ইভ্যালির গ্রাহকদের ধৈর্য ধরতেই হবে: মাহবুব কবীর
ইভ্যালিতে অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করা গ্রাহকদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছে কোম্পানিটির দায়-দেনা নিরূপনে হাইকোর্ট গঠিত পরিচালনা পর্ষদ।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ও বোর্ডের চেয়ারম্যান শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিকের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার ধানমন্ডির ইভ্যালি কার্যালয়ে পর্ষদের প্রথম সভা শেষে হাইকোর্টের নিয়োগ দেওয়া ইভ্যালির এমডি ও অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন এ আহ্বান জানান।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে তিনি বলেন, "ইভ্যালির দায়-দেনা নিয়ে আমাদের কাছে শতভাগ সঠিক তথ্য নেই। এই অবস্থায় ইভ্যালির পাওনা বা পণ্য পাওয়া নিয়ে ধৈর্য ধরা ছাড়া কোনো উপায় নেই। আপনারা ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করুন।"
মাহবুব কবীর মিলন বলেন, পর্ষদ সভায় আদালতের রায়ের কপি পর্যালোচনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া, ইভ্যালির পুরো দায়-দেনা ও সম্পদ অডিট করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একটি প্রতিষ্ঠিত ফার্মের মাধ্যমে অডিট করা হবে। অডিটের মাধ্যমেই কোম্পানিটি সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ চিত্র পাওয়া যাবে।
ইভ্যালি নিয়ে ইতিপূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ যেসব সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান তদন্ত করেছে, সেসব তদন্ত প্রতিবেদন সংগ্রহের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।
বিতর্কিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির পরিচালনার জন্য গত ১৮ অক্টোবর চার সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠন করেন হাইকোর্ট। বোর্ডের প্রধান আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।
এর আগে ইভ্যালির গ্রাহক ফরহাদ হোসেন প্রতিষ্ঠানটির অবসায়ন চেয়ে হাইকোর্টের কোম্পানি আদালতে আবেদন করেন। এর মাধ্যমে নিজের রিফান্ড পাওয়ার আবেদন করেন ওই গ্রাহক। সেইসঙ্গে ইভ্যালির নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠনের আবেদনও করেন তিনি।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর রেজিস্ট্রার ফর জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মকে (আরজেএসসি) আদালত ইভ্যালির সব নথিপত্র আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দেন।
হাইকোর্ট ইভ্যালির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি ও হস্তান্তরেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
ইভ্যালির তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানিটির মোট সম্পদের মূল্য ১২১ কোটি টাকা, গ্রাহক ও মার্চেন্টরা কোম্পানিটি থেকে পায় এক হাজার কোটি টাকারও বেশি।
কোম্পানিটি বড় ডিসকাউন্ট দিয়ে গ্রাহকদের প্রলুব্ধ করে ৭-৪৫ দিনের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি দেওয়ার কথা বলে আগাম পেমেন্ট গ্রহণ করে। তবে, অনেক গ্রাহকই সেই সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও এখনো পণ্য বুঝে পাননি।
কিছু ক্ষেত্রে ইভ্যালি পণ্য সরবরাহে ব্যর্থ হওয়ায় গ্রাহকদের রিফান্ড চেক অফার করে, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই ইভ্যালির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় চেক বাউন্স করে।
অর্থ আত্মসাৎ ও চেক জালিয়াতির অভিযোগে ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল ও তার স্ত্রী ও ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত বেশ কিছু মামলা করা হয়েছে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর এ দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়।