দিনে এক কৌটা বেবি পাউডার খান যে মার্কিন নারী
সংস্কৃতি ও পরিবেশভেদে মানুষের খাবারের বৈচিত্র্যের শেষ নেই। একেক মানুষের একেক খাবার পছন্দ। তবে কিছু মানুষের পছন্দের খাবারের কথা শুনলে রীতিমতো আপনার চোখ কপালে উঠে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের এমনই এক নারী রয়েছেন যার পছন্দের খাবার কি-না বেবি পাউডার। আর এটি খাওয়ার পেছনে এ বছর তিনি প্রায় চার হাজার ডলার খরচ করেছেন।
এই নারীর নাম ড্রেকা মার্টিন। পাউডার খাওয়া ২৭ বছর বয়সী এই নারীর দীর্ঘদিনের অভ্যাস। তিনি জানান, সন্তানদের গোসল করানোর পর প্রতিদিন পাউডার লাগিয়ে দেয়ার সময় একটু করে পাউডার চেখে দেখতে তার ভালই লাগত। কিন্তু একসময় এটি তার অভ্যাস, এমনকি রীতিমতো নেশাতে পরিণত হয়।
মার্টিন যুক্তরাষ্ট্রের লুজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের নিউ অরলিন্সের বাসিন্দা। তিনি প্রতিদিন জনসন'স অ্যালো অ্যান্ড ভিটামিন ই'র ৬২৩ গ্রামের এক বোতল পাউডার খেয়ে থাকেন। তিনি জানান, প্রয়োজনে তিনি 'স্বাভাবিক খাবার' ছাড়তে পারবেন, কিন্তু পাউডার খাওয়া ছাড়তে পারবেন না।
তাকে যখন এই পাউডারটির স্বাদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হয়, তখন তিনি জানান, এটি মুখের ভেতর গিয়ে গলে যায়। এভাবে পাউডার খেলেও কখনোই স্বাস্থ্যগত বা হজমে অসুবিধা হয়নি তার।
তবে গর্ভাবস্থায় এই নেশা থেকে দূরে ছিলেন মার্টিন। এখন এই পাউডার খাওয়ার জন্য তার দৈনিক খরচ ১৪ ডলার। সে হিসেবে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত এই নারী পাউডার খেয়ে খরচ করেছেন তিন হাজার ৭৮০ ডলার।
পাউডার প্রস্তুতকারক জনসন'স জানিয়েছে, তাদের এই পাউডার কেবল 'ত্বকে ব্যবহারের উপযোগী' করে তৈরি করা হয়েছে। এটি খাওয়া থেকে সতর্ক করা হয়েছে।
মায়ের এই অভ্যাস থেকে তার সন্তানেরও এই অভ্যাস গড়ে উঠতে পারে বলে উদ্বেগ জানিয়েছেন মেকাপ আর্টিস্টরা। তাদের মতে, যেহেতু শিশুরা প্রতিদিন তার মায়ের পাউডার খাওয়ার দৃশ্য দেখছে, তাই ওদের মধ্যেও এটি খাওয়ার প্রতি আগ্রহ তৈরি হতে পারে।
মার্টিন দাবি করেন, তার অখাদ্য (যেমন- চক, পেইন্ট ইত্যাদি) খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। তিনি বলেন, 'আমি বেবি পাওডার খেতে পছন্দ করি। এর স্বাদ ঠিক এর গন্ধের মতোই। এটি খেয়ে আমার ভাল লাগে।'
তিনি আরো বলেন, 'এ এমন নেশায় পরিণত হয়েছে যে আমি বাদ দিতে চাইলেও পারি না। পাউডারের কথা মাথায় এলেই আমার জিহবায় পানি চলে আসে। এই অভ্যাস এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে, স্বাভাবিক খাবারের কথা আমার মনেই হয় না। আমাকে যদি স্বাভাবিক খাবার ও বেবি পাউডারের মধ্যে একটিকে বেছে নিতে বলা হয়, তাহলে আমি পাউডারই বেছে নেব।'
প্রথমদিকে তিনি পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন। কিন্তু বেবি পাউডার কেনার কয়েকদিনের মধ্যেই ফুরিয়ে যাচ্ছিল। তাই মার্টিনের মায়ের মনে হয় এর পেছনে কোনো ব্যাপার তো অবশ্যই রয়েছে। সাধারণত একটি পাউডারের কৌটা দিয়ে তাদের দুই মাস চলত। সেখানে এক সপ্তাহেই পুরো কৌটা শেষ হয়ে যাচ্ছিল।
মার্টিন বলেন, 'আমি এটি গোপন রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু প্রায় সবসময়ই আমি এটি খেতাম। যখন আমার মুখ পাউডারে ভর্তি থাকত, তখন আমি কথা বলতে পারতাম না। এরপর আমার অভিভাবকরা জানতে চাইত আমার মুখে কী?'
স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির কারণে যদিও পরিবার ও বন্ধুরা মার্টিনকে এই অভ্যাস ছাড়তে বলেছেন। কিন্তু তিনি কোনোভাবেই এটি ছাড়তে পারেননি। কোথাও ভ্রমণে বের হলে এমনকি দেশের বাইরে গেলেও সাথে করে নির্দিষ্ট এই ব্র্যান্ডের অন্তত তিন কৌটা পাউডার সাথে নিয়ে বের হন মার্টিন।