বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ‘টেকঅ্যাওয়ে’ খাবার পিৎজা
ঘরে বসে রেস্টুরেন্টের খাবার অর্ডার করা কিংবা দোকান থেকে খাবার কিনে নিয়ে যাওয়া বাংলাদেশে এখন এক সাধারণ বিষয়। ফুড ডেলিভারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সব বয়সের মানুষের কাছেই 'টেকঅ্যাওয়ে' এখন বেশ জনপ্রিয় ব্যবস্থায় পরিণত হয়েছে। মজার বিষয় হলো, জরিপ বলছে পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি যে খাবার টেকঅ্যাওয়ে পদ্ধতিতে নেওয়া হয় তা হল পিজ্জা।
গুগল সার্চ ডেটা থেকে তৈরি ওয়ার্ল্ড ম্যাপ অনুযায়ী এ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিটি দেশ থেকে সবচেয়ে বেশিবার সার্চ করা টেকঅ্যাওয়ে খাবারের ভিত্তিতে করা হয়েছে এই তালিকা।
দেখা গেছে, ৪৪টি দেশে পিৎজা আছে পছন্দের শীর্ষে। এর মধ্যে রয়েছে ভারত ও জার্মানির নাম। তবে তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে ধরে রেখেছে চায়নিজ খাবার। মোট ২৯টি দেশে চীনা খাবার রয়েছে শীর্ষস্থানে। ব্রিটেন ও আমেরিকায় এ খাবার জনপ্রিয়।
তৃতীয় যে খাবার মানুষ দোকান থেকে নিয়ে যায়, তা হলো সুশি। সুইডেন ও সুশির উৎপত্তিস্থল জাপানসহ ১০টি দেশের সার্চে শীর্ষে রয়েছে এই খাবার।
যুক্তরাজ্যের ইন্সুরেন্স ওয়েবসাইট মানিবিচ গুগলের তথ্যানুসারে ম্যাপটি তৈরি করেছে। খাবার নিয়ে যাওয়া সংক্রান্ত সার্চ টার্মের মাসিক গড় অনুযায়ী এ তলিকা।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সবচেয়ে বেশিবার সার্চ করা টেকঅ্যাওয়ে চয়েজকেই তারা দেশটির সর্বাধিক জনপ্রিয় পরিবাহিত খাবার হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
তারা বলেছে, 'পিৎজা মানুষের বেশ প্রিয় ও পছন্দের খাবার। চাহিদা ও ফরমাশ অনুযায়ী সবার জন্য আছে ভিন্ন ধরনের পিৎজা। কেউ হয়তো মাংসে ভরা পিৎজা পছন্দ করেন, আবার কারও টপিং হিসেবে পছন্দ আনারস। ভেজিটেরিয়ানরাও তাদের স্বাচ্ছন্দ্যমতো পিৎজা বেছে নিতে পারেন। আর তাই ফ্রান্স থেকে বারবাডোস পর্যন্ত সবখানেই পিৎজা পছন্দের শীর্ষে। এমনকি জন্মভূমি ইতালিতেও এটির চাহিদা সবচেয়ে বেশি।'
কানাডাসহ ছয়টি দেশে পছন্দের শীর্ষে থেকে ষষ্ঠ অবস্থানে আছে ফিশ অ্যান্ড চিপস। অন্যদিকে, পাঁচ নম্বর স্থানটি দখল করে রেখেছে চিকেন ফ্রাই। কম্বোডিয়াসহ পাঁচটি দেশে চিকেন ফ্রাই জনপ্রিয়। তবে ইউরোপজুড়ে পিৎজা পছন্দের শীর্ষে। এদিকে, রাশিয়ার মানুষের পছন্দের খাবার কাবাব। অন্যদিকে, ডেনমার্কে পছন্দের শীর্ষে রয়েছে স্প্যানিশ খাবার টাপাস।
নেদারল্যান্ডস-সহ চারটি দেশে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে ভারতীয় খাবার। ভারতীয় খাবারের অবস্থান তাই স মিলিয়ে ষষ্ঠ নম্বরে। তালিকায় সাত নম্বরে আছে কোরিয়ান খাবার। এ খাবারের প্রতি জর্ডানসহ তিনটি দেশের মানুষের আগ্রহ বেশি।
দুটি দেশে জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে থাই খাবারের অবস্থান অষ্টমে।
অন্যদিকে, একটি করে দেশে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থেকে নবম অবস্থানে আছে ছয়টি খাবারের পদ। এগুলো হলো- টাপাস, টাকোস, মালয়েশিয়ান খাবার, বারিতো, পাস্তা ও কাবাব।
মানিবিচ অঞ্চলভেদেও আলাদা ম্যাপ তৈরি করেছে।
ইউরোপে জনপ্রিয়তার শীর্ষস্থান স্পষ্টভাবেই পিৎজার দখলে। তবে ওশেনিয়া অঞ্চল দখল করে রেখেছে চায়নিজ খাবার। এশিয়ায় ভারতে সর্বাধিক জনপ্রিয় পিৎজা। অন্যদিকে, থাইদের পছন্দ ম্যাক্সিকান খাবার বারিতো। চীন ও ফিলিপাইনের মানুষের পছন্দ চায়নিজ খাবার।
উত্তর আমেরিকায় আমেরিকান ও ম্যাক্সিকানদের সার্চের শীর্ষেও রয়েছে চায়নিজ খাবার। অন্যদিকে কানাডা, সেইন্ট লুসিয়া, গ্রেনাডায় সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার ফিশ অ্যান্ড চিপ্স। দক্ষিণ আমেরিকার পেরু ও আর্জেন্টিয়ায় পিৎজা সর্বাধিক জনপ্রিয়। অন্যদিকে, চিলি ও কলম্বিয়ায় শীর্ষে আছে চায়নিজ খাবার। ব্রাজিলিয়ানদের পছন্দের টেকঅ্যাওয়ে পদ সুশি।
এদিকে, মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের মানুষের পছন্দের শীর্ষেও পিৎজা।
আফ্রিকায় দক্ষিণ আফ্রিকানদের প্রথম পছন্দ ফিশ অ্যান্ড চিপস। তবে মিশরীয়দের পছন্দের তালিকাতেও পিৎজাই শীর্ষে। মোজাম্বিকের মানুষদের পছন্দের শীর্ষে সুশি।
মানিবিচের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাইক রিস বলেন, 'সাম্প্রতিককালে আমরা ভাগ্যবান একজনের জন্য বিনামূল্যে টেকঅ্যাওয়ে খাবারের স্বাদ নেওয়ার সুযোগ রেখেছিলাম। প্রচুর মানুষ এখানে অংশ নিতে আগ্রহ দেখায়। আমরা ৯ হাজারের বেশি আবেদন পাই। সেখান থেকেই আমাদের বিশ্বব্যাপী খাবার নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের আগ্রহ জাগে।'
- সূত্র: ডেইলি মেইল