এমপিদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুবিধা বহাল থাকতে পারে
আসন্ন ২০২৪-২৫ সালের বাজেটে সংসদ সদস্যদের আমদানি করা গাড়ির ওপর শুল্ক আরোপের আহ্বান জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবু হাসান মাহমুদ আলী। তবে শেষ পর্যন্ত তা কার্যকর না হতে পারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে।
কেননা সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানিতে বিদ্যমান আদেশ সংশোধনের কোনো উদ্যোগ এখন পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। ফলে আগের মতো এবারও এমপিরা শুল্কমুক্ত কর সুবিধা ভোগ করতে পারেন।
এছাড়া কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, কর অবকাশ সুবিধার পাশাপাশি কিছু শর্ত সাপেক্ষে ইকোনমিক জোন ও হাই-টেক পার্কের বিনিয়োগকারীদের ক্যাপিটাল মেশিনারি আমদানিতে আগের মতই জিরো ডিউটি সুবিধা বহাল থাকতে পারে।
এছাড়াও শেয়ারবাজারে ক্যাপিটাল গেইনের উপর নতুন করে আরোপ করা ট্যাক্স অব্যাহত থাকতে পারে। এদিকে বহু সমালোচনা সত্ত্বেও ১৫ শতাংশ ট্যাক্স পরিশোধ করে কালো টাকা সাদা করার সুবিধা অব্যাহত থাকতে পারে।
এনবিআর সূত্র জানায়, ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনিম। এই সময় প্রধানমন্ত্রী কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর একই দিন রাজধানীর আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবনে বাজেট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
ইকোনমিক জোন ও হাইটেক পার্কের এসব পরিবর্তনসহ আগামী ২৯ জুন ফাইন্যান্স বিল পাশ হতে পারে।
এনবিআরের এক সিনিয়র কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করার শর্তে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "ইকোনমিক জোন ও হাইটেক পার্কের বড় দুটি সুবিধা (ট্যাক্স হলিডে ও ক্যাপিটাল মেশিনারি ইমপোর্টে জিরো ডিউটি) সুবিধা বহাল থাকতে পারে।"
অপর একজন কর্মকর্তা বলেন, "এমপিদের ভেহিক্যালে ট্যাক্স ইমপোজের প্রস্তাব এবার থাকার সম্ভাবনা কম। এ বিষয়ে পরবর্তীতে আইনি দিকগুলো যাচাই করা হবে। এর বাইরে বাজেট প্রস্তাবের আরো কিছু জায়গায় ছোটখাট পরিবর্তন আসতে পারে।"
গত ৬ জুন বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী বলেন, "বিদেশ থেকে গাড়ি আমদানি করা হলে এর ওপর আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ, মূসক ১৫ শতাংশ, আরডি তিন শতাংশ, আগাম কর পাঁচ শতাংশ এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে ৪০০ থেকে ৫০০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ আছে। এ অবস্থায় সংসদ সদস্যদের শুল্ক-কর অব্যাহতির সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার ক্ষেত্রে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপনের অংশ হিসেবে কর অব্যাহতি সুবিধা কিছুটা কমিয়ে আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করে অন্যান্য সব শুল্ক-কর অব্যাহতি সুবিধা বহাল রাখা যেতে পারে।"
তবে এরপর একাধিক সংসদ সদস্য এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে সংসদে বক্তব্য দিয়েছেন। এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, শেষ পর্যন্ত অর্থমন্ত্রীর এই প্রস্তাব এই বাজেটে আলোর মুখ দেখছে না।
বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের গাড়িকে বিলাসবহুল পণ্য হিসেবে গণ্য করে এর উপর সিসি ভেদে সর্বোচ্চ ৫০০ শতাংশ পর্যন্ত সাপ্লিমেন্টারি ডিউটি আরোপ করা হয়। অন্যান্য ডিউটি ও ট্যাক্সসহ এটি কোন কোন ক্ষেত্রে প্রায় ৮০০ শতাংশ পর্যন্ত হয়। যা সাধারণ গাড়ি ব্যবহারকারীদের পরিশোধ করতে হয়। অন্যদিকে সংসদ সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে এটি আমদানিতে কোন ধরনের শুল্ক-কর দিতে হচ্ছে না।