এলডিসি থেকে উত্তরণের সময় ৩–৬ বছর পেছানোর দাবি ব্যবসায়ী নেতাদের
স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উন্নয়শীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্তরণ ৩ থেকে ৬ বছর পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা। তারা বলছেন, খুব দ্রুত এলডিসি থেকে উত্তরণ হলে বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীতে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) আয়োজিত এক সভায় এই দাবি তোলা হয়।
সভায় ব্যবসায়ীরা বলেন, দেশের বর্তমান শিল্প ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এলডিসি থেকে উত্তরণে পর্যাপ্ত সময় প্রয়োজন, যাতে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে।
বিজিএমইএর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সব শিল্প খাত, বিশেষ করে পোশাক যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে, তা ছিল সভার মূল আলোচনার বিষয়।
বক্তারা শিল্পাঞ্চলগুলোর নিরাপত্তা, চলমান গ্যাস সংকট এবং ব্যাংকিং-সংক্রান্ত সমস্যার কারণে ব্যবসা যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সভায় আলোচনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল বিভিন্ন কারখানায় নিরাপত্তা সমস্যা।
মাহমুদ ডেনিমের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ওপর সাম্প্রতিক হামলার ঘটনা উল্লেখ করে ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, এ ঘটনা শিল্প খাতে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
তারা বলেন, এ ধরনের ঘটনা অব্যাহত থাকলে উদ্যোক্তারা শিল্পকারখানা পরিচালনায় উৎসাহ হারিয়ে ফেলতে পারেন। এর ফলে বাংলাদেশের বৃহত্তর ব্যবসা, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এটি দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর হবে এবং এই পরিস্থিতি কোনো স্টেকহোল্ডারের কাম্য নয়।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেগবান করতে, শিল্পাঞ্চলে স্থিতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে এবং পোশাক খাতসহ সব কারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি জোরালো আহ্বান জানান ব্যবসায়ী নেতারা।
ব্যবসায়ী নেতারা সরকার ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর প্রতি শিল্প খাতের সুরক্ষার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
সভায় খেলাপি ঋণের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি নতুন নীতি নিয়ে তৈরি হওয়া উদ্বেগ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, নতুন এ নীতি বেসরকারি খাতে প্রভাব ফেলতে পারে।
তারা বলেন, ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে কার্যকর হওয়া নীতির কারণে বিনিয়োগ ব্যাহত হতে পারে। পাশাপাশি দেশের কর্মসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাবও ফেলতে পারে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবং স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের এমডি তপন চৌধুরী, এফবিসিসিআই প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান, বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল প্রমুখ।