ভ্যাম্পায়ারের দাঁত যেভাবে সূঁচালো হলো
ভ্যাম্পায়ার শব্দটি শুনলেই মানসপটে ভেসে ওঠে তীক্ষ্ণ, সূঁচালো দাঁত। ১৮ শতকের দিকে পশ্চিমা লোককাহিনিতে আবির্ভাব ঘটে রক্তচোষা অমর এই চরিত্রের। তবে ১৮৯৭ সালে ব্রাম স্টোকারের উপন্যাস 'ড্রাকুলা'তেই প্রথম ভ্যাম্পায়ারের চরিত্রে সূঁচালো দাঁত সংযোজন হয় বলে মনে করেন বেশিরভাগ ইতিহাসবিদ।
এমনকি ১৯৩১ সালে মুক্তি পাওয়া বেলা লুগোসি অভিনীত 'ড্রাকুলা' চলচ্চিত্রেও ভ্যাম্পায়ারের সূঁচালো দাঁত ছিল না।
১৯৫০-এর দশকে 'ড্রাকুলা'র তুর্কি ও মেক্সিকান ভার্সন চলচ্চিত্রে ভ্যাম্পায়ার চরিত্রে দাঁতের চিত্রায়ণ শুরু হয়। তবে, ১৯৫৮ সালে হ্যামার ফিল্ম প্রোডাকশনের ক্রিস্টোফার লি অভিনীত 'ড্রাকুলা' চলচ্চিত্রের ব্রিটিশ ভার্সনের মাধ্যমেই ভ্যাম্পায়ারের তীক্ষ্ণ দাঁতের ধারণা মানুষের মনে পাকাপোক্ত হয়।
বিনোদন সাংবাদিক ব্রিয়ান ক্রনিনের মতে, মার্কিন প্রতিষ্ঠান বেন কুপার ইঙ্ক.-এর হ্যালোউইনের জন্য প্রস্তুতকৃত ভ্যাম্পায়ার মুখোশে ১৯৬৪ সালেও কোনো তীক্ষ্ণ দাঁত ছিল না। ১৯৭৮ সাল থেকে হ্যালোউইনের ভ্যাম্পায়ার মুখোশে দাঁতের ব্যবহার শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি।
মাঝের ১৪ বছরে ক্রিস্টোফার লি ১২টি ভ্যাম্পায়ার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
বেইলর ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট ফর স্টাডিজ অব রিলিজিয়নের অধ্যাপক জে. গর্ডন মেল্টন জানান, ১৯৯০-এর দশকে 'ভ্যাম্পায়ার: দ্য মাসক্যারাড'-এর মতো গেমগুলো থেকে অনেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে বিশেষ কম্যুনিটি গড়ে তোলেন, যারা নিজেদের 'আসল ভ্যাম্পায়ার' পরিচয় দিতেন। এই দলগুলোর অনেক সদস্যই ভ্যাম্পায়ারের দাঁতওয়ালা মুখোশ পরতেন।
১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত স্কেয়ারক্রো ভ্যাম্পায়ার ফাঙ্গস নামের প্রতিষ্ঠানটি প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে ৩৫টি দেশে ২ লক্ষ ৫০ হাজার সেট ভ্যাম্পায়ারের দাঁত সরবরাহ করেন, বিশেষত হ্যালোইনের সময়। প্রতিষ্ঠানটির সহ প্রতিষ্ঠাতা লিন্ডা ক্যাম্পলেস হ্যালোইনে প্রাপ্তবয়স্কদের অংশগ্রহণ ও ভ্যাম্পায়ার চরিত্রের জনপ্রিয়তা বজায় থাকাকেই তার পণ্যের জনপ্রিয়তার কারণ মনে করেন।
তিনি বলেন, 'ক্ষমতাশালী হয়ে চিরদিন বেঁচে থাকা ধারণাটি মানুষ পছন্দ করে।'
- সূত্র: স্মিথসোনিয়ান ম্যাগাজিন