ব্যাংক পরিচালক-এমডিদের নিজস্ব ও পারিবারিক ব্যবসার তথ্য দিতে হবে
ব্যাংকের পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও তার নিম্নতর দুই স্তর পর্যন্ত কর্মকর্তাদের নিজস্ব এবং পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত সকল তথ্য লিখিত ভাবে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে জানাতে হবে।
প্রতি পঞ্জিকা বছরের (ক্যালেন্ডার ইয়ার) তথ্য বছর শেষে পরবর্তী বছরের ২০ জানুয়ারির মধ্যে দাখিল করতে হবে।
তবে গেল বছরের (২০২০ সাল) তথ্য চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং রেগুলেশন এন্ড পলিসি ডিপার্টমেন্ট (বিআরপিডি) এ সংক্রান্ত সার্কুলার ইস্যু করেছে।
এতে বলা হয়, ব্যাংক কোম্পানী আইন অনুযায়ী ব্যাংকের পরিচালক, এমডি ও তার নীচের দুই স্তর পর্যন্ত কর্মকর্তাদের নিজস্ব এবং পারিবারিক ব্যবসার তথ্য বার্ষিক ভিত্তিতে প্রদান করার বাধ্যবাধকতা আছে।
সেই বাধ্যবাধকতার কথা মনে করিয়ে দিয়ে আইনটি পরিপালনের কথা ব্যাংক গুলোকে মনে করিয়ে দিলো নিয়ন্ত্রক সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গণমাধ্যমের খবরে নানা সময়ে ওঠে এসেছে, ব্যাংকের অনেক পরিচালক ও শীর্ষ কর্মকর্তারা নিজেদের মধ্যে যোগসাজশে যেমন ঋণ নিচ্ছেন, তেমনি ব্যাংক সংক্রান্ত কোন কাজও নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নেন।
পরিচালকরা নিজেদের মধ্যে যোগসাজশ করে এখন পর্যন্ত যে ঋণ নিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসেবে তার পরিমাণ দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি।
ব্যাংকিং ব্যবসায় স্বচ্ছতা আনতে ব্যাংক পরিচালক-এমডিদের নিজস্ব ও পারিবারিক ব্যবসার তথ্য পর্ষদ সভায় দাখিলের বাধ্যবাধকতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে বলে মনে করেন ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এর সাবেক সভাপতি ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, আইন পরিপালনের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেওয়া ভালো উদ্যোগ।
তিনি জানান, নিয়মিত এ সংক্রান্ত তথ্য তার প্রতিষ্ঠান পেয়ে থাকে। অনেকে হয়তো পায় না। ব্যাংকে কর্মরত কোন শীর্ষ কর্মকর্তাদের ব্যাংকের সাথে ব্যবসার কোন সুযোগ তিনি দেন না। অন্যদেরও দেয়া উচিত নয়।
এই ধরনের তথ্য দেয়া ব্যাংক কমপ্লায়েন্সের একটি অংশ বলে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স (এবিবি) এর সাবেক সভাপতি ও মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেক ব্যাংকেই হয়তো আইনটি পরিপালন হচ্ছে না বিধায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিষয়টি নজরে এনেছে।
তার পরামর্শ, সবাইকে নজরে আনার পাশাপাশি যেসব ব্যাংকের পরিচালক, এমডিরা নিয়মিত তথ্য দিচ্ছে না তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থা নিলে ব্যাংকের কমপ্লায়েন্স আরো বাড়তো।
ব্যাংকের সাথে সংশ্লিষ্টরা যাতে নিজের ব্যাংকের সাথেই ব্যবসা করতে না পারে সেই উদ্দেশ্যেই এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান অভিজ্ঞ এই ব্যাংকার।