অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি চট্টগ্রাম কাস্টমসের, বছরওয়ারি প্রবৃদ্ধি ৯ শতাংশ
ডলারের দাম বাড়া ও বাণিজ্য ব্যাহত হওয়ায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের। এই ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৫ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা। তবে বছরওয়ারি হিসাবে, এ সময়ে রাজস্ব আদায়ে প্রায় দুই অংকের প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।
দেশের সর্ববৃহৎ চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে ৩৮ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৩৩ হাজার ১৫৫.৩৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ, লক্ষ্যমাত্রার অনুযায়ী রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ ১৪.১৭ শতাংশ।
অবশ্য, লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আয়ে ঘাটতি থাকলেও– বছরওয়ারি হিসাবে এই সময়ে ৯.৮৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৩০ হাজার ১৭১.১৩ কোটি টাকা। আর লক্ষ্যমাত্রা ছিল, ৩৬ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। অর্থাৎ, ঘাটতি হয়েছিল ১৭.৮৩ শতাংশ বা ৬ হাজার ৩৮৮.৮৭ কোটি টাকা।
সে তুলনায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে– আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে রাজস্ব আদায় ২ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা বেশি হয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের মুখপাত্র এবং ডেপুটি কমিশনার ব্যারিস্টার মো. বদরুজ্জামান মুনশি টিবিএসকে বলেন, লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব ঘাটতি থাকলেও– সার্বিক রাজস্ব আয়ে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি রয়েছে। চোরাচালান, জালিয়াতি এবং শুল্ক ফাঁকি রোধে নানামুখী উদ্যোগের কারণে রাজস্ব আদায় বেড়েছে।
রাজস্ব কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমদানির পরিমাণ কম হয়েছে। ডলারের বিনিময় দর আরও শক্তিশালী হওয়ার ফলে আমদানি ব্যয়ও বেড়েছে, যা আমদানি কমাতে আরও চাপ তৈরি করে। তবে বাড়তি আমদানি ব্যয়ের কারণে শুল্ক আয় বেড়েছে।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিসিসিআই) পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ টিবিএসকে বলেন, "ডলার ক্রাইসিসের কারণে আমদানির ভলিউম কম। অন্যদিকে ডলারের দাম বাড়ায়– আমদানিকারকদের বাড়তি দাম পরিশোধ করতে হয়েছে। এর প্রভাবে আমদানি কমলেও– রাজস্ব আয়ে বড় ধরনের বিপর্যয় আসেনি।'
মাস হিসেবে সবচেয়ে বেশি ১৬.৬৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে সদ্যসমাপ্ত ডিসেম্বরে। ডিসেম্বরে রাজস্ব আদায় হয় ৫ হাজার ১১৮.৩৮ কোটি টাকা। সে তুলনায়, গত অর্থবছরের ডিসেম্বরে আয় হয়েছিল ৪ হাজার ৩৮৮.০৫ কোটি টাকা।