অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের রপ্তানি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল ভারত
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের রপ্তানি সাময়িকভাবে স্থগিত ঘোষণা করেছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রের বরাতে জানিয়েছে বিবিসি।
বলা হচ্ছে, সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এবং নিজেদের দেশে ভ্যাকসিনের বাড়তি চাহিদার যোগান দিতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত।
ভারতের এই সিদ্ধান্ত এপ্রিল মাসের শেষ নাগাদ বহাল থাকতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এর মধ্য দিয়ে কোভ্যাক্সের ১৯০টি দেশের ওপর প্রভাব পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বে পরিচালিত এই উদ্যোগটির লক্ষ্য সব দেশে ভ্যাকসিনের সুষ্ঠু বিতরণ নিশ্চিত করা।
ভারতের বৃহত্তম ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট ইতিমধ্যেই ব্রাজিল ও যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশে ভ্যাকসিনের চালান পিছিয়ে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত ভারত ৭৬টি দেশে ছয় কোটি ডোজেরও বেশি ভ্যাকসিন রপ্তানি করেছে যার বেশিরভাগই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার।
কেন ভারতের এমন সিদ্ধান্ত
এমন সময়ে ভারত এই সিদ্ধান্তের কথা জানালো, যখন দেশটিতে করোনা সংক্রমণ অত্যন্ত খারাপ আকার ধারন করেছে। গতকাল বুধবার ভারতে ৪৭ হাজারের ওপর নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং অন্তত ২৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আগামী ১ এপ্রিল থেকে দেশটিতে ৪৫ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকের জন্য টিকাদান শুরু হচ্ছে। ফলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, তাদের প্রচুর পরিমাণ টিকার প্রয়োজন হবে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন সূত্র বিবিসির প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, "এটি (রপ্তানি স্থগিত) একটি সাময়িক পদক্ষেপ। আমাদের আগে দেশের চাহিদার কথা মাথায় রাখতে হবে"।
তারা বলছেন, এপ্রিল মাস পর্যন্ত ভ্যাকসিন সরবরাহের উপর চাপ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে মে মাসের দিকেই অন্তত আরেকটি ভ্যাকসিনকে জরুরি অনুমোদনের অনুমতি দেয়া হলে পরিস্থিতি অনুকূলে চলে আসবে।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার থেকেই ভারত হতে কোন ভ্যাকসিন রপ্তানি হয় নি।
তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত সেরাম ইনস্টিটিউট হতে কোন প্রাতিষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়া হয়নি।
এ মূহুর্তে বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী এ প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্য, ব্রাজিল, সৌদি আরব এবং মরক্কোতে ভ্যাকসিন ডোজের চালান পিছিয়ে দিয়েছে।
তবে সেরামের একজন মুখপাত্র বিবিসিকে জানিয়েছেন, "বর্তমান পরিস্থিতি এবং ভারতে সরকারী টিকাদান কর্মসূচির প্রয়োজনীয়তার উপর ভিত্তি করে আমরা পরে আরও ভ্যাকসিন সরবরাহ করার চেষ্টা করব"।