গম রপ্তানির প্রস্তাব রাশিয়ার, সার আমদানিও সহজ হবে বলে মনে হচ্ছে
বাংলাদেশের গম আমদানি নিয়ে যে অনিশ্চয়তার মেঘ দেখা দিয়েছিল অবশেষে হয়তো তা দূর হতে চলেছে। এরমধ্যেই বাংলাদেশকে ৩ লাখ টন গম রপ্তানির প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়া। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাও বলেছেন যে, "নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে রাশিয়ার খাদ্যশস্য বা সার আমদানিতে বাধা দেওয়া হয়নি।"
বিশ্বের সবচেয়ে বড় গম রপ্তানিকারক রাশিয়া ৬০ দিনের মধ্যে ৩ লাখ টন গম রপ্তানির প্রস্তাব দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) সরবরাহ চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে একটি ভার্চুয়াল বৈঠকের পরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা একথা জানিয়েছেন।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এদিন জাতীয় সংসদকেও রাশিয়ার দেওয়া রপ্তানি প্রস্তাবের কথা জানিয়েছেন।
ভার্চুয়াল ওই সভায় যোগ দেওয়া কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ এ প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে। তবে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ জটের আশঙ্কায় ৬০ দিনের মধ্যে প্রথমে ২ লাখ টন এবং পরে বাকি ১ লাখ টনের চালান ৯০ দিনের মধ্যে চাওয়া হয়েছে। রাশিয়ার পক্ষ থেকে প্রতিটন গমের মূল্য ৪৪০-৪৫০ ডলার প্রস্তাব করা হয়েছে।
উভয় পক্ষ আগামী ৪ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য পরবর্তী বৈঠকে গমের দাম এবং সরবরাহের সময় নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে।
এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যুরো অফ ইকোনমিক অ্যান্ড বিজনেস অ্যাফেয়ার্সের সহকারী সেক্রেটারি রামিন তোলুই স্পষ্ট করে বলেছেন যে, রাশিয়ান খাদ্য ও সার আমদানি ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রাশিয়াকে দেওয়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞার অধীন নয়।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ান খাদ্য ও সার আমদানিতে কোনো সমস্যা হলে দেশগুলোর যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সাহায্য চাওয়া উচিত বলে পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।
গম ও সারের উৎস দেশ খুঁজে পেতে কঠিন সংগ্রাম করছে বাংলাদেশ। এই পরিস্থিতিতে খবরটি বেশ স্বস্তি বয়ে এনেছে।
মার্কিন ওই কর্মকর্তার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মস্কো থেকে সার আমদানির শুরু করার বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে বলে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানিয়েছেন কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম।
তিনি মনে করেন, রাশিয়া থেকে সার আমদানি পুনরায় শুরু হলে সরকারের ওপর ভর্তুকির চাপ অনেকাংশে কমবে।
মার্কিন কর্মকর্তা তোলুই বলেছেন, "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোনো দেশের রাশিয়া থেকে খাদ্য ও সার ক্রয়কে বাধাগ্রস্ত করতে চায় না। বিশ্ববাজারেও এসব পণ্য প্রবেশে কোনো বাধা নেই।"
রাশিয়া থেকে এসব পণ্য আমদানিতে কোনো দেশ সমস্যার সম্মুখীন হলে তাদের মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় ও দূতাবাসগুলির সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিশ্লেষক হুমায়ুন কবির টিবিএসকে বলেন, "কোনো প্রকার ভুল বোঝাবুঝি যেন নাহয়- সেজন্য রাশিয়া থেকে সার ও গম আমদানির আগে আমাদের পশ্চিমাদের জানাতে হবে।"
এছাড়া রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার জন্য এবং পশ্চিমা দেশগুলো যাতে আমদানিতে আপত্তি না করে- সে বিষয়ে একটি কূটনৈতিক উদ্যোগের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান তিনি। তাই এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও তৎপর হতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেন, "আমাদের প্রধান দুর্বলতা হলো যেকোনো বিদেশি সমস্যা মোকাবিলায় সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সহযোগিতার অভাব।"
২০২১-২২ অর্থবছরে ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টন রাসায়নিক সারের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে ২৬ লাখ টন ইউরিয়া, ৭ লাখ ৫০ হাজার টন টিএসপি, ৭ লাখ ৫০ হাজার টন এমওপি এবং ১৬ লাখ ৫০ হাজার টন ডিএপি।
রাশিয়া বাংলাদেশের জন্য নন-ইউরিয়া সার আমদানির প্রধান উৎস। এছাড়া বাংলাদেশ প্রতি বছর বেলারুশ ও কানাডা থেকে ৭.৫ লাখ টন এমওপি আমদানি করে।
রাশিয়া থেকে গম আমদানির বিষয়ে মস্কোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ভার্চুয়াল বৈঠকে বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন।
বৈঠকের পর দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে তিনি বলেন, রাশিয়া থেকে সরকারিভাবে (জি টু জি) গম আমদানির বিষয়ে দেশটির খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।
"তারা বাংলাদেশে ২-৩ লাখ টন গম রপ্তানির আগ্রহের কথা জানিয়েছেন, আমরাও দেশটি থেকে গম আমদানি করতে আগ্রহের কথা বলেছি। রাশিয়া থেকে গম আমদানির বিষয়ে দ্রুতই দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে আরও কিছু সভা হবে। ওই সব বৈঠকে গমের মূল্য নিয়ে দরকষাকষি-সহ পেমেন্ট (মূল্য পরিশোধের) পদ্ধতি চূড়ান্ত করে চুক্তি স্বাক্ষর হবে"- জানান তিনি।
ভার্চুয়াল সভায় সংযুক্ত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এমন একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে টিবিএসকে বলেন, বাংলাদেশের গম আমদানির অন্যতম প্রধান উৎস রাশিয়া সম্প্রতি বাংলাদেশে গম রপ্তানিতে আগ্রহের কথা জানিয়েছে। এর আগে, ঢাকাও মস্কোতে অবস্থিত দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশে গম রপ্তানির জন্য রাশিয়াকে অনুরোধ করেছে।
খাদ্য সচিব বলেছেন, রাশিয়া থেকে ২ লাখ টন গম আমদানির পরিকল্পনা থাকলেও চূড়ান্ত আলোচনায় এর পরিমাণ বেড়ে ৩ লাখ টন হতে পারে। প্রধান সরবরাহকারী ভারত গত মাসে শস্যটি রপ্তানি নিষিদ্ধ করার পর বাংলাদেশ এখন বিভিন্ন দেশ থেকে গম সংগ্রহের চেষ্টা করছে।
বাংলাদেশে গমের সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী ভারতের গম রপ্তানি নিষিদ্ধের পর ঘাটতি মোকাবিলায় রাশিয়ার সঙ্গে জি-টু-জি (দুই দেশের সরকারের মধ্যে) চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ গমের উৎপাদন বছরে ১০ লাখ টন। ২০২১-২২ অর্থবছরে সরকার ৯ লাখ টন আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে এবং এখনও পর্যন্ত সাড়ে ৬ লাখ টন সরবরাহের জন্য বিভিন্ন দেশের সাথে চুক্তি করেছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মোট আমদানির পরিমাণ এখন ৪.৭ লাখ টন।
অন্যদিকে, মহামারি পূর্ব সময়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি হয় ৬০ লাখ টন। যা ২০২০-২১ অর্থবছরে কমে হয় ৪৮ লাখ টন এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে নেমে এসেছে ৩১ লাখ টনে।
অন্য উৎস থেকে গম আমদানির চেষ্টাও চলছে
এছাড়া, ভারত থেকে জিটুজি ভিত্তিতে ৫-৬ লাখ টন গম আমদানির চেষ্টা চলছে উল্লেখ করে ইসমাইল হোসেন বলেন, "আমরা ভারতের ১৩টি ডিলার প্রতিষ্ঠানের তালিকা হাইকমিশনের মাধ্যমে দেশটির সরকারের কাছে পাঠিয়েছি। ভারত সরকার তাতে সম্মতি দিলে দেশটি থেকে গম আমদানি শুরু হবে।"
"ভারতের সংবাদমাধ্যম থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে, ভারত সরকার এ বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশটি থেকে অন্তত ২-৩ লাখ টন গম পেলেই আমরা খুশি হব"- জানান তিনি।
রাশিয়া ও ভারত ছাড়াও কানাডা আর অস্ট্রেলিয়া থেকে জিটুজি ভিত্তিতে এক লাখ টন করে মোট দুই লাখ টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে খাদ্য সচিব বলেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এসব দেশের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভা হবে।
গম আমদানির জন্য আর্জেন্টিনা সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। খুব শিগগিরই তাদের সঙ্গেও ভার্চুয়াল সভা হবে।
এছাড়া, দরপত্রের মাধ্যমেও গম আমদানি করে মজুদ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে খাদ্য অধিদপ্তর। এরই অংশ হিসেবে আগামী ৫ জুলাই এক লাখ টন গম আমদানির একটি দরপত্র উন্মুক্ত করা হবে বলে জানান খাদ্য সচিব।
জিটুজি উদ্যোগের সফলতার ওপর নির্ভর করছে বেসরকারি আমদানি
মিল মালিকেরা বলছেন, রাশিয়া থেকে গম আমদানির সরকারি উদ্যোগ সফল হলে বেসরকারি খাতও আবার আমদানি শুরু করবে।
তবে তারা মনে করেন, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার বিবেচনায় রাশিয়ান গমের জন্য অর্থ প্রদান করা একটি চ্যালেঞ্জ হবে। এজন্য সরকার কী অর্থপ্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে- সেদিকে তারা নজর রাখছেন।
মেঘনা গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার তসলিম শাহরিয়ার টিবিএসকে বলেছেন যে, সরকার যদি পেমেন্ট সিস্টেমের জটিলতাগুলি দূর করে রাশিয়ান গম আনতে পারে তবে তা হবে বড় অর্জন। তবে সরকারের চূড়ান্ত করা পেমেন্ট সিস্টেমটি বেসরকারি খাতকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে কিনা তা পরে বোঝা যাবে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্ররা রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এবং প্রধান আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সিস্টেম- সুইফট থেকে রাশিয়ান অনেক ব্যাংককে বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একাধিকবার সতর্ক করেছিল যে- পশ্চিমারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাশিয়া থেকে পণ্য আমদানিকারী দেশগুলির উপরও ওয়াশিংটন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। এই হুঁশিয়ারি বাংলাদেশসহ এশিয়া ও আফ্রিকার অনেক দেশের রাশিয়া থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে।
পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া কৃষ্ণ সাগরে ইউক্রেনের ওডেসা সমুদ্রবন্দর অবরোধ করে রাখায় ইউক্রেনের খাদ্যপণ্য রপ্তানিও বন্ধ হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা প্রকাশ করে ইউক্রেনের মজুদ খাদ্যপণ্য রপ্তানি শুরুর জন্য উদ্যোগ নিয়েছে জাতিসংঘ।
বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের সংকট সৃষ্টির জন্য রাশিয়াকে দায়ী করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
অন্যদিকে, মস্কোর দাবি রুশ ব্যাংক ও জাহাজে পরিবহন শিল্পের ওপর দেওয়া পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণেই রাশিয়া থেকে খাদ্য ও সার রপ্তানি করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এতে বিদেশি জাহাজে পণ্য পরিবাহী কোম্পানিও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার ভয়ে রাশিয়ার পণ্য পরিবহন করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। রুশ কর্মকর্তারা বলছেন বিশ্ববাজারে খাদ্যশস্যের রপ্তানি নিশ্চিত করতে হলে রাশিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিতে হবে।
এ অবস্থায় খাদ্যপণ্য রপ্তানিতে দুই পরাশক্তিই নরম হয়েছে। সম্প্রতি তুরস্কের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বৈঠকে রাশিয়াও ইউক্রেনকে ওডেসা বন্দর দিয়ে খাদ্যপণ্য রপ্তানি করার সুযোগ দিতে রাজি হয়েছে।
এক বিবৃতিতে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ব্যুরো অফ ইকোনমিক অ্যান্ড বিজনেস অ্যাফেয়ার্সের সহকারী সেক্রেটারি রামিন তোলুই বলেছেন, "রাশিয়ার নিজস্ব নীতি ও সিদ্ধান্ত ছাড়া অন্য কোন কিছুই তার শস্য বা সার রপ্তানিতে বাধা দিচ্ছে না।"
তিনি আরও বলেন, "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোনো দেশের রাশিয়া থেকে খাদ্য ও সার ক্রয়ের সক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করতে চায় না। বিশ্ববাজারেও এসব পণ্য প্রবেশে কোনো বাধা নেই।"
যুক্তরাষ্ট্রের নমনীয় অবস্থান রাশিয়ান সার আমদানির সুযোগ করে দিতে পারে
"মার্কিন বিবৃতি রাশিয়া থেকে সার আমদানির পথ আবার খুলে দিতে পারে, তাতে আমরা অনেক উপকৃত হব,"- বলেছেন কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম।
"তবে পেমেন্ট ব্যবস্থা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে" জানিয়ে তিনি আরও বলেন, "পুরো বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই আমরা সার আমদানির পদক্ষেপ নেব।"
কৃষি সচিব বলেন, ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরুর আগে রাশিয়া থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টন সার আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ। তবে পেমেন্ট ব্যবস্থা নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ায় আমদানি করা যায়নি।
রাশিয়া ও বেলারুশ থেকে সার আমদানি ব্যাহত হওয়ায় বিশ্বজুড়ে সার সংকট দেখা দিয়েছে। এতে কয়েক দফায় বেড়েছে দাম। ফলে আগামী বছরগুলোয় খাদ্য উৎপাদন হ্রাসের আশঙ্কা করছে বৈশ্বিক সংস্থাগুলো।
তাদের অনুমান, খাদ্য সংকট এতে আরও চরম রূপ নেবে। বাংলাদেশও সার সংকটের নেতিবাচক প্রভাবের শিকার হয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, যুদ্ধের আগে সরকার রাশিয়া থেকে প্রতিটন ৩০০ ডলার মূল্যে সার আমদানি করতো। কিন্তু এখন টনপ্রতি ১,২০০ ডলারে কানাডা থেকে আমদানি করতে হচ্ছে।
রাশিয়া থেকে সার আমদানি করতে না পারায় আগামী বোরো মৌসুমে পর্যাপ্ত সার সরবরাহ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে বলেও জানান তিনি।
চারগুণ বেশি মূল্যে আমদানি করতে হওয়ায় চলতি অর্থবছরে সরকারকে সারে ভর্তুকি দিতে হয়েছে ২৮ হাজার কোটি টাকা।