ইসলামী ব্যাংকের ঋণ ইস্যুর তদারকি করবে বাংলাদেশ ব্যাংক
ইসলামী ব্যাংকের ঋণ অনিয়মের 'মনিটরিং ও সুপারভিশন হবে' বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র জি এম আবুল কালাম আজাদ।
সম্প্রতি ভুয়া ঠিকানা ও কাগুজে কোম্পানি খুলে ইসলামী ব্যাংক থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা ঋণ তোলা হয়েছে।
কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন পাওয়ার পরের মাসেই ৯০০ কোটি টাকা করে ঋণ তুলেছে অন্তত ৩টি ভুয়া প্রতিষ্ঠান।
এসব ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ব্যাংকটিতে রাখা আমানত নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন গ্রাহকেরা।
জালিয়াতি করে ব্যাংকটির বিপুল পরিমাণে ঋণ দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কী ব্যবস্থা নেবে জানতে চাইলে আবুল কালাম আজাদ বলেন, "বাংলাদেশ ব্যাংক গাইডলাইন মোতাবেক সবকিছু মনিটরিং ও সুপারভিশন করে। সে মোতাবেকই সবকিছু হবে।"
আবার বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে টার্মস অব রেফারেন্স সুনির্দিষ্ট করে অনুমোদনের মাধ্যমে সেখানে পরিদর্শন হয়। এভাবেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক
সামনের কাজগুলো করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রোববার দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রেডিং ব্যবসা করার জন্য রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানির কাছে নিবন্ধিত হওয়ার মাত্র এক মাস পর অক্টোবরে ইসলামী ব্যাংক থেকে ৯০০ কোটি টাকা ঋণ পায় মেডিগ্রিন নামক এক কোম্পানি।
এর আগে এসএস স্ট্রেইট লাইন নামক আরেকটি কোম্পানি ৩ আগস্ট নিবন্ধিন পাওয়ার পর ২৩ আগস্ট ইসলামী ব্যাংকের ভিআইপি রোড শাখায় ঋণের জন্য আবেদন করে। ঋণের নথিতে দেখা যায়, কোনো রকম জামানত ছাড়াই ইসলামী ব্যাংক ১৮ সেপ্টেম্বর ৯০০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করে।
এছাড়াও, মার্টস বিজনেস নামক আরেকটি কোম্পানি ১১ সেপ্টেম্বর নিবন্ধিত হওয়ার পর ২৮ সেপ্টেম্বর ৯০০ কোটি টাকা ঋণের জন্য ইসলামী ব্যাংকের ফার্মগেট শাখায় আবেদন করে। ঋণের নথি অনুযায়ী, ব্যাংক জামানত না নিয়ে ২৪ অক্টোবর ঋণ অনুমোদন করে।
ইসলামী ব্যাংক থেকে ২৭০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া তিনটি কোম্পানির সবগুলোই ভুয়া অফিস ঠিকানা ব্যবহার করেছে।
এছাড়া একটি বাংলা দৈনিক পত্রিকায় নানা উপায়ে ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়ার খবর ছাপা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, আটটি প্রতিষ্ঠানের নামে চলতি বছরেই এ অর্থ নেওয়া হয়।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ তুলে নেওয়া হয় চলতি মাসের ১ থেকে ১৭ নভেম্বর। যার পরিমাণ ২৪৬০ কোটি টাকা।
একইভাবে বেসরকারি খাতের সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল) ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকেও ২৩২০ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে এ কোম্পানিগুলো।
ফলে এ তিন ব্যাংকের কাছে প্রতিষ্ঠানগুলোর সুদসহ দেনা বেড়ে হয়েছে প্রায় ৯৫০০ কোটি টাকা।