ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ছেই
চাল, তেল, চিনির সঙ্গে সঙ্গে দেড় মাসের বেশি সময় ধরে বাড়ছে ব্রয়লার মুরগির দাম। সীমিত আয়ের মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণের এই পণ্যটি এখন ১৬৫-১৭০ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে। ঢাকার বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর বাজার বিশ্লেষণের তথ্য বলছে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৩.১৮ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি ঢাকার খুচরা বাজারে পাকিস্তানি কক বা সোনালি জাতের মুরগির দাম কেজিতে ৫০-৬০ টাকা বেড়ে ৩৫০-৩৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের দাবি, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় মুরগির দাম বাড়ছে। এদিকে ভোক্তারা অভিযোগ করেন, আসন্ন রমজান মাসকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা আগেভাবেই মুরগির দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। কারণ রোজার মধ্যে মুরগির চাহিদা বেড়ে যায়।
দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে কারওয়ানবাজারের মুরগির দোকানি আরিফুল ইসলাম বলেন, 'মুরগির চাহিদা বেড়েছে। সে অনুযায়ী সরবরাহ বাড়েনি। যে কারণে দাম বাড়ছে'।
ব্যবসায়ীরা জানান, মাস দেড়েক আগে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির মাংস বিক্রি হয়েছে ১৩০-১৩৫ টাকায়। পাকিস্তানি কক বা সোনালি জাতের একেক কেজি মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৮০-৩০০ টাকার মধ্যে।
কারওয়ানবাজারে মুরগি কিনতে এসে এক বেসরকারী চাকরিজীবি আব্দুল খালেক টিবিএসকে বলেন, 'রোজার আগে প্রতি বছরই মুরগির দাম বাড়ে। তবে এবার মাস দুয়েক আগে থেকেই ব্যবসায়ীরা বাড়াতে শুরু করেছে। বাড়তি খরচের কষ্টটা এবার আরও বেশিদিন থাকবে মনে হচ্ছে'।
শুধু মুরগি নয়, ইতিমধ্যেই বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৬০-৫৮০ টাকায় বিক্রি হতো। যা এখন ৫৮০-৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যদিও ক্রেতারা দাবি করছেন, শবে বরাত সামনে থাকায় গরুর মাংসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে খোলা চিনির দাম। ৬৮ টাকা থেকে বেড়ে প্রতি কেজি চিনি সর্বোচ্চ ৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও প্যাকেটজাত চিনির দাম আরও মাস দুয়েক আগেই ৭৫ টাকা থেকে বেড়ে ৭৮ টাকায় উঠেছে।
এর আগেই অবশ্য দুই দফা ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে। টিসিবি বলছে, এক বছর আগের তুলনায় খোলা সয়াবিন তেল কিনতে হচ্ছে ৩৪ শতাংশ বেশি দাম দিয়ে। আর বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন কিনতে হচ্ছে ২৮ শতাংশ বাড়তি দামে। প্রায় দুই মাসে দুই দফা ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর পরও আন্তর্জাতিক বাজারের অস্থিরতার অজুহাতে আবারও সরকারের কাছে দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবনা দিয়েছে তেল ব্যবসায়ীরা। এছাড়া চালের দাম আগে থেকেই বাড়তি। দুদিন ধরে বাড়তি আটা ও ময়দার দাম। কেজিপ্রতি পণ্য দুটির দাম ১-২ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
রামপুরায় নিত্যপণ্যের কেনাকাটা করতে আসা একজন ক্রেতা শরিফুল ইসলাম বলেন, 'রোজায় দাম বাড়ানো একটা ঐতিহ্য হয়ে দাড়িয়েছে। তবে এবার আগেভাগেই সবকিছুর দাম বেড়েছে। এটা আমাদের মত সীমিত আয়ের মানুষের কষ্ট বাড়াচ্ছে'।