১০৪ বছর বয়সেও তিনি পড়তে ও লিখতে শিখলেন!
দক্ষিণ ভারতের কেরালা রাজ্যের ১০৪ বছর বয়সী কুট্টিইয়াম্মা সবসময় স্কুলে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাল্যবিবাহ আর গৃহস্থালির কাজ তার সেই স্বপ্নকে অধরাই করে রেখেছিল। অবশেষে, শতবর্ষ পেরিরে পূরণ হয়েছে তার অধরা স্বপ্ন। তিনি এখন পড়তে ও লিখতে পারেন।
কেরালা রাজ্য সাক্ষরতা মিশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় পেয়েছেন ৮৯! তার বয়স ও সাফল্যের কথা শুনে চমকে উঠেছেন সবাই।
সম্প্রতি কুট্টিইয়াম্মার বই পড়ার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। তাতে তিনি জানিয়েছেন নিজের জীবনের নানা কথা; আদম্য ইচ্ছে থাকা সত্ত্বের কেনো পড়ালেখা করতে পারেনি এবং শেষ বয়সে এসে কীভাবে তিনি নিজের স্বপ্ন পূরণ করলেন, তার সবই বলেছেন তিনি ওই ভিডিও বার্তায়।
শিক্ষক হতে চেয়েছিলেন কুট্টিইয়াম্মা। কিন্তু গৃহস্থলির কাজ এবং ১৬ বছর বয়সে বিয়ে, তার চাওয়াকে পূরণ হতে দেয়নি। তার অন্যান্য ভাই-বোনেরাও পড়াশোনার সুযোগ পাননি বলে জানান তিনি।
গৃহস্থলির কাজের চাপে পড়াশোনা তো দূরে থাক, কোথাও যেতেও পারতেন না কুট্টিইয়াম্মা। কিন্তু তার আদম্য ইচ্ছে শক্তিতে কেটে গেছে সব বাধা। এক বছর আগে তিনি শিখেছেন কীভাবে পড়তে ও লিখতে হয়। নাতি-নাতনিরা পড়ার সময় তিনি তাদের পাশে বসে মনোযোগ দিয়ে পড়া শুনতেন। তার এমন আগ্রহ দেখে একজন শিক্ষক তাকে কিছু বই এনে দেন; পাশাপাশি ভারত সরকারের বয়স্ক শিক্ষা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের ব্যবস্থাও করে দেন তিনি। কুট্টিইয়াম্মা সেই বইগুলো পড়েছেন অসংখ্যবার।
তিনি বলেন, তার কাছে পরীক্ষা মোটেও কঠিন মনে হয়নি। তাইতো ১০০ তে তিনি পেয়েছেন ৮৯ নম্বর!
জীবনের সায়াহ্নে এসে শতবর্ষী এই বৃদ্ধা আরও কিছুদিন বেঁচে থাকার কামনা করেছেন; যেন নাতি-নাতনিদের ভালো চাকরি হওয়ার সাফল্য তিনি দেখে যেতে পারেন। নিজের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ না হলেও, নাতি-নাতনিদের সফল হওয়ার স্বপ্ন যেন পূরণ হয় সেই প্রার্থনাই এখন তিনি করেন।
সূত্র: বিবিসি