চট্টগ্রামে ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় নেই ৪০ ভাগ দোকান
চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেট এর আওতাধীন মার্কেট এবং শপিংমলগুলোতে ভ্যাট নিবন্ধনযোগ্য প্রায় ৪০ ভাগ দোকান নিবন্ধনের আওতায় আসেনি। করোনায় ব্যবসার নাজুক পরিস্থিতির অজুহাতে ব্যবসায়ীরা ভ্যাট নিবন্ধনে আগ্রহী নয় বলে জানিয়েছেন দোকান মালিক সংগঠনের নেতারা।
এর ফলে সরকার ভ্যাট রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে । ৫৭ ভাগ জনবল সংকটের কারণে শতভাগ ভ্যাট নিবন্ধন নিশ্চিত করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ভ্যাট বিভাগের কর্মকর্তারা।
ভ্যাট আইন অনুযায়ী, অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের বার্ষিক টার্নওভার ৮০ লাখ টাকা অতিক্রম করলে নিবন্ধন নেওয়ার আবশ্যকতা রয়েছে।
কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট চট্টগ্রামের ডেপুটি কমিশনার সাইদ আহমেদ রুবেল বলেন, 'এই ভ্যাট কমিশনারেটের আগ্রাবাদ, চট্টলা, চান্দগাঁও, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, পটিয়া, কক্সবাজার ও বান্দরবা্নে ৮ টি বিভাগ রয়েছে। এর আওতাধীন ৮০টি মার্কেট এবং শপিংমলের ৫,৪২০টি দোকানকে ভ্যাট নিবন্ধনের জন্য চিহ্নিত করেছি। এর মধ্যে ৬০ ভাগ দোকান ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় এসেছে। সেই হিসেবে এসব মার্কেটের ২,১৬৪ টি দোকান ভ্যাট নিবন্ধন নেয়নি'।
তিনি আরো বলেন, 'আমাদের চেষ্টা আছে ভ্যাট নিবন্ধনযোগ্য প্রতিটি দোকানে ভ্যাট নিবন্ধন নিশ্চিত করা। কিন্তু জনবল সংকট রয়েছে। এরপরও আমরা প্রতি মাসে ভ্যাট মেলার মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করছি'।
চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেট সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের পূর্বে বিভিন্ন মার্কেটে দোকানগুলো প্যাকেজ ভ্যাটের আওতায় ছিল। এর আওতায় প্রতিটি দোকান বছরে নূন্যতম ১৮ হাজার টাকা ভ্যাট পরিশোধ করত। তবে বর্তমানে এনবিআরের নতুন আদেশ অনুযায়ী প্রতি কর মেয়াদের (ইংরেজি মাস) বেচাকেনার বিপরীতে ভ্যাট রিটার্নের পরের মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আর ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের পূর্বশর্ত হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ভ্যাট নিবন্ধন।
চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেট এর তথ্য মতে, ৮৯৪ টি জন মঞ্জুরীকৃত পদের বিপরীতে কর্মরত আছে ৩৮০ কর্মকর্তা কর্মচারী। ৪৬৯ টি পদ খালি রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তা ৭৮ টি পদের বিপরীতে ১৭ টি, দ্বিতীয় শ্রেনীর ৩১১ টি পদের বিপরীতে ১৭৭ টি, তৃতীয় শ্রেনীর ৪২৩ টি পদের বিপরীতে ২৪৩ টি এবং চতুর্থ শ্রেনীর ৩৭ টি পদের বিপরীতে ৩২ টি পদ শূন্য রয়েছে। চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেট এর আওতায় এ পর্যন্ত ২৯,৮০১ টি প্রতিষ্ঠান ভ্যাট নিবন্ধিত হয়েছে।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ খুরশীদ আলম বলেন, ;করোনা ভাইরাসের কারণে ব্যবসার অবস্থা ভালো নেই। তাই ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় থাকা শতভাগ দোকান নিবন্ধনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। এরপরও আমরা দোকানদের উদ্বুদ্ধ করছি দোকানের ভ্যাট নিবন্ধন সম্পন্ন করার জন্য'।
চট্টগ্রাম নগরীর সানমার ওশান সিটি এবং ফিনলে স্কয়ার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আসাদ ইফতেখার টিবিএসকে বলেন, 'করোনায় লোকসানে পড়ে মার্কেটের কিছু দোকানের মালিক পরিবর্তন হয়েছে। এসব ব্যবসায়ীদের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংগ্রহে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের দুটি শপিংমলের অধিকাংশ দোকান ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় এসেছে। বাকিগুলো যাতে নিবন্ধনের আওতায় আসে এই বিষয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে'।