পাইকারি বাজারে কিছুটা কমেছে ভোজ্যতেল ও চিনির দাম
ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে কিছুটা কমেছে ভোজ্যতেল ও চিনির দাম। গত এক সপ্তাহে বাজারে ভোজ্যতেলের দাম মণে ২০০ টাকা ও চিনির দাম কমেছে ১০০ টাকা।
আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং দর কিছুটা কমে আসায় দেশীয় বাজারেও পণ্য দুটির দাম কমেছে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে প্রতিমণ (৪০ দশমিক ৯০ লিটার) পাম অয়েল বিক্রি হয়েছে ৬ হাজার ৮০০ টাকা দামে। যা এক সপ্তাহ আগে ৭ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
একইভাবে এক সপ্তাহ আগে বাজারে সয়াবিন বিক্রি হয়েছে ৭ হাজার ৫০০ টাকায়। যা গতকাল বৃহস্পতিবার ৭ হাজার ৩০০ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে। বাজার দর অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে পাইকারিতে প্রতিমণ ভোজ্যতেলের দাম ২০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
ভোজ্যতেলের পাশাপাশি পাইকারি বাজারে কিছুটা কমেছে চিনির দামও। গতকাল বাজারে প্রতিমণ (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) চিনি বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৭৩০ টাকা দামে। এক সপ্তাহ আগে বাজারে চিনির দাম ছিল ২ হাজার ৮৩০ টাকা।
ভোগপণ্য ব্যবসায়ী মেসার্স ইসমাইল ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, "বাজারে দীর্ঘদিন ধরে বেশিরভাগ ভোগ্যপণ্যের দাম অস্থির। এরমধ্যে ভোজ্যতেল, চিনি ও গমসহ কয়েকটি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম গত এক-দেড় বছরের ব্যবধানে দ্বিগুণ হয়েছে। তবে গত এক সপ্তাহে নিত্যপ্রয়োজনীয় দুটি পণ্য ভোজ্যতেল ও চিনির দাম কিছুটা কমেছে।"
বাজারে পণ্য দুটির চাহিদা ও সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য দুটির বুকিং দর কিছুটা কমে আসায় দেশীয় বাজারেও প্রভাব পড়েছে বলে মন্তব্য করেন এই ব্যবসায়ী।
ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স আর এম এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারি মো. আলমগীর পারভেজ বলেন, "অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির ফলে পাইকারি বাজারে কিছু পণ্যের বিকিকিনি স্থবির হয়ে আছে। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, বেশিরভাগ পণ্যের দাম এখন সর্বোচ্চ চূড়ায় অবস্থান করছে। ফলে যেকোন সময় পণ্যের দামের পতন হতে পারে। এতে ব্যবসায়ীরা সতর্কভাবে পণ্য বিকিকিনি করছে।"
মূলত বাজার কিছুটা স্থবির হওয়ায় ভোজ্যতেল ও চিনির দাম কমেছে বলে জানান তিনি।
আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমার বিষয়ে জানতে চাইলে এই আমদানিকারক বলেন, গত এক মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেল বিশেষ করে সয়াবিনের দাম টনপ্রতি ২০০ ডলার পর্যন্ত কমেছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের সংকটের কারণে নিম্নমুখী দর বেশিদিন স্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
তাছাড়া এই নিম্নমুখী বাজারে বুকিং করা ভোজ্যতেল বাজারে আসবে আরো একমাস পরে। ফলে দেশীয় বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেশি পরিবর্তন হয় নি।
এই বিষয়ে ক্যাবের (কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) সহ সভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, "গত একমাসে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিনের দাম টনে ২০০ ডলার পর্যন্ত কমেছে। কিন্তু এর কোন প্রভাব নেই দেশীয় বাজারে। গত এক সপ্তাহে প্রতিমণ ভোজ্যতেলে মাত্র ২০০ টাকা কমে দাম কমেছে। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে কোনো পণ্যের দর বৃদ্ধি পেলে সাথে সাথেই দেশীয় বাজারে সেই পণ্যের দাম অস্থির উঠে।"