আরও ১০ টাকা বেড়ে পেঁয়াজের কেজি এখন ১৪০ টাকা
ভারত পেঁয়াজের নতুন রপ্তানিমূল্য ঘোষণার পর থেকেই দেশের বাজারে পেঁয়াজের দামে শুরু হয়েছে অস্থিরতা। ভারতের এই ঘোষণার চার দিনের মাথায় দেশি পেঁয়াজের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি ৯০ টাকা থেকে বেড়ে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা সোমবারও ছিল ১৩০ টাকা।
এছাড়া, সপ্তাহের ব্যবধানে ৭৫-৮০ টাকা থেকে প্রতিকেজি আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৫-১২০ টাকায়। ঢাকার কোথাও কোথাও দেশি পেঁয়াজ অবশ্য ১৫০ টাকা কেজি দরেও বিক্রি করতে দেখা গেছে।
ক্রেতাদের অভিযোগ, হুজুগেই অনেকটা পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। কারণ দোকানগুলোতে পেঁয়াজের অভাব নেই।
গত ২৮ অক্টোবর ভারত স্থানীয় বাজারের স্থিতিশীলতা ঠিক রাখতে পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করে দেয় ৮০০ ইউএস ডলার। রপ্তানি মূল্য নির্ধারণের পূর্বে ভারত থেকে আমদানিকারকরা পেঁয়াজ আনতো ২৫০-৩০০ ডলারের মধ্যে।
এই রপ্তানি মূল্য নির্ধারণের খবরে দেশে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা শুরু হয়। যদিও আমদানিকারকরাই বলছেন, নতুন দামের পেঁয়াজ এখনো দেশেই আসেনি।
ট্র্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর তথ্য বলছে, এক মাসের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৫০%, যেখানে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ৬৪.২৯% বেড়েছে। টিসিবির বিশ্লেষণে এক মাসের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরা হলেও পেঁয়াজের এই দামের পুরোটাই বেড়েছে গত ৪ দিনে।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি এম হারুন উর রশিদ জানান, নতুন দামের পেঁয়াজ এখনো দেশে আসেনি।
ঢাকার পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১৩৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা খুচরা দোকানি পর্যন্ত গেলে আরও হয়তো ১০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করা হবে।
কারওয়ানবাজারের পেঁয়াজের আড়তদার মো. মিন্টু টিবিএসকে বলেন, 'পাবনা ও ফরিদপুরের পাইকারি ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছে। যে কারণে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।'
একই বাজারের আড়তদার আশরাফুল আলম বলেন, 'পেঁয়াজের দাম কমার লক্ষণ নেই, দাম আরও বাড়তে পারে।'
জানা গেছে, ভারত মূলত দুই পদ্ধতিতে নিজেদের পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতি বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের দিকে রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করে দেয়। তাতেও যদি বাজার নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তবে রপ্তানিই বন্ধ করে দেয়।
২০১৯ সালের অক্টোবরের শেষদিকে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেয়। সে সময় দেশে পেঁয়াজের ঘাটতি না থাকলেও দাম ২২০ টাকায় উঠেছিল।
এবারে ভারত প্রাথমিক অবস্থায় রপ্তানি মূল্য ৮০০ ডলার নির্ধারণ করে দিয়েছে, যার প্রভাবে মাত্র চারদিনেই পেঁয়াজের দাম ১৫০ টাকা ছুঁইছুঁই করছে।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি এম হারুন উর রশিদ জানান, আমদানির পেঁয়াজ দেশে আসতে আরও এক-দু'দিন সময় লাগবে। এখনো ৫০ রুপিতে কেনা পেঁয়াজ দেশে ঢুকছে। নতুন দামের পেঁয়াজ ১০০ রুপি বা তারও একটু বেশি হতে পারে।