দেশে একদিনে টাকার সর্বোচ্চ অবমূল্যায়ন, ডলারের দাম বাড়ল ৭ টাকা
'ক্রলিং পেগ' বিনিময় হার চালুর মাধ্যমে ডলারের দাম ১১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১৭ টাকা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে দেশের ব্যাংকগুলো ১১৭ টাকাকে মাঝামাঝি মূল্য ধরে ডলার কেনাবেচা করতে পারবে।
আজ বুধবার (৮ মে) অনুষ্ঠিত মনিটারি পলিসি কমিটির সভায় বাংলাদেশ ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নেয়।
এ ছাড়া, স্মার্ট লেন্ডিং রেট প্রক্রিয়াও বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মনিটারি পলিসি কমিটি।
সভার পরে জারি করা এক সার্কুলারে জানানো হয়েছে, এখন থেকে ব্যাংকগুলো চাহিদা-সরবরাহের ওপর ভিত্তি করে লেন্ডিং রেট বা ঋণের সুদহার নির্ধারণ করতে পারবে।
এই পদ্ধতিতে একটি মুদ্রার বিনিময় হারকে একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে ওঠানামা করার অনুমতি দেওয়া হয়। এতে নির্দিষ্ট বিনিময় হার ব্যবস্থার কিছু বৈশিষ্ট্যের পাশাপাশি ভাসমান বিনিময় হার ব্যবস্থার কিছু সুবিধাও থাকে। এক্ষেত্রে মুদ্রার দরের একটি সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন সীমা নির্ধারণ করা থাকে। ফলে একবারেই খুব বেশি বাড়তে বা আবার কমতে পারবে না।
এর আগে গত ৫ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক সুদহারকে বাজার-ভিত্তিক করবে এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার সংশোধনে ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালু করা হবে।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একটি সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি প্রণয়নে এবং সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ফেরাতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকারদের সাথে কাজ করছে।
বিশ্বব্যাংক গত ২ এপ্রিল জানিয়েছিল, ক্রলিং পেগকে একটি 'মার্কেট-ক্লিয়ারিং' বিনিময় হার পদ্ধতি হতে হবে, যা আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক বিনিময় হারের মধ্যেকার ব্যবধান কমাবে।
দাতাসংস্থাটি তাদের সাম্প্রতিকতম বাংলাদেশ উন্নয়ন আপডেট প্রতিবেদনে আরো বলেছে, "এটি আনুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রবাহ আকৃষ্ট করে বৈদেশিক মুদ্রার বাফার পুনর্গঠনে সহায়তা করবে। এবং আর্থিক হিসাবের ঘাটতি কমিয়ে বাণিজ্য ঋণ ও অন্যান্য ধরনের বৈদেশিক অর্থায়ন বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।"
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলও মার্কিন ডলারের বাজার-ভিত্তিক বিনিময় হার চালুর পক্ষে।
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্যাকেজ অনুমোদনের সময় বাংলাদেশকে বেশকিছু শর্ত দিয় আইএমএফ। এরমধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনর্গঠনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়া অন্যান্য প্রায় সব শর্তই পূরণ করে ঋণের দুটি কিস্তিও পেয়েছে বাংলাদেশ।