খুলনায় একমাস পর চালু ৮ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল
দীর্ঘ এক মাস পর খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি পাটকল আবার চালু হয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে আজ রোববার (২৬ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে পাটকলগুলো সীমিত আকারে চালু করা হয়।
প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এক শিফটে পাটকলগুলোতে উৎপাদন করা হবে। এর আগে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে গত ২৬ মার্চ থেকে পাটকলগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।
খুলনা অঞ্চলে উৎপাদন শুরু হওয়া পাটকলগুলো হচ্ছে- ক্রিসেন্ট জুট মিল, খালিশপুর জুট মিল, দৌলতপুর জুট মিল, প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিল, স্টার জুট মিল, আলিম জুট মিল, ইস্টার্ন জুট মিল ও জেজেআই জুট মিল।
এছাড়া, কার্পেটিং জুট মিলের উৎপাদন এখনও বন্ধ রয়েছে।
বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন (বিজেএমসি) সূত্র জানায়, গত ২৩ এপ্রিল প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিলের বোর্ডরুমে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের প্রকল্প প্রধানদের সঙ্গে শ্রমিক নেতাদের বৈঠকে পাটকল চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এরপর গত শনিবার বিকালে বৈঠক করে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় শুধু স্ব স্ব মিল কলোনিতে অবস্থানরত শ্রমিকরাই কাজে যোগ দিতে পারবেন বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তবে, মিলগুলোর বাইরে অবস্থানরত কোনো শ্রমিক কোয়ারেন্টিন শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাজে অংশ নিতে পারবে বলেও ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়।
সূত্রমতে, পাটকল চালু হলেও করোনার কারণে বিদেশে এখনই পাটজাতপণ্য বিক্রির সুযোগ নেই। তবে খাদ্য অধিদপ্তর ও বিএডিসির চাহিদা অনুযায়ী বস্তা তৈরি হলে দেশের অভ্যন্তরে এগুলো বিক্রি করা যাবে। এতে মিলগুলোর বকেয়া পরিশোধ করা সহজ হবে।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ক্রিসেন্ট জুট মিলের শ্রমিক মুরাদ হোসেন বলেন, মিলগুলোর কোয়ার্টারে যারা বসবাস করেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধু তারাই মিলের উৎপাদন কাজে যোগ দিয়েছেন। আশা করি এতে কোনো অসুবিধা হবে না।
মিলের প্রকল্প প্রধানরা জানান, মিলগুলোতে সতর্কভাবে দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করছে শ্রমিকরা। বিজেএমসির তথ্য অনুযায়ী, খুলনা অঞ্চলের ৯টি পাটকলে প্রায় ১০ হাজার স্থায়ী শ্রমিক রয়েছেন।
বিজেএমসি'র খুলনা আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. বনিজ উদ্দিন মিঞা বলেন, 'খাদ্যবিভাগ ও বিএডিসির জরুরি বস্তা সরবরাহের জন্য খুলনার কার্পেটিং জুটমিল ছাড়া অন্য সবক'টি মিল আংশিকভাবে চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মিলগুলো প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এক শিফটে চলবে।
তিনি আরও জানান, গত এক মাসে উৎপাদন বন্ধ থাকায় খুলনাঞ্চলের মিলগুলোর প্রায় ৩০ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে।