ইসরায়েলি হামলায় শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত, স্থল অভিযান চালানোর হুমকি ইসরায়েলের
হামাস নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ড থেকে রকেট হামলার চালানোর জবাবে গাজা উপতক্যায় দূরপাল্লার কামানের গোলাবর্ষণ এবং যুদ্ধবিমান থেকে বোমা হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে ইসরায়েল। ইতোমধ্যেই, প্রচণ্ড আকার ধারণ করা এই সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন ১০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি।
গাজায় সম্ভাব্য স্থল হামলা চালানোর জন্য ইসরায়েল গাজা সীমান্তে সৈন্য জমায়েত করছে। হামলায় অংশ নেওয়ার জন্য এরমধ্যেই ৯ হাজার রিজার্ভ সেনা সদস্যকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। গাজায় হামাস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল অভিযান পরিচালনা করাই এখন ইসরায়েলের উদ্দেশ্য।
চির শত্রু ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েলের মধ্যকার সম্ভাব্য যুদ্ধ এড়াতে এরইমধ্যে ইসরায়েল পৌঁছেছে মিশরের মধ্যস্ততাকারী দল। তাদের যুদ্ধবিরতির চেষ্টার মধ্যেই ইসরায়েল স্থল অভিযানের হুমকি দিয়েছে।
সোমবার ভোর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েল-হামাস সংঘর্ষ বর্তমানে ইসরায়েলের ভেতর আরব ও অনারবদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় রূপ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের লড শহরে পুলিশের উপস্থিতিতেই ইহুদি ও আরবদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মধ্যেই ইসরায়েল এ পর্যন্ত সবচেয়ে কঠিন সংঘর্ষে জড়াচ্ছে হামাসের সঙ্গে। এদিকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে লেবানন থেকে কয়েকটি রকেট নিক্ষেপ করা হয়। এতে এই সংঘাতকে নতুন মোড় দিতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
হামাসের নির্বাসিত এক জেষ্ঠ্য নেতা লন্ডন ভিত্তিক আল আরাবি চ্যানেলকে শুক্রবার জানান, মিশর, কাতার এবং জাতিসংঘ ইসরায়েল ও হামাসের চলমান সংঘর্ষে বন্ধে মধ্যস্তা করার চেষ্টা করছে। তারা তিন ঘণ্টার জন্য যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব করলে, হামাস তা নাকোচ করে দেয়।
শুক্রবার ভোরে ইসরায়েলি বাহিনী জানায়, গাজায় এ পর্যন্ত সবচেয়ে কঠোর ও শক্তিশালী আক্রমণ চালাবে বিমান ও সেনাবাহিনী। গাজা উপত্যকায় এই রাতে দুই পক্ষের হামলা ই অব্যাহত থাকে।
এই অচলাবস্থার মধ্যেই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, 'আমি বলেছিলাম, হামাসকে চরম মূল্য দিতে হবে। আমরা সেই লক্ষেই আগাচ্ছি এবং সর্বশক্তি ব্যবহার করে আমরা পরবর্তী হামলা করবো।'
বৃহস্পতিবার ঈদের দিনেও গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত ছিল। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, গাজায় এ পর্যন্ত ১০৯ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছে। এর মধ্যে ২৮ শিশু ও ১৫ জন নারীও রয়েছে। এছাড়া ৬২১ জন আহত হয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি চলমান বিমান হামলায় এরই মধ্যে বেশকিছু পরিবার সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
তবে হামাস বলছে, ইসরায়েলি হুমকি বা হামলায় ভীত নয় তারা। যেকোনও অন্যায় হামলার প্রতিউত্তর দেয়ার জন্য হামাস প্রস্তুত আছে বলে জানায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠীটি।