কেজরিওয়াল চমকে দিল্লিছাড়া মোদির বিজেপি
ছিলেন ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিসের (আইআরএস) নয়া দিল্লির যুগ্ম কর কমিশনার। সেই চাকরিতে থাকা অবস্থাতেই তথ্য অধিকার আইনকে (আরটিআই) কাজে লাগিয়ে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের জন্য ২০০৬ সালে পান র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার। একই বছর চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠা করেন আম আদমি পার্টি (এএপি)। আর এর পরের বছর থেকেই দিল্লির মসনদের একচ্ছত্র অধিপতি অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
এবারের বহুল আলোচিত নির্বাচনেও নরেন্দ্র মোদির বিজেপিকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো দিল্লি শাসন করতে যাচ্ছে তার দল এএপি।
আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করা না হলেও ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে কেজরিওয়ালের এএপি পেয়েছে ৬২টি আসন। বিপরীতে গত নির্বাচনে তিনটি আসন পাওয়া বিজেপি পেয়েছে ৮টি আসন।
তবে দিল্লিতে বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতাসীন দল কংগ্রেস গতবারের মতো এবারও পাত্তা পায়নি। নির্বাচনের প্রচারেও দলটির দাপট দেখা যায়নি। ভোটে তারা পায়নি কোনো আসন।
২০১৩ সালে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী শিলা দীক্ষিতের দুর্গে হানা দিয়ে জয়ী হয় অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল। এর ৪৯ দিন পর পদত্যাগ করেন কেজরিওয়াল। এরপর ২০১৫ সালের নির্বাচনে ৭০ আসনের বিধানসভার ৬৭টি পেয়ে হইচই ফেলে দেয় তার নেতৃত্বাধীন এএপি।
৭০ আসনের বিধানসভায় এককভাবে সরকার গঠন করতে দরকার ৩৬টি আসন। সে হিসাবে অনেক বেশি আসন নিয়ে আগামী পাঁচ বছর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিধানসভা নিয়ন্ত্রণ করবে এএপি।
নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ), কাশ্মীর দ্বিখণ্ডিত করাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উত্তাল ভারতে ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন। এ নির্বাচনে রাজধানী অঞ্চল দিল্লির দখল নিতে মরিয়া ছিল বিজেপি।
দলটি তাদের ২০০ এমপি, ১১ জন মুখ্যমন্ত্রী ও ৭০ জন মন্ত্রীকে কাজে লাগিয়েছিল নির্বাচনের প্রচারে। তবে তাদের সে প্রচেষ্টা নস্যাৎ করেছে ভোটাররা। তারা অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেওয়া কেজরিওয়ালকে আরেকবার সুযোগ দিয়েছে দিল্লি শাসনের।
সেই আস্থার প্রতিদানে জনগণকে ভালোবাসা 'উপহার' দিয়েছেন কেজরিওয়াল। জয় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর দিল্লিতে সমবেত জনতার উদ্দেশে কেজরিওয়াল বলেন, "দিল্লির জনগণ, আপনারা অসাধারণ কাজ করেছেন। আমি আপনাদের ভালোবাসি।"