ইরানের ওপর তেল, ব্যাংকিং ও অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র
ভিয়েনা আলোচনা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর থেকে তেল, ব্যাংক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে এমনটাই আশা করছে ইরান। গত শনিবার (১ মে) এসব কথা জানান দেশটির শীর্ষ পরমাণু আলোচক।
ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দেশটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি এবিষয়ে বলেন, "নিষেধাজ্ঞা… ইরানের শক্তি ও জ্বালানি খাতে, যার মধ্যে রয়েছে তেল-গ্যাস ও অটোমোটিভ খাত, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকিং খাত এবং বন্দর নিষেধাজ্ঞা- চুক্তি অনুযায়ী এসকল নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে,"
তবে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর শর্ত অনুযায়ী ইরান কীভাবে আবার পরমাণু চুক্তিতে ফিরে যাবে এব্যাপারে কিছু জানাননি তিনি।
"উভয় পক্ষ নিজস্ব দাবির কাছাকাছি পৌঁছানোর আগে এবং আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আলোচনা চালিয়ে যাবো। আমাদের দাবি পূরণ হলেই চুক্তি হবে, অন্যথায় স্বাভাবিকভাবেই কোনো চুক্তি হবে না,"
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক জেক সুলিভান এব্যাপারে জানান, আলোচনার সার্বিক অবস্থা এখনো অস্পষ্ট।
"আমরা সব পক্ষের আগ্রহ লক্ষ্য করেছি. ইরানিয়ানরাও নিষেধাজ্ঞা, নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া, জয়েন্ট কম্প্রিহেন্সিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) চুক্তিতে ফিরে আসার ব্যাপারে আলোচনা করতে ইচ্ছুক। তবে ভিয়েনা আলোচনায়ই চুক্তির মাধ্যমে এর সমাপ্তি হবে কিনা তা এখনো অনিশ্চিত,"
২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত নেন যুক্তরাষ্ট্র এ চুক্তি থেকে বের হয়ে আসবে। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এখন এ চুক্তিতে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। ট্রাম্প পুনরায় ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর ইরানও চুক্তির নানা শর্ত ভেঙ্গে পাল্টা জবাব দেয় সেসময়।
গত মাসেই ভিয়েনায় ইরানের সঙ্গে রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জার্মানির আলোচনা শুরু হয়। তবে সরাসরি কোনো মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ইরান।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা আশা করছেন ২১ মে'র মধ্যে চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
"আমরা এখনো সবচেয়ে জটিল ব্যাপারগুলো বোঝার চেষ্টা করছি। সাফল্যের নিশ্চয়তা দেওয়া যাচ্ছে না, তবে তা অসম্ভব নয়," বলেন তারা।
জাতিসংঘের পরমাণু নজরদারি সংস্থার রাশিয়ান দূত মিখাইল উলইয়ানোভ সাংবাদিকদের বলেন, "আমাদের শুধু আমাদের কাজগুলো করে যেতে হবে। আশা করছি আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সফলতার খবর পাওয়া যাবে,"
আরাকচি বলেন, "বেশ কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আছে, এ তালিকা বেশ লম্বা। তালিকার ব্যাপারে এখনো আলোচনা চলছে,"
এখন পর্যন্ত আলোচনার যে অগ্রগতি হয়েছে, সে অনুযায়ী তালিকার বেশিরভাগের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
- সূত্র: রয়টার্স