শতাংশ রপ্তানি ক্ষতির শিকার হবে বাংলাদেশ। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা'র (ডব্লিউটিও) সচিবালয়ের হিসাব সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
১২টি এলডিসি'র মধ্য এই ক্ষতি সর্বোচ্চ, যা বাংলাদেশের মোট বৈশ্বিক রপ্তানি বাণিজ্যের ১৪.৩ শতাংশ।
তারপরও, এটি বেশ বড় অংকের ঘাটতি, যা বাস্তবে রূপ নিলে দেশের অর্থনীতির উপর নেতিবাচক চাপ সৃষ্টি করবে নিঃসন্দেহে। এর প্রধান কারণ; এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন হলে ২০২৬ সালের পর বাংলাদেশ শুল্ক ও কোটা মুক্ত বাজার সুবিধা হারাবে।
অবশ্য, ইউরোপিয় ইউনিয়নের রপ্তানি বাজারে মিলবে আরেকটু বেশি সময়, সেখানে ২০২৯ সাল পর্যন্ত এসব সুবিধা পাবে দেশের রপ্তানি খাত।
আজ বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) দেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ- সিপিড'র "মুভিং আউট ফ্রম দ্য এলডিসি গ্রুপ: স্ট্র্যাটেজিস ফর গ্র্যাজুয়েশনে উইথ মোমেনটাম" শীর্ষক আলোচনায় এসব কথা জানান সংস্থাটির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান।
উন্নত দেশের বাজারে রপ্তানির ক্ষেত্রে দেওয়া বিশেষ সুবিধা থেকে এলডিসি'ভুক্ত দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি লাভবান হওয়ার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। সেকারণেই, ক্ষতিটাও বেশি হবে।
বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ রপ্তানি বিশেষ বাজার সুবিধা পেয়ে থাকে। সামগ্রিক রপ্তানিতে বিশেষ ছাড়ের বিচারে যা পুরো বিশ্বের মধ্যে অন্যতম শীর্ষস্থান। উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তীর্ণ হওয়া ১২টি এলডিসি'র মধ্যে তাই সবচেয়ে বড় শুল্ক বাধার মুখেও পড়বে বাংলাদেশের রপ্তানি খাত।
তবে, দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দুই রাষ্ট্র নেপাল ও ভুটান তাদের অন্যতম বৈদেশিক বাণিজ্য সহযোগী ভারতের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির(এফটিএ) আওতায় থাকায় তাদের উপর শুল্কের মাত্রা হবে অনেকটাই কম। সে তুলনায় বিশেষ বাজার সুবিধা হারিয়ে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হবে বাংলাদেশের।
২০২৬ সালকে বাংলাদেশের এলডিসি থেকে নন-এলডিসি'ভুক্ত উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার সময় নির্ধারণ করেছে জাতিসংঘ। ১৯৭৫ সালে এলডিসি তালিকাভুক্ত হয় বাংলাদেশ। তার সাড়ে চার দশক পর চলতি বছর জানা গেল সেখান থেকে বেড়িয়ে আসার ক্ষণ, তাই ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে পাঁচ দশকের যাত্রা শেষ হবে।
তবে সঠিক গতিতে গ্র্যাজুয়েশন অর্জনকে সামনে রেখে বেশ কিছু কৌশল সুপারিশ করেছে সিপিডি।