১০ কোটি বছর পর 'ঘুম' থেকে জেগে ওঠল জীবাণু
১০ কোটি বছরেরও আগে, পৃথিবীতে যখন মাংসাশী ডাইনোসর স্পিনোসারাস দাবড়ে বেড়াত- তারও আগে ময়লায় ভেতর ঘুমিয়ে পড়েছিল কিছু জীবাণু।
সময় বয়ে গেছে, পৃথিবীর ভূখণ্ডের ঘটেছে অনেক পরিবর্তন, মহাসমুদ্রের গতিপথ বদলেছে বহুবার, মানুষ নামক প্রাণীর আবির্ভাবে এই গ্রহে এসেছে অনেক পরিবর্তন, অবশেষে জেগে ওঠল জীবাণুগুলো।
অবশ্য বলা ভালো, ওগুলোকে জাগিয়ে তুলল মানুষের অন্বেষণ তৃষ্ণাই। জাপানের এক গবেষণাগারে সম্প্রতি ওদের প্রাণ ফিরিয়ে এনেছেন একদল গবেষক।
বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানে কাজ করা জাহাজ- জইডেস রেজুলেশন ওই জীবাণুগুলোর নমুনা ১০ বছর আগে মহাসমুদ্রের তলদেশ থেকে খুড়ে এনেছিল।
প্রশান্ত মহাসাগরের ২০ হাজার ফুট গভীর দক্ষিণ বলয়ের ৩২৮ ফুট নিচে থেকে ওই নমুনাগুলো সংগ্রহ করা হয়েছিল। মহাসাগরটির ওই অঞ্চলে প্রাণ সঞ্চারের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন ও খাদ্যের পরিমাণ খুবই সামান্য। দুনিয়ার ওরকম নির্জন জায়গাতেই উপাত্ত খুঁজে ফিরছিলেন গবেষকরা।
'এ রকম একেবারেই ন্যূনতম প্রাণ-সহায়ক পরিবেশে, কিংবা বলা ভালো, প্রাণের অস্ত্বিত্ব যেখানে থাকা প্রায় অসম্ভব- এমন পরিমণ্ডলে প্রাণের পক্ষে কীভাবে টিকে থাকা সম্ভব- এটি ছিল আমাদের জন্য মূল জিজ্ঞাসা,' এক বিবৃতিতে বলেন জাপান এজেন্সি ফর মেরিন-আর্থ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (জ্যামসটেক) বিজ্ঞানী ও জীবাণুর ওপর ওই গবেষণাকর্মের প্রধান- ইয়ুকি মরোনো।
তিনি আরও বলেন, 'প্রায় খাদ্যশূন্য পরিবেশে জীবাণুর পক্ষে কতদিন টিকে থাকা সম্ভব, সেটিও জানতে চেয়েছিলাম আমরা।'
তাদের গবেষণা জানিয়েছে, পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও খাদ্য সরবরাহ করা গেলে ১০ কোটি বছর পরও জীবাণুর পক্ষে জেগে ওঠা সম্ভব।
'শুরুতে আমার যথেষ্ট সন্দেহ ছিল, কিন্তু ১০ কোটি বছর আগেকার জীবাণুর নমুনা নিয়ে গবেষণা করে দেখলাম, ৯৯.১ শতাংশই এখনো জীবিত এবং ওরা খাদ্য গ্রহণে প্রস্তুত,' বলেন মরোনো।
ওই জীবাণুগুলো এতকাল সব ধরনের সক্রিয়তা থামিয়ে রেখেছিল। তার মানে, ছিল পুরোদস্তুর 'ঘুমন্ত' অবস্থায়। কিন্তু প্রাণের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য ও অন্যান্য উপাদান সরবরাহের পর ওগুলো আবার সক্রিয় হয়ে ওঠেছে।
এ নিয়ে গবেষণাপত্র প্রকাশ পেয়েছে ২৮ জুলাই, 'ন্যাচার কমিউনিকেশন' জার্নালে।
- সূত্র: লাইভ সায়েন্স ডটকম