ইরানি বীরকে বিদায় জানাতে রাজপথে লাখো মানুষ
যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় নিহত ইরানের সামরিক বাহিনীর কমান্ডার মেজর জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে শেষ বিদায় জানাতে লাখো জনতার ঢল নেমেছে দেশটির বিভিন্ন শহরে।
রোববার ভোররাতে ইরাকের রাজধানী বাগদাদ থেকে ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আহভাজে সোলেইমানির মরদেহ পৌঁছায়। খবর আল-জাজিরার।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত লাইভ ভিডিওতে দেখা যায়, ইরানের জাতীয় বীর সোলেইমানিকে শেষ বিদায় জানাতে আহভাজ শহরের পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ।
শোকাহত ইরানিরা হাতে সবুজ, সাদা ও লাল রঙের পতাকা নিয়ে শহরের মোল্লাভি স্কয়ারে জড়ো হন। এ সময় তারা হাত দিয়ে বুকে আঘাত করে শোক প্রকাশ করতে থাকেন।
সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কর্তৃপক্ষ সোলেইমানিসহ একই হামলায় নিহত অন্যদের মরদেহ রোববার ইরানের পবিত্র নগরী মাশহাদে নেবে। এরপর সোমবার তা নেওয়া হবে রাজধানী তেহরানে এবং পবিত্র নগরী ক্বোমে। মঙ্গলবার নিজ শহর কেরমানে সোলেইমানির দাফন সম্পন্ন হবে।
দোরসা জাব্বারী নামে আল-জাজিরার একজন প্রতিনিধি মাশহাদ শহর থেকে জানান, সোলেইমানির মরদেহ দেখতে শোকাহত জনতা ইতোমধ্যে ইমাম রেজার দরগায় জড়ো হয়েছেন।
তিনি বলেন, এখানকার মানুষ সোলেইমানিকে অনেক বেশি সম্মান করে ও ভালোবাসে। অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না, সোলেইমানি আর নেই। সারা দেশই শোক পালন করছে।
তিনি আরও বলেন, শোকের পাশাপাশি সোলেইমানিকে হত্যার ঘটনা ইরানি জনগনের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। জনগন চায় তাদের সরকার ও সেনাবাহিনী এই হামলার কড়া জবাব দিক। তারা প্রতিশোধ চায়।
গত ৩ জানুয়ারি ভোরে বাগদাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান হামলায় দেশটির রেভল্যুশনারি গার্ডের অভিজাত কুদস বাহিনীর প্রধান জেনারেল কাসেম সোলেইমানি নিহত হয়েছেন। ইরান সংশ্লিষ্ট ইরাকি আধাসামরিক বাহিনী হাশেদ আল শাবির একটি বহরের ওপর এই হামলা করা হয়।
এর কয়েক ঘণ্টা পরে ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর একটি বিবৃতি প্রচার করেছে। তাতে বলা হয়েছে, আজ সকালে বাগদাদ বিমানবন্দরে মার্কিন হামলায় সোলাইমানি নিহত হয়েছেন।
এদিকে, ড্রোন হামলার প্রতিবাদে ইরান যদি হামলা চালায় তবে ইরানের ৫২ স্থানে হামলার হুমকি দিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে জারি করা হয়েছে বাড়তি সতর্কতা।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকালে ওই হামলায় নিহত ১০ জনের লাশ নিয়ে বাগদাদে শোক মিছিল হয়। শোক মিছিল এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমবেত জনতা শ্লোগান তোলে, “আমেরিকা নিপাত যাক।”