চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস: অর্থবছরের ৯ মাসে প্রবৃদ্ধি ২১.৯৮%
দেশের বৃহৎ শুল্ক স্টেশন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে রাজস্ব আদায়ে ২১ দশমিক ৯৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত আদায় হয়েছে ৪২ হাজার ৭৩০ দশমিক ৮২ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম কাস্টম কর্তৃপক্ষ বলছে, অর্থবছরের শেষের মাসগুলোতে ক্রামগত বাড়ছে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ। অর্থবছর শেষে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা। যেটি গত অর্থবছরে আদায়ের পরিমাণ ছিল ৫১ হাজার ৫৭৬ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা।
আমদানি বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং বিশ্বব্যাপী ধীরে ধীরে সাপ্লাই চেইন স্বাভাবিক হওয়ায় গত অর্থবছরের তুলনায় রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস সূত্র।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম বলেন, কাস্টমসের রাজস্ব আহরণ মুলত আমদানি নির্ভর। অর্থবছরের শুরুর দিকে আমদানির পরিমাণ কম হয়। তবে অর্থবছরের শেষের দিকে ক্রমাগত বাড়ছে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ। অর্থবছর শেষে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ৬০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করছি।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে যেসব পণ্য আমদানি হয় তার শুল্কায়ন কাজে নিয়োজিত চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। রপ্তানি পণ্যে কোন শুল্ক না থাকলেও তামাকজাত পণ্য রপ্তানিতে শুল্ক আদায় করা হয়। এছাড়া চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া স্বর্ণ এবং অন্যান্য পণ্যের শুল্কায়ও হয় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের মাধ্যমে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে রাজস্ব আাদায়ের লক্ষমাত্রা ছিলো ৪৮ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এই লক্ষমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৪২ হাজার ৭৩০ দশমিক ৮২ কোটি টাকা।
গত ২০২০-২১ অর্থবছরে ৯ মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষমাত্রা ছিলো ৪৬ হাজার ৯৫২ দশমিক ০৯ কোটি টাকা। আদায় হয়েছিলো ৩৫ হাজার ৩১ দশমিক ৬৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ হাজার ৬৯৯ দশমিক ১৭ কোটি টাকা বেশি আদায় হয়েছে। চলতি অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষমাত্রা ৬৪ হাজার ৭৫ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব আদায়ের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত মার্চ মাসে এই অর্থবছরের সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। মার্চে রাজস্ব আদায় হয় ৫ হাজার ২৯৬ দশমিক ৬৯ কোটি টাকা। মার্চে রাজস্ব আদায়ের লক্ষমাত্রা ছিলো ৫ হাজার ৯০৬ কোটি টাকা। এ মাসে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয় ৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
এছাড়া অর্থবছরের শুরুতে জুলাইতে ৩ হাজার ৩৯৪ দশমিক ০৫ কোটি টাকা, আগস্টে ৪ হাজার ৪১০ দশমিক ৪২ কোটি টাকা, সেপ্টেম্বরে ৫ হাজার ১১৩ দশমিক ৯৮ কোটি টাকা, অক্টোবরে ৪ হাজার ৭৩৩ দশমিক ৪৬ কোটি টাকা, নভেম্বরে ৪ হাজার ৮০০ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা, ডিসেম্বরে ৪ হাজার ৮৩১ দশমিক ৫২ কোটি টাকা, জানুয়ারিতে ৪ হাজার ৯৬২ দশমিক ১৪ কোটি টাকা, ফেব্রুয়ারিতে ৫ হাজার ১৮৭ দশমিক ৬০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, কাস্টমসের রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক। প্রতিনিয়ত গড়ে উঠছে শিল্প কারখানা। বাড়ছে উৎপাদন। ফলে বেড়েছে আমদানির পরিমাণও। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব আদায়েও এর প্রভাব পড়েছে।