এটিএম জালিয়াতির ঘটনায় তুরস্কের নাগরিকসহ দু'জন গ্রেপ্তার
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের আন্তঃদেশীয় অপরাধ (সিটিটিসি) বিভাগ বিশেষ অভিযানে ভারতীয় পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়ে যাওয়া আন্তর্জাতিক এটিএম কার্ড জালিয়াত (ক্লোনিং-স্কেমিং) চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।
গত মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশান-১ এলাকা হতে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে বুধবার (১৯ জানুয়ারি) সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন সিটিটিসি প্রধান ও ডিআইজি মো: আসাদুজ্জামান। গ্রেফতারকৃতরা হলো: তুর্কি নাগরিক হাকান জানবুকান (৫৫) ও মো: মফিউল ইসলাম।
গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত হতে ৫টি বিভিন্ন মডেলের ফোন, একটি ল্যাপটপ, ১৫টি ক্লোন কার্ডসহ মোট ১৭টি এটিএম কার্ড জব্দ করা হয়। সিটিটিসি প্রধান জানান, আন্তর্জাতিক এটিএম কার্ড (ক্লোনিং-স্কেমিং) চক্রের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড তুরস্কের নাগরিক হাকান জানবুকান। তিনি গত ২-৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের বিভিন্ন বুথে গিয়ে বিভিন্ন দেশের একাধিক ক্লোন কার্ড ব্যবহার করে ৮৪ বার টাকা উত্তোলনের জন্য চেষ্টা করেন। কিন্তু ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড এন্টি স্কেমিং টেকনোলজি ব্যবহার করায় এ্যালার্ম সিস্টেমের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারে এবং হ্যাকার কর্তৃক স্কেমিং প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, হাকান জানবুকান গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসেন এবং রাজধানীর পল্টন এলাকায় দ্য ক্যাপিটাল হোটেলে অবস্থান করে ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের বিভিন্ন বুথে গিয়ে অস্ট্রেলিয়া, নিউজল্যান্ড, ইউএসএ, ইন্ডিয়া, তুরস্ক, সৌদি আরব,অস্ট্রিয়া, জার্মানি, ভিয়েতনাম, যুক্তরাজ্য,কানাডা, বলিভিয়া, স্পেন, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে সহ প্রায় ৪০টি দেশের নাগরিকের ক্রেডিট কার্ড ক্লোন করে স্কেমিংয়ের মাধ্যমে কমপক্ষে ৮৪ বার টাকা উত্তোলনের জন্য চেষ্টা করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় যে, জানবুকান ২০১৯ সালে ভারতের আসাম রাজ্যের পল্টন বাজার পুলিশ স্টেশনের এটিএম স্কোমিং মামলায় অন্য এক তুরস্কের নাগরিক এবং ২ বাংলাদেশিসহ গ্রেফতার হন। ওই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া আসামিরা ভারতের বিভিন্ন এটিএম বুথ থেকে কার্ড ক্লোনিং করে প্রায় ১০ লাখ রুপি আত্মসাৎ করে।
ভারতে প্রায় ২০ মাস জেলে থাকার সময় আগরতলার গোবিন্দ বল্লভ পান্ত হাসপাতালে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তিনি সুকৌশলে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে এক ভারতীয় ব্যক্তির সহায়তায় দুই লাখ রুপির বিনিময়ে সিকিম হয়ে নেপালে পৌছান। সেখান থেকে ট্রাভেল ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে নিজ দেশে ফিরে যান এবং নতুন পাসপোর্ট তৈরি
করেন।
এই চক্রে বাংলাদেশ, তুরস্ক, বুলগেরিয়া, মেক্সিকো, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক জড়িত বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের হয়েছে।