এপ্রিলে নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেছে অর্ধেকেরও বেশি
চলতি বছরের মার্চের তুলনায় এপ্রিলে নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেছে অর্ধেকেরও বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, এপ্রিলে নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি ছিল ১,৫২৫ কোটি টাকার। যেখানে মার্চে এর পরিমাণ ছিল ৩,৮৯১ কোটি টাকা।
অন্যদিকে ফেব্রুয়ারি মাসে বিক্রি ছিল ৩,৬৯০ কোটি টাকা, জানুয়ারিতে বিক্রির পরিমাণ ছিল আরও বেশি- ৪,২১০ কোটি টাকা।
এপ্রিলে বিক্রির পরিমাণ কমে যাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিপিডি'র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, আয়কর রেয়াত পেতে অনেকে অর্থবছরের শেষ দিকে এসে সঞ্চয়পত্র কেনা বাড়িয়ে দেন। বিশেষ করে এপ্রিল, মে, জুনে এসে বিক্রি অনেক বেড়ে যায়।
এপ্রিলে এত কমে যাওয়ার পিছনে কোভিড এর দ্বিতীয় ঢেউ আঘাতই বড় কারণ হতে পারে বলে তার ধারণা। তিনি বলেন, কোডিডের দ্বিতীয় ঢেউ এর ফলে আবারও একটি অনিশ্চিত পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে বিনিয়োগকারীরা সঞ্চয়পত্র কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, অনিশ্চিত পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে মানুষ নগদ টাকা হাতে রাখেন।
অন্যদিকে সঞ্চয়পত্র বাসায় বসে কেনা যায় না, এর জন্য ব্যাংকে বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। এপ্রিল থেকে যেহেতু লকডাউন শুরু হয়েছিল, তাই অনেকে ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হননি। বিক্রি হওয়ার প্রভাবও কিছুটা থাকতে পারে।
এদিকে চলতি অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল এই ১০ মাসে নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ৩৪,৭২৮ কোটি টাকার। যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিথ বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪,৪২৬ কোটি টাকা বেশি।
তবে চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে এই লক্ষ্যমাত্রা ঘোষিত হয়েছিল ২০ হাজার কোটি টাকা। সেই হিসেবে, জুলাই-এপ্রিল সময়ে ১৪,৭২৮ কোটি টাকা বেশি সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে।
গেল ৩ জুন নতুন অর্থবছরের জন্য অর্থমন্ত্রী যে বাজেট প্রস্তাব করেছেন, তাতে বাজেট ঘাটতি মেটাতে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ৩২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছেন।
বর্তমানে ব্যাংক আমানতের গড় সুদহার সাড়ে ৪ শতাংশ, অন্যদিকে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৫ শতাংশের মত। সে হিসেবে প্রকৃত সুদহার ঋণত্মাক হওযায় ব্যাংকে টাকা জমা রাখলে উল্টো লোকসান। অন্যদিকে বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে সুদহার সাড়ে নয় থেকে সাড়ে ১১ শতাংশের বেশি।