আলিবাবার জ্যাক মা'কে ভারতে তলব
আলিবাবা কোম্পানির অধীনে কর্মরত এক ব্যক্তির মামলার জের ধরে এর কর্ণধার জ্যাক মা'কে তলব করেছেন ভারতীয় এক আদালত। প্রাক্তন ওই কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, সেন্সরশিপ ও মিথ্যা সংবাদ নিয়ে কথা বলায় আলিবাবা থেকে তাকে অন্যায়ভাবে বরখাস্ত করা হয়।
লাদাখে দুই দেশের সীমান্তে সংঘাত চলাকালীন ইউসি নিউজ, ইউসি ব্রাউজারসহ আরও ৫৭টি চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করে ভারত সরকার। এরপরই এই মামলার খবর আসে।
সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর কাছে লিখিত জবাব চেয়ে পাঠিয়েছেন আদালত। এতে কোনো নির্দিষ্ট রিপোর্ট সেন্সর করা হয়েছে কি না বা কোনো সংস্থার হয়ে কাজ করছিল কি না, প্রশ্ন রাখা হয়।
২০ জুলাইয়ের আদালতের রিপোর্ট অনুযায়ী, আলিবাবার ইউসি ওয়েবের প্রাক্তন কর্মকর্তা পুষ্পেন্দ্র সিং পরমার অভিযোগ করেন, ইউসি ব্রাউজারে ইউসি নিউজ অ্যাপে চীনের স্বার্থবিরোধী সংবাদ সেন্সর করা হয় এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী মিথ্যা সংবাদ ছড়ানো হয়।
গুরগাঁও জেলা আদালতের বিচারক সনিয়া শেওকন্ড এই মামলার শুনানিতে আলিবাবার কর্ণধার জ্যাক মা'সহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর আরও ক'জন কর্মীকে তলব করেন। আগামী ২৯ জুলাই তাদের আদালতে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া আগামী ৩০ দিনের মধ্যে লিখিত জবাব পাঠানোরও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ইউসি ইন্ডিয়া একটি বিবৃতিতে জানায়, 'আমরা ভারতীয় বাজার ও স্থানীয় কর্মীদের কল্যাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের সংস্থার নীতি স্থানীয় আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তবে এই মামলা নিয়ে এখনই কিছু বলতে পারছি না।'
এ প্রসঙ্গে আলিবাবা কোনো বিবৃতি দেয়নি। জ্যাক মা'র প্রতিনিধিরাও কিছু বলতে রাজি হননি।
পুষ্পেন্দ্র সিং ২০১৭ থেকে গুরগাঁওয়ে ইউসি ওয়েবের সহযোগী পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ২ লাখ ৬৪ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ দাবী করেন।
মামলাটি বিচারাধীন হওয়ায় এ ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমে কথা বলতে রাজি হননি পুষ্পেন্দ্র সিংয়ের আইনজীবী অতুল আলাওয়াত।
অ্যাপ নিষিদ্ধ হওয়ার আগে ভারতে ইউসি ব্রাউজার ডাউনলোড করা হয়েছে ৬৮৯ মিলিয়ন বার।
আদালতের অভিযোগ
সার্বভৌমত্ববিরোধী তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে এই ৫৯টি অ্যাপ নিষিদ্ধ করা হয়। আইটি মন্ত্রী বলেন, নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সমাজে শৃঙ্খলা বজায় রাখাই এর উদ্দেশ্য।
২০০ পাতার অভিযোগে দেখা যায় বেশ কিছু সংযুক্তি। ২০১৭ সালে 'আজ মধ্যরাত থেকে ২০০০ টাকার নোট নিষিদ্ধ করা হবে' শিরোনামে মিথ্যে তথ্য ছড়ানো হয়। ২০১৮ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হতে যাচ্ছে- এ ধরনের মিথ্যা সংবাদও প্রচার করা হয়।
এছাড়া ইউসি ওয়েবে কিছু নির্দিষ্ট শব্দের মাধ্যমে চীনা স্বার্থবিরোধী যেকোনো সংবাদ সেন্সর করে দেওয়ার অভিযোগও আছে।
দিল্লির চীনা দূতাবাস, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিংবা ভারতের আইটি মন্ত্রী এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
- সূত্র: রয়টার্স