মানি চেঞ্জাররা নগদ সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা রাখতে পারবে
দেশের বাজারে নগদ বৈদেশিক মুদ্রা বেচা-কেনা করা মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানগুলো সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা হাতে রাখতে পারবে। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ পলিসি বিভাগ একটি সার্কুলার জারি করে এই নির্দেশনা দেয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, এর আগে মানি চেঞ্জারগুলো কী পরিমাণ নগদ টাকা রাখতে পারবে, তা স্পষ্ট ছিল না। গত এপ্রিলে খোলাবাজারে ডলারের দাম আন্তঃবাজারের তুলনায় ব্যপক বেড়ে যায়। তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে লাইসেন্সহীন প্রতিষ্ঠানগুলো সিলগালা করে দেয়।
অভিযান চালানোর সময় কিছু কিছু লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানে নগদ টাকা পাওয়া যায়। যার কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও মানি এক্সচেঞ্জারদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। কারণ মানি এক্সচেঞ্জাররা যেহেতু ডলার বেচা-কেনা করে, তাই তাদের কাছে নগদ টাকা অবশ্যই রাখতে হবে।
এ কারণে একটি কোম্পানি কত ডলার রাখতে পারবে, তা স্পষ্ট করা হয়েছে সার্কুলার।
ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রানজেকশন গাইডলাইন অনুসারে, প্রত্যেক ব্যবসা-দিবসের শেষে একটি মানি এক্সচেঞ্জারের হাতে থাকা সর্বোচ্চ নগদ বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ কিছুতেই ২৫ হাজার ডলার বা তার সমতুল্যের বেশি হতে পারবে না।
যদি তাদের নগদ ডলারের পরিমাণ এই সীমার বেশি হয়, তবে দিন শেষে প্রতিষ্ঠানের নিজ নিজ ব্যাংকের ফরেন কারেন্সি (এফসি) অ্যাকাউন্টে জমা রাখতে হবে। সেই অ্যাকাউন্টের ব্যালেন্স কখনোই ৫০ হাজার ডলার বা সমতুল্যের বেশি হতে পারবে না।
দেশে ডলারে কারসজির অভিযোগে গত ২৭ ও ২৮ সেপ্টেম্বর লাইসেন্সবিহীন অবৈধ সাত প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এর আগে ডলার কেনাবেচায় বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ৪২টি প্রতিষ্ঠানকে শোকজ করা হয়। আরও ৫টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সও স্থগিত করা হয়।
দেশের রিজার্ভের পরিমাণ কমতে থাকায় ব্যাংকগুলোতে তরল ডলার সংকট তৈরি হয়েছে। প্রবাসী আয় আসা কমতে থাকায় দেশে নগদ ডলারের সরবরাহও কমে যায়। এতে গত ১২ জুলাই প্রথমবারের মতো খোলাবাজারে ডলার বিক্রি হয় ১০০ টাকায়।
এরপর থেকেই ডলারের দাম অস্থিতিশীল হয়। ১০ আগস্ট ডলারের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ১২০ টাকায়। এরপর ডলারের কারসাজি রোধে খোলাবাজার ও এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোতে অভিযান চালায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার খোলাবাজারে ডলার বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকায়। এছাড়া আন্তঃব্যাংকে এদিন ডলার বিক্রি হয়েছে ১০৫.২৮ টাকায়।