একই বিআইএনে ব্যবসা করতে পারবে এক কোম্পানীর অধীনস্ত সব প্রতিষ্ঠান
এখন থেকে একটি কেন্দ্রীয় ‘বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার’ এর (বিআইএন) মাধ্যমে ব্যবসা করতে পারবে গ্রুপ অব কোম্পানির সব প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি নিজস্ব মালিকানায় বা নিয়ন্ত্রণাধীন শো-রুম ও শাখা অফিসের ব্যবসাও একই বিআইএনে পরিচালনা করা যাবে।
তবে এর জন্য সমজাতীয় পণ্য উৎপাদন ও সেবা প্রদান করতে হবে। পাশাপাশি মূল প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে হিসাব সংরক্ষণেরও শর্ত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট অনুবিভাগ থেকে চলতি সপ্তাহে এক প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের হয়রানি কমে যাওয়ার পাশাপাশি পণ্য আমদানি-রফতানি সহজ হবে বলে মনে করছে এনবিআর।
এনবিআরের ভ্যাট অনুবিভাগের প্রথম সচিব হাছান মুহাম্মদ তারেক রিকাবদার বলেন, “এর ফলে বড় প্রতিষ্ঠানগুলোকে একাধিক বিআইএন নিতে হবে না। এনবিআরের মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন অফিসে গিয়ে ভ্যাট পরিশোধের ঝামেলা থেকেও মুক্ত হবে।”
বিআইএন হলো- ব্যবসায় পরিচালনার জন্য এনবিআর থেকে ভ্যাটের সনদপত্র। বার্ষিক ৫০ লাখ টাকা টার্নওভার হলে এ নিবন্ধন নেয়া বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি উৎপাদন ও সেবা খাতের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানকে এ নিবন্ধন নিতে হয়।
এনবিআরের হিসাব অনুযায়ী ১৯৯১ সালের ভ্যাট আইনে নিবন্ধন নিয়েছিল ৭ লাখ ৭৫ হাজার প্রতিষ্ঠান। চলতি অর্থবছর থেকে ভ্যাট আইন ২০১২ বাস্তবায়নের পর নতুন আইনে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৮৮ হাজার প্রতিষ্ঠান অনলাইনের মাধ্যমে নিবন্ধন নিয়েছে।
নতুন জারি হওয়া প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী গ্রুপ অব কোম্পানির অন্য প্রতিষ্ঠান তাদের মূল প্রতিষ্ঠানের বিআইএন ব্যবহারের ক্ষেত্রে শর্ত হিসেবে এনবিআর জানিয়েছে, পণ্য আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে সহযোগী বা সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের অবস্থান যেখানেই হোক মূল প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা ব্যবহার করে এলসি ওপেন করতে হবে। পাশাপাশি কোন ইউনিটের জন্য আমদানি করা হচ্ছে তার উল্লেখ থাকতে হবে।
ভ্যাট পরিশোধের বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, মূল প্রতিষ্ঠানের বিআইএনের মাধ্যমে ভ্যাট দিতে গেলে অধীনস্ত সব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব হিসাব বইয়ের পাশাপাশি একটি কেন্দ্রীয় হিসাব থাকতে হবে।
কেন্দ্রীয়ভাবে ভ্যাট পরিশোধে একটি সেন্ট্রাল রেজিস্ট্রেশনেরও নির্দেশনা দিয়েছে এনবিআর। শর্তানুযায়ী প্রথমে মূল প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধনের পর সহযোগী ও সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানকে এর মধ্যে অন্তর্ভূক্তির আবেদন করতে হবে। শাখা অফিসকে অন্তর্ভূক্তির জন্যও আবেদন করতে হবে।
কেন্দ্রীয় নিবন্ধনের ব্যবস্থা চালু করায় তা বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশেষ সুবিধা নিয়ে আসবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরাও।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিআইয়ের উপদেষ্টা আব্দুল খালেক বলেন, “এটি হলে বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর যত শাখাই হোক না একটি নাম্বার দিয়েই আমদানি-রফাতানিসহ সব কাজ সম্পন্ন করতে পারবে।”