অনলাইন হয়রানির বিরুদ্ধে খোলা চিঠিতে স্বাক্ষর করলেন বিশ্বের প্রভাবশালী ২০০ নারী
সামাজিক মাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোতে নারীদের হয়রানি বন্ধে একটি খোলা চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন বিশ্বের প্রভাবশালী ২০০ নারী ব্যক্তিত্ব।
স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আছেন- অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ড, সাবেক মার্কিন টেনিস খেলোয়াড় বিলি জিন কিং, ব্রিটিশ অভিনেত্রী থান্ডিওয়ে নিউটন এবং এমা ওয়াটসন। লিঙ্গ সমতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আয়োজিত জাতিসংঘের জেনারেশন ইক্যুয়ালিটি ফোরামে চিঠিটি প্রকাশিত হয়।
চিঠিতে জুলিয়া গিলার্ড লিখেছেন, "অনলাইন পরিসরে নারীরা হয়রানি মুক্ত নন। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হলেও অন্যান্য নারীর মতো আমিও প্রতিদিন অনেক কুৎসিত বার্তা পাই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব বার্তায় লিঙ্গ বৈষম্যমূলক ও কুরুচিপূর্ণ ইঙ্গিত থাকে।"
নারীরা এখনও এধরনের নিগ্রহের শিকার হওয়ার তিনি প্রচণ্ড ক্ষুদ্ধ ও হতাশ বলেও জানান।
ফেসবুক, গুগল, টিকটক ও টুইটার- এর প্রধান নির্বাহীদের উদ্দেশ্যে প্রকাশিত হয় চিঠিটি। সেখানে তাদের উদ্দেশ্যে বলা হয়, "আপনাদের প্ল্যাটফর্মে নারীর অংশগ্রহণ নিরাপদ করে তুলতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। বিষয়টি নিশ্চিত করাকে অবশ্যই অগ্রাধিকার দিতে হবে।"
চিঠিটি প্রকাশের পর দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় সামাজিক মাধ্যমগুলোর মুখ্য নির্বাহীরা জানান, হয়রানিমূলক আচরণ রিপোর্টের ব্যবস্থা উন্নতকরণের পাশাপাশি অনলাইনে প্রদর্শিত কন্টেট কারা দেখতে পারবেন এবং কারা নারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন- তার একটি কার্যকর সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
তবে কিছু অধিকার কর্মীর অভিযোগ এসব প্রতিশ্রুতি যথেষ্ট নয়।
এব্যাপারে অনলাইনে নারীদের প্রতি আক্রমণ বন্ধে কাজ করা, #শি-পারসিস্টেড গ্লোবালের সহ-প্রতিষ্ঠাতা লুসিনা ডি মেকো বলেন, "এধরনের অস্পষ্ট বিবৃতি দিয়ে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো নিজেদের দায় এড়ানো এবং ইতিবাচক প্রচারণার সুযোগ পায়। অথচ তারা নিজেদের সাইটের কন্টেট মডারেশন বা প্রোগ্রাম অ্যালগরিদমকে আশালীন আচরণকারীদের জন্য শাস্তিযোগ্য করার উদ্যোগ নিচ্ছে না। তাই নিগ্রহের বোঝা এখনও নারীর কাঁধেই চাপানো হচ্ছে।"
প্রভাবশালী নারীদের চিঠিতে হয়রানির দিকটি উল্লেখ করে বলা হয়, "২১ শতকের নগর কেন্দ্র ইন্টারনেট। এখানে তর্ক-বিতর্ক চলে, গড়ে ওঠে নতুন নতুন সম্প্রদায়, চলে পণ্যের বেচাকেনা ইত্যাদি। কিন্তু, এখানে মানুষের পরিচিতও তৈরি হয়, ইন্টারনেট দুনিয়া তার সুনাম ও ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠার সঙ্গেও জড়িত। কিন্তু, নারীদের প্রতি বিপুল হয়রানির ঘটনায় প্রমাণ হয়, ডিজিটাল এই নগরকেন্দ্র আর সুরক্ষিত নয়। লিঙ্গ সমতা প্রতিষ্ঠার পথে যা একটি বড় রকমের বাধা।"