দেশে উৎপাদিত লৌহ ও লৌহজাত পণ্য রপ্তানিতে বড় সম্ভাবনা দেখছেন উদ্যোক্তারা
স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশে উৎপাদিত স্টিল বা লৌহ ও লৌহজাত পণ্য বিদেশেও রপ্তানির সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা। তাদের হিসেবে, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে স্টিল বা ইস্পাত পণ্য রপ্তানি করে বার্ষিক ১০ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ রয়েছে।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসএমএ) এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক সভায় এসব কথা উঠে আসে। সভায় সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম।
এ সময় তিনি বলেন, "ইস্পাত বা লৌহ ও লৌহজাত পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের কী চ্যালেঞ্জ রয়েছে সেটি খুঁজে বের করতে হবে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এবং করণীয় নির্ধারণে- এ খাতের উদ্যোক্তাদের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা তৈরি করতে হবে। বেসরকারি খাতের অভিভাবক হিসেবে এফবিসিসিআই তাদের সেসব প্রস্তাব নিয়ে নীতিনির্ধারকদের সাথে কথা বলবে।"
রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণে লৌহ ও লৌহজাত পণ্য বড় ভূমিকা রাখতে পারে বলেও জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।
সভায় অংশ নিয়ে কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিলের অ্যাডভাইজার জিল্লুর হোসেন জানান, যুক্তরাজ্য সহ কমনওয়েলথের সদস্য দেশসমূহে বাংলাদেশের ইস্পাত সহ অন্যান্য রপ্তানি পণ্যের বড় সম্ভাবনা রয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সরকারকেও উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান তার।
বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের লৌহ ও লৌহজাত পণ্য তৈরি হচ্ছে, প্রযুক্তি উন্নত- এমন দাবি বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের। তিনি বলেন, স্থানীয় কারখানাগুলোর উৎপাদন সক্ষমতার তুলনায় দেশের ইস্পাতের চাহিদা প্রায় ৫০ শতাংশ কম। উদ্বৃত্ত সক্ষমতার (ওভার ক্যাপাসিটি) ইস্পাত যদি আফ্রিকাসহ কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোতে রপ্তানি করা যায় তাহলে এই খাত থেকে প্রতি বছর ১০ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।
এ সময়, লৌহ ও লৌহজাত পণ্যকে রপ্তানিমুখী শিল্পে রূপান্তরের জন্য সরকারের বিশেষ পৃষ্ঠপোষকতা চান ব্যবসায়ীরা। এরমধ্যে রয়েছে, রপ্তানিমুখী শিল্প হিসেবে লৌহ ও লৌহজাত পণ্যের কাঁচামাল আমদানিতে বিশেষ শুল্ক সুবিধা, আংশিক বন্ড সুবিধা, নগদ সহায়তাসহ রপ্তানির অন্যান্য সহযোগিতা, রপ্তানিমুখী ইস্পাত কারখানায় জ্বালানি মূল্যে সুযোগ-সুবিধা, সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নতকরণ সহ অন্যান্য নীতি সহায়তা।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিলের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. সুমন চৌধুরী, এফবিসিসিআই'র পরিচালক এবং বাংলাদেশ আয়রন অ্যান্ড স্টিল ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মোঃ আমির হোসেন নুরানী, মেট্রোসেম ইস্পাত লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ শহীদুল্লাহ, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিচালক সুনীল কুমার অধিকারীসহ ইস্পাত শিল্পের ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা।