রেমিট্যান্সের ডলার সর্বোচ্চ ১২৩ টাকা দরে কিনতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ
সর্বোচ্চ ১২৩ টাকা দরে রেমিট্যান্সের ডলার কেনার নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আজ মঙ্গলবার ১৩টি ব্যাংকের সঙ্গে এক সভায় এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এর আগে গতকাল সোমবার অধিকাংশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ফোন করে একই দরে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করতে নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের থেকে ফোন পাওয়ার পর ডলারের দাম একদিনের ব্যবধানে ৩ থেকে ৪ টাকা কমে গেছে। মঙ্গলবার অধিকাংশ ব্যাংকই ১২৩ টাকা দরে রেমিট্যান্সের ডলার সংগ্রহ করেছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার পরও কয়েকটি ব্যাংক ১২৪ টাকা পর্যন্ত রেট অফার করছে বলে অভিযোগ করেছেন বেশকিছু ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
প্রায় চার মাস ডলারের বাজার স্থিতিশীল থাকার পর চলতি ডিসেম্বরের শুরু থেকে সেখানে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। এসবের মধ্যেই দুই কার্যদিবসে ডলার-টাকার বিনিময় হার দুইবার ইতিহাসের সর্বোচ্চ দরের নতুন রেকর্ড তৈরি করেছিল।
গত বৃহষ্পতিবার ব্যাংকগুলোকে রেমিট্যান্সের ডলার কিনতে খরচ করতে হয়েছে সর্বোচ্চ ১২৭ টাকা ৭০ পয়সা।
এর জের ধরে ওইদিন সন্ধ্যায় বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজ থেকে অস্বাভাবিক দামে রেমিট্যান্স কেনায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কেন নেওয়া হবে না, তা ব্যাখ্যা করতে ১৩ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছিল। গতকাল মঙ্গলবারের সভায় এসব ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদেরই ডাকা হয়েছিল।
সভায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রতিনিধিরা ছাড়াও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুই ডেপুটি গভর্নরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।
সেখানে ব্যাংকগুলোর কাছে বেশি দরে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করার কারণ জানতে চাওয়া হয়। তখন ব্যাংকগুলো ওভারডিউ পেমেন্টের চাপ থাকার বিষয়টিকে কারণ হিসেবে তুলে ধরে। এছাড়া ব্যাংকগুলো জানায়, কম দর দিয়ে রেমিট্যান্সের ডলার সংগ্রহ করতে না পারায় এবং পেমেন্ট ডেডলাইন চলে আসায় তারা দর বাড়িয়ে রেমিট্যান্সের ডলার কিনেছে।
সভায় উপস্থিত একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী কর্মকর্তা বলেন, 'এগ্রেগেটর মানি এক্সচেঞ্জগুলোর কারণে আমরা বেশি রেট দিয়ে রেমিট্যান্সের ডলার কিনতে বাধ্য হচ্ছি। বিষয়টি আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানিয়েছি। তারা আমাদের বলেছেন, এগ্রিগেটরদের নিয়েও তারা চিন্তা-ভাবনা করছেন। একইসঙ্গে আমরা ডলার মার্কেট নিয়ে ব্যাংকারদের মধ্যে তথ্যের অভাবের বিষয়টি তুলে ধরেছি। সঠিক তথ্য না পাওয়ায় অনেকসময় দাম বেড়ে যায়। সেটিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছে।'
গত সপ্তাহজুড়ে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডে প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদনে, ডলারের বাজারে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি উঠে আসে। এর জের ধরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর গত বৃহষ্পতিবার টিবিএস এর কাছে করা এক মন্তব্যে বলেছিলেন, "ব্যাংক খাতের কিছু ইমম্যাচুর ট্রেডার বাজারকে অস্থিতিশীল করে ফেলেছে। ডলার মার্কেট ওপেন করে দেওয়ার সুযোগের অপব্যবহার করছে তারা। বাজারকে যারা অস্থিতিশীল করেছে তাদের অবশ্যই শাস্তির দরকার আছে।"