দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন আকরাম খান
গত অক্টোবরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের আড়াই মাস হয়ে গেলেও কার্যনির্বাহী কমিটি চূড়ান্ত করা হয়নি। আগের হিসেবেই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন পরিচালকরা। এর মাঝে গুঞ্জন ছিল ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের দায়িত্ব ছাড়তে পারেন দীর্ঘদিন চেয়ারম্যানের পদ সামলে আসা আকরাম। অবশেষে গুঞ্জনই সত্যি হতে চলেছে।
আকরাম খান অবশ্য এ বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেননি। বিসিবিতে লিখিত কোনো চিঠি পাঠিয়েছেন কিনা, সেটাও নিশ্চিত নয়। আকরামের ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের দায়িত্ব ছাড়ার বিষয়টি সামনে এনেছেন তার স্ত্রী সাবিনা আকরাম। সোমবার বিকেলে এক ফেসবুক পোস্টে সাবিনা জানান, পারিবারিক কারণে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন আকরাম। এ বিষয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করা হলেও আকরাম ফোন ধরেননি।
ফেসবুক পোস্টের পর আকরাম খানের দায়িত্ব ছাড়ার বিষয়টি নিয়ে কথাও বলেন সাবিনা আকরাম। তিনি বলেছেন, 'এটা আমাদের পারিবারিক সিদ্ধান্ত। ক্রিকেট নিয়ে জীবনের বড় একটা সময় পড়ে থাকলো আকরাম। আমরা চাই এখন সে ক্রিকেটের পাশাপাশি পরিবারকে আরও সময় দিক। কিন্তু ক্রিকেট অপারেশন্সের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় থাকলে তো সেটা সম্ভব নয়। এই কারণেই এমন সিদ্ধান্ত।'
২০১৪ সালে নাজমুল হাসান পাপনের নেতৃত্বে নির্বাচিত কমিটিতে প্রথমবার ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের দায়িত্ব নেন আকরাম । কিন্তু ২০১৫ সালের অক্টোবরে তাকে সরিয়ে নাঈমুর রহমান দুর্জয়কে চেয়ারম্যান করা হয়। যদিও চেয়ারটি ফিরে পেতে সময় লাগেনি আকরামের, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সাবেক এই অধিনায়ককে আবারও চেয়ারম্যান করা হয়। এরপর টানা ছয় বছর ধরে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ সামলে আসছিলেন তিনি।
হঠাৎ কেন এই সিদ্ধান্ত? এর পেছনে আছে বাংলাদেশ দলের বাজে পারফরম্যান্সের প্রভাবও। বিশ্বকাপ ও এর পরের সময়ে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স নিয়ে অনেক সমালোচনা। সেই সমালোচনায় নাম জুড়েছে বিসিবির এই পরিচালকেরও। এ ছাড়া গত কিছুদিনে তাকে না জানিয়েই অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। এখান থেকেই সূত্রপাত। যদিও তার স্ত্রীর দাবি পারিবারিক কারণে সরে দাঁড়াচ্ছেন আকরাম।
গত মাসে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষে দলের সঙ্গে দেশে ফেরেননি আকরাম। তিনি দেশে পৌঁছানোর আগেই পাকিস্তান সিরিজ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে নেয় বিসিবি। অথচ এসব সিদ্ধান্তে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে তার মতামত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কথা। কিন্তু বেশ কয়েকটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকাই ছিলো না আকরামের। মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনকে সহকারী কোচ করার ভাবনার বিষয়েও কিছু জানতেন না তিনি।
এ ছাড়া পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দল গঠন, কোচিং স্টাফের দায়িত্ব সম্পর্কে অবগত ছিলেন না তিনি। অথচ ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে এসব সিদ্ধান্ত তারই নেওয়ার কথা ছিল। মোট কথা ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যানের পদে থাকলেও আকরাম খানের মতামতের তোয়াক্কা করেনি বিসিবি। এ কারণেই তিনি সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।