সেভেরোদোনেৎস্ক থেকে পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে ইউক্রেনীয় সৈন্যরা
শীর্ষস্থানীয় আঞ্চলিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেভেরোদোনেৎস্ক ছাড়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে।
পূর্ব ইউক্রেনের বড় অংশগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করছে রাশিয়া। এ কারণে রুশ বাহিনীর আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দু এখন পূর্বাঞ্চলীয় সেভেরোদোনেৎস্ক।
লুহানস্কের আঞ্চলিক প্রধান সের্হি হাইদাই বলেছেন, 'অবিরত গোলাবর্ষণ করা হয়েছে এমন জায়গায় মাসের পর মাস বসে থাকার মানে হয় না।'
সম্প্রতি সেভেরোদোনেৎস্ককে প্রায় ঘিরে ফেলেছে রুশ বাহিনী। এখন তাদের লক্ষ্য সেভেরোদোনেৎস্কের যমজ শহর লিসিচানস্ক। ইতিমধ্যে লিসিচানস্কের সঙ্গে যোগাযোগকারী সেতু উড়িয়ে দিয়েছে রুশ সেনারা। তাদের বোমা হামলা থেকে বাঁচতে এখনও আজত রাসায়নিক কারখানার নিচে লুকিয়ে আছে শত শত মানুষ। কারখানাটির নিষ্কাশন শোধনাগার ধ্বংস হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন হাইদাই।
শুক্রবার সকালে ইউক্রেনীয় টেলিভিশনকে সের্হি হাইদাই বলেন, 'তাদেরকে [ইউক্রেনীয় বাহিনীকে] পিছু হটে নতুন অবস্থান নেওয়ার…এবং সেখান থেকে কার্যক্রম চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।'
সেভেরোদোনেৎস্কের পুরো অবকাঠামো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ৯০ শতাংশের বেশি বাড়িতে গোলাবর্ষণ হয়েছে। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ বাড়ি গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তবে ইউক্রেনীয় বাহিনীর প্রত্যাহার শুরু হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কারণ শুক্রবার সকালেও ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী বলেছে, 'সেভেরোদোনেৎস্ক শহরের জন্য লড়াই চলছে'।
বৃহস্পতিবার রুশ বাহিনী সেভেরোদোনেৎস্ক ও লিসিচানস্কের দক্ষিণের আরও বেশ কিছু অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ওই সময় সেখানে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে অচিরেই ঘেরাও করে ফেলা হতে পারে, এমন আশঙ্কা সৃষ্টি হয়।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আক্রমণ চালায় রাশিয়া। তারপর গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাশিয়ার আক্রমণ চলছে মূলত দুটি শহরকে কেন্দ্র করে।
এই শহর দুটো ইউক্রেনীয়দের জন্য লুহানস্ক অঞ্চলে সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ দুই শহর।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দাবি করেছেন, দনবাসে (দোনেৎস্ক ও লুহানস্কে একত্রে এ নামে ডাকা হয়) রুশ ভাষাভাষীরা বছরের পর বছর ধরে গণহত্যার শিকার হয়েছেন। ইউক্রেনে আক্রমণ শুরুর পেছনে তার অন্যতম যুক্তি ছিল এটি।
যদিও ইউক্রেন পুতিনের দাবিকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে উল্টো মস্কোর বিরুদ্ধে ইউক্রেনের জনগণের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ এনেছে।
এদিকে রাশিয়ার সংবাদ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, শুক্রবার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খেরসন-এ একটি গাড়ি বিস্ফোরণে রুশ-নিযুক্ত একজন কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। ইউক্রেন অবশ্য এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।
খেরসন অঞ্চলে সম্প্রতি ক্রেমলিনের নিয়োগ দেওয়া বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
খেরসনের নিয়ন্ত্রণ হাতে রাখতে পারলে রাশিয়া থেকে ক্রিমিয়া পর্যন্ত একটি স্থল করিডোর করতে পারবে মস্কো। উল্লেখ্য, ২০১৪ সাল থেকে রাশিয়ার দখলে আছে ক্রেমলিন উপদ্বীপ।
- সূত্র: বিবিসি