বিনিময়: রাষ্ট্রীয় অর্থায়নের এক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মকে যেভাবে ব্যক্তিগত লাভের যন্ত্রে পরিণত করা হয়েছিল
![](https://www.tbsnews.net/bangla/sites/default/files/styles/infograph/public/images/2025/02/12/p1_lead_binimoy_fiasco_1.png)
অর্থ বিনিয়োগ করে, একটি ব্যবসাকে গড়ে তুলবেন— এরপর ৫০-৫০ রাজস্ব ভাগাভাগির মডেলে সেটি হস্তান্তর করবেন। এই ধরনের চুক্তি তখনই যৌক্তিক হয়, যখন ব্যবসা পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় হয় অনেক বেশি।
অথচ বিনিময়- এর ক্ষেত্রে তা কখনোই ছিল না, সাশ্রয়ী মূল্যে ক্যাশলেস বা নগদ অর্থ লেনদেনহীন বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনার কথা বলে ইন্টার-অপারেবল এই ডিজিটাল লেনদেনের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছিল।
কিন্তু, বেসরকারি সত্ত্বার সুবিধার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কীভাবে জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলী দিয়েছে— তারই এক জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠে ৬৫ কোটি টাকার রাষ্ট্রায়ত্ত অর্থায়ন পাওয়া এই প্ল্যাটফর্ম। যেটি চালু হয় ২০২২ সালের নভেম্বরে।
'বিনিময়' পরিচালনার জন্য ২০২৪ সালের ২৮ জানুয়ারি জারিফ হামিদের মালিকানাধীন ভেলওয়্যার লিমিটেড এবং যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান প্রাইম হোল্ডিং এলএলসির সঙ্গে একটি একতরফা চুক্তি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। জারিফ সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের ছেলে।
টিবিএসের দেখা ওই চুক্তিতে বলা হয়েছে, প্ল্যাটফর্মটির ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের সব ব্যয় বহন করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অপরদিকে, লেনদেন প্রতি ৫০ শতাংশ রাজস্ব পাবে ভেলওয়্যার। যার বদলে, ভেলওয়্যারকে সার্বক্ষণিক (২৪ ঘণ্টার রোস্টারে) মাত্র তিনজন কর্মীকে কাজে রাখতে হবে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যানেক্স ভবনে অবস্থিত বিনিময় এর মেইনটেইন্যান্স কক্ষে।
চুক্তিতে এটি বাতিল করার ধারা ছিল না, ফলে কার্যত একতরফা চুক্তিতে আবদ্ধ করা হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। এর চেয়েও বাজে দিকটি হলো— বিনিময় অ্যাপ এর ত্রুটি, নিরাপত্তা লঙ্ঘন বা সিস্টেমের ব্যর্থতার জন্য ভেলওয়্যারকে কোনো দায় বহন করতে হবে না।
এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক, আইসিটি বিভাগ ও ফিনটেক বিশেষজ্ঞরা অভিযোগ করছেন যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ও তার সহযোগীদের চাপে নিজস্ব ইন্টার-অপারেবল প্ল্যাটফর্ম বাদ দিয়ে—- আইসিটি বিভাগের সমর্থিত আরও ব্যয়বহুল প্ল্যাটফর্মটি গ্রহণ করে। জয়ের এই এজেন্ডা বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তাঁদের অভিযোগ, কোনো ধরনের যৌক্তিক অবদান না রেখে – বিনিময় অ্যাপ পরিচালনা থেকে পাওয়া অর্ধেক রাজস্ব দেশের বাইরে পাচার করতে – এই গোষ্ঠীটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর অত্যন্ত প্রশ্নবিদ্ধ একটি চুক্তি চাপিয়ে দেয়।
দেশে মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতাদের দৈনিক লেনদেন প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা, একটি হিসাব অনুযায়ী, এর ২০ শতাংশও যদি বিনিময় অ্যাপের মাধ্যমে যায়— তাহলেই বছরে কোম্পানিটি কয়েকশ কোটি টাকার মুনাফা করেছে।
ভেলওয়্যারের অব্যাহত আয় নিশ্চিত করতে, তৎকালীন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংক— প্রতিটি ইন্টার-অপারেবল লেনদেনের ওপর প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ট্যারিফ নির্ধারণ করে; যা বৈশ্বিকভাবে এ ধরনের লেনদেনের ক্ষেত্রে যা হয় তার পরিপন্থী। কারণ, এক্ষেত্রে সরকারগুলো তাদের দেশের ফিনটেকের প্রবৃদ্ধি গতিশীল করতে লেনদেনে খরচ কমানোর চেষ্টা করে।
ডিজিটাল লেনদেনকে সহজলভ্য করতে অন্যান্য দেশ এখাত থেকে রাজস্ব আয়কেও যেখানে বিসর্জন দিয়ে— আর্থিক প্রযুক্তি বা ফিনটেকের বিকাশকে তুঙ্গে নিয়ে গেছে, সেখানে বাংলাদেশে ঠিক এর উল্টোটা করা হয়। অর্থাৎ, কৃত্রিম মূল্যের বোঝা চাপিয়ে মুষ্টিমেয় কিছু ব্যক্তিকে সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, কেন্দ্রীয় ব্যাংকেরই ব্যয়ে ভেলওয়্যারকে রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে 'উপদেশ' দেওয়ার কর্তৃত্ব দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান টিবিএসকে বলেন, 'এটি ছিল একটি অন্যায্য চুক্তি। ওই সময়ের সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সবকিছুর নির্দেশনা আসায়— এবিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্টের স্বাক্ষরকারী কর্মকর্তাদেরও এবিষয়ে সেভাবে কিছু বলার উপায় ছিল না।'
আরিফ বলেন, বিনিময় অ্যাপ তৈরি করতে আইসিটি বিভাগ বা এটি পরিচালনার জন্য ভেলওয়্যার লিমিটেডের সম্পৃক্ততার কোনো প্রয়োজন ছিল না কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। পুরো প্রক্রিয়াটি ছিল কৃত্রিমভাবে তৈরি করা একটা চাহিদা, যার উদ্দেশ্যই ছিল সরকারি তহবিল— কিছু ব্যক্তির পকেটে ঢোকানো।
জাতীয় আন্তঃব্যবহারযোগ্যতার (ইন্টার–অপারেবলটি) মূল অ্যামব্রেলা হিসেবে কাজ করবে এটি ছিল এই প্ল্যাটফর্ম তৈরির উদ্দেশ্য। অর্থাৎ, এর অধীনে ব্যাংকিং, মুঠোফোনে আর্থিক সেবা (এমএফএস) ও ডিজিটাল লেনদেন প্রক্রিয়াকারীদের মধ্যে অবাধ ও স্বল্প খরচে আন্তঃলেনদেনের সুবিধা দেওয়া। যেখানে এমএফএস প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে প্রতি ১,০০০ টাকা লেনদেনে চার্জ পাঁচ টাকা। অন্যদিকে, ব্যাংক হিসাব থেকে এমএফএস হিসাবে টাকা স্থানান্তরের বেলায় চার্জ ধরা হয় ১০ টাকা।
'জয়ের শেল কোম্পানি?'
যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর (আরজেএসসি)-র নথি অনুসারে, ভেলওয়্যারের মালিকানা হচ্ছে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের ছেলে জারিফ হামিদ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান প্রাইম হোল্ডিংস এলএলসি'র, যার প্রতিনিধিত্ব করেন সামিট গ্রুপের মো. ফরিদ খান।
আইসিটি বিভাগ যখন ইন্টার–অপারেবলটিতে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছিল, তখন ২০১৭ সালের অক্টোবরে জারিফ হামিদ ও তার মা সীমা হামিদ মিলে ফিনটেক সলিউশন্স লিমিটেড নামের একটি কোম্পানি গঠন করেন। যেটির পরিশোধিত মূলধন ছিল ১০ লাখ টাকা।
আইসিটি বিভাগের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ইনোভেশন অ্যান্ড এন্টারপ্রেনারশিপ ডেভেলপমেন্ট অ্যাকাডেমি (আইডিইএ) প্রকল্পের অর্থায়নে— ইন্টার-অপারেবল ডিজিটাল ট্র্যানজেকশন প্ল্যাটফর্ম বা আইডিটিপি প্ল্যাটফর্ম নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ফিনটেক সলিউশনস এই কাজের সর্বনিম্ন দরদাতা হওয়ার জন্য মাইক্রোসফট বাংলাদেশের সহযোগিতায়— স্থানীয় সফটওয়্যার ফার্ম ওরিয়ন ইনফরম্যাটিক্স এবং হংকং-ভিত্তিক সাইন ভেঞ্চারস-এর নেতৃত্বে যৌথ উদ্যোগে যায়।
ওরিয়ন ইনফরম্যাটিক্স এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইকবাল হাবিব টিবিএসকে জানান, আইসিটি ডিভিশনের চাহিদা অনুযায়ী তারা শুধু প্ল্যাটফর্মটি তৈরির কাজ করেছেন। পরে কপিরাইটসহ এটিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে দিয়ে দেওয়া হয়। 'পরে কোনো চুক্তির বিষয়ে আমাদের জানা নেই'- বলেন তিনি।
এদিকে জারিফ হামিদের কাছে নিজের শেয়ার হস্তান্তর করে ফিনটেক সলিউশনস থেকে সরে দাঁড়ান সীমা হামিদ, এরপর নতুন করে জারি করা ৩ হাজার শেয়ার নিয়ে পরিচালনা পর্ষদের একটি আসনসহ ২০২০ সালের জুলাইয়ে অংশীদারত্বে আসে ভার্জিনিয়া-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি।
আকর্ষণীয় ওই রাজস্ব ভাগাভাগির মডেলে যাওয়ার আগে ফিনটেক সলিউশনস নাম পরিবর্তন করে ভেলওয়্যার লিমিটেড হয়।
সম্প্রতি এক বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, মোবাইলে আর্থিক সেবার (এমএফএস) আন্তঃলেনদেন পরিচালনার জন্য 'বিনিময়' নামে যে প্ল্যাটফর্ম করা হয়েছিল, সেটি ছিল সজীব ওয়াজেদ 'জয়ের শেল কোম্পানি'।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খানের মতে, বাংলাদেশ ব্যাংক এখনও এই অপারেটিং অংশীদারের কাছ থেকে কোনও পরিষেবা পায়নি এবং চুক্তিটি বাতিল করতে চাইছে।
এবিষয়ে মন্তব্যের জন্য নসরুল হামিদ ও জারিফ হামিদকে ফোন করা হলেও— তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
উদ্যোগের পেছনে ছিল 'অসাধু মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্য'
নীতিপ্রণেতা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, জন পরিষেবার ছদ্মবেশে কীভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার হতে পারে— বিনিময় কাণ্ড তারই জ্বলন্ত উদাহরণ, যেখানে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার মূল্য দিয়েছে সাধারণ মানুষ।
আইসিটি বিভাগের আইসিটি নীতি উপদেষ্টা ফয়েজ আহমেদ তাইয়েব টিবিএসকে বলেন, সব ধরনের ইলেক্ট্রনিক লেনদেন ও পেমেন্ট সিস্টেমের মধ্যে আন্তঃব্যবহারযোগ্যতা বাংলাদেশের জন্য একটি তীব্র চাহিদা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, এটি সত্যিকারের নগদ অর্থহীন লেনদেনের বিপ্লবের শুরুটা করে দিতে পারে, যেমনটা আমাদের সাথে তুলনীয় অনেক দেশেই দেখা যায়।
'কিন্তু, জয়-পলক- হামিদ গংয়ের অসাধু মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যের শিকার হয়ে বাংলাদেশে এই কনসেপ্ট ফেইল করেছে'- তিনি যোগ করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগের মতে, বিনিময় কেন ব্যবহার করতে হবে– তার পেছনে যথেষ্ট যুক্তি দেখাতে না পারায় – তফসিলভুক্ত ৬২টি ব্যাংকের মধ্যে মাত্র এক ডজন, ১৩টি এমএফএসের মধ্যে মাত্র ৩টি এবং ১৮টি ডিজিটাল লেনদেন প্রক্রিয়াকারীর মধ্যে মাত্র একটি বিনিময়'কে গ্রহণ করে।
এবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ গ্রাহকের বিনিময় একাউন্ট ছিল, অন্যদিকে বিকাশের প্রায় ৮ কোটি এমএফএস গ্রাহকের দৈনিক গড়ে দেড় কোটি লেনদেন হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বিনিময়ের দৈনিক ১,৪০৯টি লেনদেনের মাধ্যমে ৪০ লাখ টাকার-ও লেনদেন হয় না। অথচ দেশের এমএফএসগুলোর দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, 'এই ধরনের মাল্টিপল সাইলো-ভিত্তিক ত্রুটিপূর্ণ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আসার এখনই উপযুক্ত সময়। একই পেমেন্ট সুইচ ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ (এনপিএসবি) এর সঙ্গে যুক্ত দুটি এমএফএস কোম্পানি— এখনও আন্তঃলেনদেন যোগ্য নয়, যা মেনে নেওয়া যায় না।'
'তার চেয়ে ভালো কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার নিজের এনপিএসবি প্ল্যাটফর্মকে সম্প্রসারিত ও শক্তিশালী করে সম্পূর্ণভাবে আন্তঃবিনিময় যোগ করে গড়ে তুলুক। এনপিএসবিকে সর্বজনীন পেমেন্ট গেটওয়ে এগ্রেগেটর হিসেবে গড়ে উঠতে হবে, যেখানে বাজার, বাণিজ্য, ব্যাংক, আর্থিক ব্যবস্থা, ফিনটেক, এমএফএস, পেমেন্ট সার্ভিস অপারেটর সবাই একে-অন্যের সঙ্গে একটি এন্ড-টু-এন্ড ইকোসিস্টেমের অংশ হিসেবে যুক্ত থাকবে। পরে এটিকে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের কাজেও যুক্ত করা যেতে পারে। নাহলে জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলী দিয়ে অন্য কেউ জোর খাটিয়ে বিনিময় এর মতো প্রকল্প গ্রহণ করবে'- যোগ করেন তিনি।
বিনিময়'কে সম্প্রসারণের জন্য সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক ২৭৮ কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্পের পরিকল্পনা করছিলেন, এর আরেক উদ্দেশ্য ছিল ভেলওয়্যারকে অর্ধেক রাজস্ব পাইয়ে দেওয়া। স্থগিত উন্নয়ন প্রকল্প নথি দেখে যা জেনেছে টিবিএস।
পাঠাও এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম আহমেদ বলেন, 'পতিত সরকারের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার কারণে প্রযুক্তিগতভাবে অগ্রসর এনপিএসবি'র কার্যক্রম বড় পরিসরে করা হয়নি। 'বিনিময়' শুধু বিগত সরকারের ফায়দা লোটার উদ্দেশ্যে গঠিত ছিল না, এটা ব্যবহারকারী-বান্ধবও ছিল না। তাছাড়া, আন্তঃবিনিময়ের প্রাইসিং স্ট্রাকচারও দুর্বলভাবে করা হয়েছিল। যেকারণে গ্রাহক বা আর্থিক সেবা দাতা— কেউই প্ল্যাটফর্মটির ব্যবহারে আগ্রহী হয়নি।
প্রযুক্তিখাতের এই সিইও'র মতে, 'ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থাকে রপ্ত করার জন্য আন্তঃবিনিময় যোগ্য আর্থিক ব্যবস্থা অত্যাবশ্যক। যার মাধ্যমে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে যাবে ডিজিটাল আর্থিক সেবা। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিৎ, এনপিএসবি'কে বড় পরিসরে চালুর জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া। একইসঙ্গে যদি আন্তঃবিনিময়ের চার্জ যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করা হয়—তাহলে আর্থিক সেবাদাতাদের সবাই এটি গ্রহণ করতেও উৎসাহিত হবে।'
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস-এর প্রাক্তন সভাপতি ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ফাহিম মাশরুর বলেন, আইসিটি বিভাগ বা ভেলওয়্যারের মতো রেভিনিউ শেয়ারিং পরিচালন অংশীদারদের কোনও সমর্থন ছাড়াই—- বাংলাদেশ ব্যাংক সফলভাবে স্বয়ংক্রিয় চেক ক্লিয়ারিং, রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট এবং এনপিএসবি-সহ বেশ কয়েকটি স্বয়ংক্রিয় লেনদেনের প্ল্যাটফর্ম বাস্তবায়ন ও জনপ্রিয় করেছে।
অন্যদের সঙ্গে একমত পোষণ করে তিনিও বলেন, বিনিময় শুধু একটি ক্রনি কোম্পানিকে লাভবান করেছে।