সরকারি আমদানি ব্যয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার বিক্রি বাড়ছে
দেশের নিত্য প্রয়োজনীয় আমদানি ব্যয় মেটানোর সরকারি ব্যাংকগুলোর কাছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার বিক্রি বাড়ছে। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১০৭ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলেন, বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে অতিরিক্ত ডলার ব্যয় বেড়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি বাড়িয়েছে সরকার। এর ফলে ডলার বিক্রির পরিমাণ বাড়ছে।
বৃহস্পতিবার ডলার বিক্রি শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ দাড়িয়েছে ৩৪.২৫ বিলিয়ন ডলার।
এর আগে গত বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিক্রি করেছে ৬৮ মিলিয়ন ডলার, সোমবারে বিক্রি করেছে ১৩১ মিলিয়ন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাস (জুলাই-সেপ্টেম্বরে) আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ভোগ্যপণ্য, পেট্রোলিয়াম এর আমদানির এলসি ওপেনিং বেড়েছে।
ভোগ্যপণ্য, পেট্রোলিয়াম এ এলসি ওপেনিং বেড়েছে যথাক্রমে ৪.৫৬, ৫০.৯৯ শতাংশ।
জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসে, ক্যাপিটাল মেশিনারি, ইন্টারমিডিয়েট গুডস, পেট্রোলিয়াম এবং শিল্পের কাঁচামাল আমদানির জন্য এলসি খোলার পরিমাণ ৮.৫৭% কমেছে।
কিন্তু একই সময়ে, এলসি সেটেলমেন্ট ৩১.৫৬% বেড়ে ২২.৪ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।
এই বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে মোট আমদানি হয়েছে ১৯.৩৪ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ে ১৭.৩২ বিলিয়ন ডলার ছিল।
এদিকে চলতি অর্থবছরের চার মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ৫.৫৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। ২০২২ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে ডলারের বিক্রি রেকর্ড ৭.৬৭ বিলিয়ন ডলার ছিল।
মহামারীর মধ্যে কম আমদানি এবং উচ্চ রেমিট্যান্স প্রবাহের কারণে ২০২১ অর্থবছরে অন্যান্য ব্যাংক থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার কিনেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
চলতি অর্থবছরের শুরুতে রেমিট্যান্স প্রবাহ দ্রুত ক্ষয়িষ্ণু রিজার্ভকে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে। ২০২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বাংলাদেশ ৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিটেন্স পেয়েছে।
কিন্তু সেপ্টেম্বরে অভিন্ন ডলারের হারের কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে আসে। অক্টোবরে দেশ ১.৫২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে, যা গত আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
এদিকে চলমান ডলার সংকটের মধ্যে গত দুই মাস ধরে দেশের রপ্তানিও কমছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) মতে, অক্টোবরে দেশের রপ্তানি আয় ৪.৩৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭.৮৫ শতাংশ কম।
পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, "দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করতে হলে ডলার বিক্রি করতেই হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। তবে ডলারে ইনফ্লো এর তুলনায় আউটফ্লো বেশি হলে রিজার্ভের পরিমাণ কমবেই।"
"কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিত রেমিট্যান্স বাড়াতে কার্যকরি পদক্ষেপ নেওয়। হুন্ডি বন্ধ করার জন্য ওপেন মার্কেটের সঙ্গে ডলারের দাম সমন্বয় করলে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠানো বাড়িয়ে দিবে," যোগ করেন তিনি।