রেমিট্যান্সের ডলারের দর ১১৮ টাকার বেশি না দেওয়ার নির্দেশ
রেমিট্যান্সের ডলার কেনার ক্ষেত্রে ১১৮ টাকার বেশি দর না দেওয়ার জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) ১৫টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে এক সভায় এ নির্দেশনা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ডেপুটি গভর্নর।
সভায় উপস্থিত বেশ কয়েকটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সভায় রেমিট্যান্সের ডলার বেশি দামে কেনা নিয়ে ব্যাংকগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ১১৮ টাকার বেশি দামে কোনো ব্যাংক রেমিট্যান্সের ডলার কিনলে তাদেরকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।
ব্যাংকাররা জানান, ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্সের ডলার সংগ্রহ করছে ১১৭.৮০ টাকা থেকে ১১৮.৩০ টাকা দরে। ইউরোপের বাজার থেকে যেসব রেমিট্যান্স আসে, সেগুলো কিছুটা কম দামে সংগ্রহ করা গেলেও দুবাই ও কাতারের বাজার থেকে আসা রেমিট্যান্স কিনতে ব্যাংকগুলোকে কিছুটা বেশি দাম দিতে হয়।
সভায় উপস্থিত একটি ব্যাংকের এমডি বলেছেন, এখন ডলারের বাজার আগের তুলনায় কিছুটা স্থিতিশীল হয়ে এসেছে। অন্য বছরগুলোতে হজের সময়ে ডলারের দাম কিছু বাড়ে, তবে এ বছর বাড়েনি। ফলে ব্যাংকগুলো ১১৮ টাকা দরে রেমিট্যান্সের ডলার সংগ্রহ করলে খুব বেশি সমস্যায় পড়ার কথা নয়।
ব্যাংকগুলোকে দেশি-বিদেশি বিল সময়মতো পরিশোধের নির্দেশ
আরেক ব্যাংকের এমডি জানিয়েছেন, সভায় ব্যাংকগুলোকে দেশি-বিদেশি বিল সময়মতো পরিশোধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে অনেক ব্যাংকই সময়মতো সেগুলো পেমেন্ট করছে না।
"বলা হয়েছে, আমরা যেন কোনো ফরেন বিল (বিদেশি বিল) ফেলে না রাখি। যেসব বিল আগামী ৩০ জুনের মধ্যে ম্যাচিউর হবে, সেগুলোকে পরবর্তী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ক্লিয়ার করার জন্যও বলা হয়েছে," বলেন তিনি।
জানা যায়, এ সময় বেশ কয়েকজন এমডি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বলেছেন— অনেকসময় যেসব রপ্তানির বিপরীতে লোকাল বিল তৈরি হয়, সেগুলো সময়মতো রপ্তানি হয় না। আবার অনেকসময় রপ্তানি বাতিল হয়ে যায়। অনুমোদিত বিল সময়মতো পরিশোধ না হওয়ার পেছনে এটি একটি বড় কারণ।
এ সময়, রপ্তানি বিল আসতে নিয়ম অনুযায়ী ১২০ দিনের বেশি লাগলে, তা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানানোর জন্যেও বলা হয়েছে ব্যাংকগুলোকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক টিবিএসকে বলেন, "বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) আমাদের কাছে অভিযোগ করেছিল যে, কিছু ব্যাংক এক্সেপটেড বিল ম্যাচুরিটির তারিখে পরিশোধ করছে না। এসব কারণে তাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তাই সভা করে ব্যাংকগুলোকে সময়মতো পেমেন্ট ক্লিয়ার করার জন্য বলা হয়েছে।"
তিনি বলেন, "এছাড়া দেশের ব্যাংকগুলোতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিনিয়োগ বাড়াতে অফশোর ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট খোলা সহজ করার জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ব্যাংকগুলোকে।"
এদিকে, রেমিট্যান্সের ডলারের দাম নিয়ে নতুন কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।