এদের বসবাস আমাদের মুখমণ্ডলেই! কারা এরা? বিলুপ্তির শঙ্কায় বংশবিস্তার করে চলেছে?
আমাদের মুখমণ্ডলে ডেমোডেক্স নামের একধরনের অতিক্ষুদ্র পরজীবী কীট (মাইট) বাস করে। খালি চোখে দেখা না যাওয়া এ কীটগুলোর বৈজ্ঞানিক নাম ডেমোডেক্স ফলিকুলরাম।
ডেমোডেক্স মুখের রোমকূপগুলো পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে। রাতের বেলা নিজেদের কূপ থেকে বের হয়ে এ কীটগুলো মুখমণ্ডলের ওপর অন্য কীটের সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত হয়।
মুখের ওপর কীটের বাসা শুনতে অস্বস্তি লাগলেও আমাদের ত্বকের জন্যই এ পরজীবি প্রাণীগুলো গুরুত্বপূর্ণ। তবে এবার বিজ্ঞানীরা দুঃসংবাদ দিয়েছেন এগুলোকে নিয়ে। তাদের গবেষণায় জানা গেছে, ডেমোডেক্স এখন বিলুপ্তির পথে।
মাত্র ০.৩ মিলিমিটার লম্বা এ জীবগুলোর ডিএনএ ক্রমশ ক্ষয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ এভাবে চলতে থাকলে দ্রুতই বিলুপ্ত হয়ে যাবে ডেমোডেক্স।
কেউ যদি বিতৃষ্ণাবশত এতটুকু পড়ে সাবান-ফেইসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুতে চলে যান, তবে জেনে রাখুন এতে বিশেষ কোনো লাভ হবে না। কারণ, ডেমোডেক্স ত্বকের অনেক গভীরে বাস করে, তাই ধুলেও এগুলো থেকে 'মুক্তি' পাওয়া যাবে না।
মানুষের মধ্যে মোটামুটি প্রতি ১০০ জনের ৯০ জন মুখমণ্ডলে এ মাইট বহন করেন। গবেষণার সহলেখক, ইউনিভার্সিটি অভ রিডিং-এর ড. আলেজান্ড্রা পেরোট্টি বলেন, 'এরা খুবই ছোট আর ক্ষুদ্র। এদের নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ডেমোডেক্স আমাদের ত্বকের রোমকূপ পরিষ্কার করে।'
ডেমোডেক্সের শরীরে জিনের সংখ্যা সবচেয়ে কম। আর গবেষণায় দেখা গেছে, ডেমোডেক্সের জিনগত বৈচিত্র্য কমে যাওয়ার মানবদেহের ওপরই বেশি নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে তারা। আর তা-ই বাড়িয়ে তুলেছে তাদের বিলুপ্তির শঙ্কা।
ডেমোডেক্স যত বেশি মানবত্বকের ওপর নির্ভর করে, ততই তাদের জিনের সংখ্যা কমে যায়। এভাবে কমতে থাকলে একসময় ডেমোডেক্স আর মানুষের মধ্যে কোনো সহাবস্থান থাকবে না, বরং তারা মানুষের ওপরই সম্পূর্ণ নির্ভরশীল হয়ে যাবে।
এই নির্ভরতার কারণে তারা আর রোমকূপ ছেড়ে বের হতে পারবে না। এর ফলে নতুন সঙ্গীর সাথে সঙ্গমেও লিপ্ত হতে পারবে না এগুলো। ডক্টর পেরোত্তি জানিয়েছেন, ডেমোডেক্স হারিয়ে গেলে মানুষের ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সূত্র: বিবিসি