এবার ভারত সরকারের বিরুদ্ধে হোয়াটসঅ্যাপের মামলা
দিল্লি হাইকোর্টে এবার ভারত সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপ। নতুন আইটি বিধির কার্যকারিতা রোধ করতে তারা এ মামলা করেছে। নতুন এ বিধির মাধ্যমে অ্যাপ্লিকেশনটির গোপনীয়তা লঙ্ঘন হবে বলে অভিযোগ করেছে হোয়াটসঅ্যাপ।
নতুন এ আইন অনুযায়ী, কর্তৃপক্ষ চাওয়ামাত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে 'ফার্স্ট অরিজিনেটর অব ইনফরমেশন' বা 'তথ্যের প্রথম প্রবর্তক' সম্পর্কে তথ্য দিতে হবে। মামলায় তাই উল্লেখ করা হয়েছে, ভারতের সংবিধান প্রদত্ত ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার প্রস্তাবিত নতুন আইটি বিধি কর্তৃক লঙ্ঘিত হয়।
যদিও আইনটিতে শুধুমাত্র অন্যায় চর্চাকারী বা অপরাধীদের মুখোশ উন্মোচনের জন্য হোয়াটসঅ্যাপকে বলা হয়েছে, কিন্তু হোয়াটসঅ্যাপের বক্তব্য ভিন্ন। তাদের মতে, এটি এমন চর্চা যা তাদের পক্ষে একা করা সম্ভব না।
হোয়াটসঅ্যাপে যখন কোন ব্যক্তি কারো সাথে চ্যাট করে তখন তার বার্তাগুলো 'এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপটেড' করা থাকে। এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন এটি নিশ্চিত করে যে, প্রেরক নিজে এবং যার সাথে যোগাযোগ করছেন শুধুমাত্র সেই ব্যক্তি ছাড়া পাঠানো বার্তা আর কেউ দেখতে অথবা শুনতে পাবে না, খোদ হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষও নয়। ফলে এই সেটিংস ভাঙতে গেলে শুধু বার্তা গ্রাহকের এনক্রিপশনই নয়, বার্তা প্রবর্তনকারীরও কোড ভাঙতে হবে।
হোয়াটসঅ্যাপের একজন মুখপাত্র বলেন , "মেসেজিং অ্যাপে চ্যাট 'ট্রেস' করা হলে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো প্রতিটি বার্তার ডিজিটাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট রাখতে হবে। এটি করলে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন বলে আর কিছু থাকবে না। ফলে জনসাধারণের গোপনীয়তার অধিকার বিঘ্নিত হবে।'
তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখবেন। এর কোনও সমাধান বের করা যায় কিনা, তার চেষ্টা করা হবে। ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষা করা জরুরি। সেই সঙ্গে তাদের কাছে যে তথ্য আছে, সে বিষয়ে আইনানুগ অনুরোধগুলোকেও গুরুত্ব দেওয়া হবে।
ভারতে হোয়াটসঅ্যাপের প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ব্যবহারকারী রয়েছেন। মামলাটি কখন আদালত কর্তৃক পর্যালোচনা করা হতে পারে সে সম্পর্কে বার্তা সংস্থা রয়টার্স স্বাধীনভাবে নিশ্চিত হতে পারেনি।
এমনকি বিষয়টির সংবেদনশীলতাকে আমলে নিয়ে এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাও এ সম্পর্কে কোন মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
তবে নতুন এ মামলাটি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার এবং ফেসবুক, আলফাবেট, টুইটারের মত প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর মধ্যে নতুন উদ্বেগের সৃষ্টি করল।
- সূত্র-রয়টার্স ও হিন্দুস্তান টাইমস