৭ কোটি আলোকবর্ষ দূরের নক্ষত্রের মৃত্যু
বিশাল অপরিসীম ব্রহ্মাণ্ডে প্রতিদিন কত নক্ষত্র মারা যাচ্ছে, কোথায় কোন কোণে নতুন নতুন বিগ-ব্যাং হচ্ছে আমরা জানি না। তারাদের নিভে যাওয়ার দৃশ্য আমরা কেউ কি দেখতে পেয়েছি কখনো? এবার সেই অসাধারণ ঘটনার ছবি খুঁজে পেল আন্তত্তজাতিক মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। মহাকাশে তারা নিভে যাওয়ার বা নক্ষত্র-মৃত্যুর এই মহাজাগতিক ঘটনার ভিডিও নাসা নিজেদের ওয়েবসাইটে শেয়ার করতেই ভাইরাল হয়েছে তা।
পৃথিবী থেকে ৭ কোটি আলোকবর্ষ দূরে থাকা একটি স্পাইরাল গ্যালাক্সিতে রয়েছে নক্ষত্রটি। ছায়াপথের নাম এনজিসি ২৫২৫। ১৭৯১ সালে এই ছায়াপথ 'স্পাইরাল নেবুলা' আবিষ্কার করেন ব্রিটিশ মহাকাশবিদ উইলিয়াম হার্সেল।
মাত্র ৩০ সেকেন্ডের ভিডিওটি। মার্কিন গবেষণা সংস্থা নাসার হাবল টেলিস্কোপে ধরা পড়েছে টাইম-ল্যাপ্স এর ঘটনা। তবে এক দিনে নয়, এক বছর ধরে নিয়মিত বিরতিতে ধরা পড়া একের পর এক ছবি যুক্ত করে কয়েক সেকেন্ড দেখানো হয়েছে তাতে। নাসার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ভিডিওটি জুম করে তোলা হয়েছে। আর প্রকাশিত হতে না হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়ে যায়।
বাতি নিভে যাবার আগে যেমন উজ্জ্বল হয়ে জ্বলে ওঠে, ঠিক তেমনই নক্ষত্রের মৃত্যুর কয়েক মুহূর্ত আগে বিশাল এক বিস্ফোরণ হয়। এই বিস্ফোরণকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় সুপারনোভা। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে জ্যোতির্বিদ কইচি ইতাগাকি প্রথম 'এসএন ২০১৮জিভি' সুপারনোভাটি শনাক্ত করেন। ফেব্রুয়ারিতে সেটিতে চোখ রাখা শুরু করে হাবল টেলিস্কোপ।
টাইম-ল্যাপ্সের শুরুতে 'এনজিসি ২৫২৫' ছায়াপথের বাইরের দিকে আলোকচ্ছটার মতো দেখায় সুপারনোভাটি। তবে খানিক পরই ছায়াপথের সব চেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্রের চেয়েও বেশি উজ্জ্বল হয়ে ওঠে তা। ঠিক পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণের মতো। ক্ষণিকের জন্য যে পরিমাণ শক্তি নক্ষত্রটি থেকে ছড়িয়ে পড়ে, তা ৫০০ কোটি সূর্যের তেজষ্ক্রিয়তার সমান। রসায়ন বিদ্যার নিয়ম মেনেই বিকিরণ খুব বেশি হতে থাকলে তার পক্ষে বেশিক্ষণ দৃশ্যমান হওয়া সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রেও তাই-ই হয়েছে। ধীরে ধীরে আলো হারিয়ে ফেলেছে সে নক্ষত্র। মহাশূন্য থেকে মুছে গিয়েছে তার চিহ্ন। নক্ষত্রের নিষ্প্রভ হয়ে যাওয়ার মুহূর্তটি ধরা পড়েছে ভিডিওতে।