কম মুনাফার গাড়ি উৎপাদন শিল্পে কেন আসতে চাইছে অ্যাপল?
২০২৪ সাল নাগাদ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় স্বচালিত গাড়ির অন্যতম বড় উৎপাদক হওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল। তারা এমন যাত্রীবাহী গাড়ি উৎপাদন করতে চায় যেখানে বিদ্যুৎশক্তি সংরক্ষণে ব্যবহার করা হবে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যাটারি। ফলে সংশ্লিষ্ট শিল্পে নতুন বিপ্লবের সূচনা হবে, এমন আশা প্রকাশ করেছে কোম্পানিটির অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলো।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এই সংবাদ প্রকাশের পর গত সোমবার (যুক্তরাষ্ট্র সময়) বিকেল নাগাদ পুঁজিবাজারে অ্যাপল ইঙ্কের শেয়ার দর ৬ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে। কিন্তু, স্মার্টফোন ও অন্যান্য গ্যাজেটের বৃহৎ এই উৎপাদকটি কেন ভবিষ্যতের গাড়ি শিল্পের দিকে ঝুঁকছে তা নিয়ে প্রশ্ন জাগে। কারণ, তাদের প্রচলিত ব্যবসার তুলনায় নতুন উদ্যোগ তথা বিদ্যুৎচালিত গাড়ি বিক্রির মুনাফা রেশিও তুলনামূলক কম।
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাক্স গত বুধবার এক নোটে জানায়, সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত বাজার পরিস্থিতিতেও কার ব্যবসায় মুনাফার পরিমাণ খুব কম হবে। অর্থাৎ, কোম্পানিটি যদি ২০২৫ সাল নাগাদ ইলেকট্রিক কারের ৫ শতাংশ বাজার ধরে গড়ে ৭৫ হাজার ডলার মূল্যে বার্ষিক চার লাখ ১৭ হাজার গাড়ি বিক্রি করে- তবুও খরচের চাইতে লাভের অংক খুব বেশি হবে না।
"হার্ডওয়্যার প্লাটফর্ম হিসেবে অ্যাপলের গাড়ি তৈরির উদ্যোগটি যুক্তিসঙ্গত। বিশেষ করে, অ্যাপলের পরিষেবার বাজার এতে বাড়বে। কিন্তু, শুধু গাড়ি বিক্রিতে মুনাফার পরিমাণ কম হওয়ায় তার ফলে পুঁজি লগ্নিকারীদের আয় খুব বেশি বাড়বে না,'' গোল্ডম্যানের ব্যাখ্যায় বলা হয়।
তবে মহাকায় বিনিয়োগ ব্যাংকটি আভাস দেয়, এর মাধ্যমে অ্যাপল তার উৎপাদিত টিভি শিল্পের ব্যবসা মডেল অনুসরণ করে বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারেও বড় পরিষেবা প্রদাণকারী হয়ে উঠতে চাইছে। শূন্য থেকে কম মুনাফার শীর্ষ গাড়ি উৎপাদক হওয়ার চাইতে বরং এটাই সবচেয়ে লাভজনক পন্থা।
"(সফটওয়্যার) সার্ভিস প্রোভাইডার হলে গাড়ির বাজারে অ্যাপল গ্রাহকদের জন্য বিকল্প অথচ চমৎকার সেবা পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারবে। সেজন্য তাদের নিজেদেরই সম্পূর্ণরূপে ইলেকট্রিক গাড়ি উৎপাদন ও তার বিক্রির ঝামেলায় পড়তেও হবে না," গোল্ডম্যান আরও বলেছে।
তবে অটোমোবাইল বাজার প্রবেশে অ্যাপল যেপথই বেছে নিক, কোম্পানিটির সফটওয়্যার পরিষেবা তাতে আরও শক্তিশালীই হবে। বিশেষ করে, আগামীদিনে যদি স্বচালিত যানবাহন স্বাভাবিক দৃশ্য হয়ে ওঠে, তখন গাড়ি চালানোর চাইতে ভ্রমণকালে নানা ধরনের তথ্য ও বিনোদন সেবাও উপভোগ করতে চাইবেন চালক ও যাত্রীরা। অ্যাপল এই দৃশ্যপটেই বাজিমাত করবে বলেই মনে করছেন অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ। আর এমনটা হলে সার্বিকভাবে কোম্পানির আয় এবং বাজার মূলধনের পরিধিও বাড়বে। দূর হবে সীমিত মুনাফার উদ্বেগ।
- সূত্র: রয়টার্স ও মার্কেট ওয়াচ